জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব পাওয়ায় বিশ্বের কাছে নিজের শক্তি তুলে ধরার সুযোগ এসেছে ভারতের সামনে। সেজন্য সকলের সহযোগিতার আর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার জি-২০ নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে বিরোধী নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। সেই সর্বদলীয় বৈঠকে হাজির ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজু জনতা দলের সুপ্রিমো নবীন পট্টনায়েক, সিপিআইএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের মতো বিরোধী নেতারা। সাথে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও। তাঁর পাশেই বসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই বৈঠকে মোদী জানান, "জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব পাওয়ার বিষয়টি কোনও একজন ব্যক্তির নয়, পুরো দেশের কৃতিত্ব। র্তমানে ভারতকে ঘিরে যে বিশ্বব্যাপী কৌতূহল এবং আকর্ষণ আছে, তাতে জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতিত্বের বিষয়টির গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সেইসঙ্গে ২০ টি বড় দেশের গোষ্ঠীর সভাপতিত্বের দায়িত্বভার পাওয়ার ফলে বড় শহর, মহানগরীর গণ্ডি ছাড়িয়ে ভারতের তুলনামূলকভাবে ছোটো শহরের দিকে নজর পড়বে বিশ্বের"। বিরোধী নেতারাও বলেন এদিন, জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতি হওয়ার ফলে ভারত যাতে লাভবান হয়, সেই বিষয়টি কেন্দ্রকে নিশ্চিত করতে হবে।
জি-২০ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে সাড়া দিয়ে দিল্লি এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪ দিনের দিল্লি সফরের মাঝে মমতা রাজস্থানের আজমেঢ় ও পুষ্করে যাবে জস্থানের আজমেঢ় ও পুষ্করে যাবেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, "জি-২০ নিয়ে বিকেল ৫টায় বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। আমাদের এখানেও ৩-৪টে কর্মসূচি রয়েছে। সেজন্য দিল্লি যাচ্ছি। আর বৈঠক হতে হতে রাত হয়ে যাবে। কাল সকালে আজমেঢ় শরীফ যাব। তার পর পুষ্কর। পরেরদিন সাংসদদের বৈঠক আছে। ওটা করে কলকাতায় আসব।" ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জি২০-র আয়োজন করতে চলেছে ভারত। ওই সম্মেলনের জন্যই সোমবার বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, জি-২০ জোটের সদস্যের মধ্যে রয়ছে–আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চিন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইন্ডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইটালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, সাউথ আফ্রিকা, তুরস্ক, ব্রিটেন, আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিশ্বের অর্থনীতির ৮০ শতাংশ জিডিপি জি-২০ দেশগুলির দখলে। সেজন্যই কাশ্মীর ইস্যুতে জি-২০ মঞ্চের মতামত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভারত কাশ্মীরে সম্মেলন আয়োজন করে নিজের অবস্থান আরও মজবুত করতে চাইছে। সব ঠিক থাকলে, আগামী বছর ভূস্বর্গে একমঞ্চে দেখা যাবে বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রপ্রধানদের।
এ দিনের বৈঠকে ৪০ জন রাজনৈতিক নেতার মধ্যে বক্তব্য রেখেছেন ১৫ জন। তাঁদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও রয়েছেন টিডিপির চন্দ্রবাবু নাইডু, ডিএমকের এমকে স্ট্যালিন, ওয়াইএসআরসিপি-র জগমোহন রেড্ডি। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়া ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। এ দিনের বৈঠকের ফাঁকেই বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। অন্যান্য দলের নেতাদের সঙ্গেও সৌজন্যে সাক্ষাৎ সেরেছেন মমতা।