সিকিমের ছাঙ্গুতে আটকে বহু পর্যটক, উদ্ধারে তৎপর সেনা

banner

#Pravati Sangbad Desk:

গত শনিবারাই পেরিয়েছে বড়দিন, সামনেই নতুন বছর। তাই লম্বা ছুটিতে অনেকেই বেড়িয়ে পড়েছে ভ্রমণে, কেউ দীঘা মন্দারমণি কেউ বা পুরি, কেউ আবার সোজা পাহাড়। বাঙালির ভ্রমণ বলতে দীপুদা। কিন্ত ছুটি কাটাতে গিয়ে যে বিপদের দেখা মিলবে কেই বা জানতো। তবে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস ছিল বড়দিন থেকেই উর্ধমুখী হবে পারদ কারণ পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, বাস্তবে ঘটেছেও তাই।
বেশ কিছুদিন হাড় হিম করা শীতল বাতাস উধাও, রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাসও। ঠিক সেই মতই শনিবার সকাল থেকে ছাঙ্গু লেক সহ সিকিমের একাংশে শুরু হয় তুষারপাত, আর তাতেই আটকে পড়েন কয়েক হাজার পর্যটক। রবিবার সিকিম প্রশাসনের তৎপরতায় পর্যটকদের গ্যাংটক এ নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এদিনও পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে চলতে থাকে তুষারপাত আর তার মধ্যেই চলে উদ্ধারকাজ। শনিবার রাত পর্যন্ত পাঁচশোর বেশি পর্যটক কে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। পর্যটকদের উদ্ধারকাজে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে উদ্ধারকাজে নেমেছিলেন ভারতীয় সেনার উদ্ধারকারী দল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
রবিবার রাত ১১ টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজ চালায়। সেনাবাহিনীরা ১৭ মাইল সামনে থেকে ১৫ কিলোমিটার লম্বা এলাকাজুড়ে উদ্ধার কাজ চালায় তারা। সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় খুশি পর্যটকরা। শনিবার রাতেই পর্যটকদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। সেনাবাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন সিকিম ছাঙ্গু লেক এর কাছে প্রায় হাজারের বেশি পর্যটক আটকে পড়েছিলেন তুষারপাতের কারণে। সেনাবাহিনী তরফ থেকে তাদের সমস্ত রকম সাহায্য করা হয়েছে এবং তাদের খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে দেওয়া হয়েছে গরম জামা কাপড়ও।

সেনাবাহিনী তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে তাদের মধ্যে সকলেই সুস্থ আছেন। সেনাবাহিনীর এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে সিকিমের তাপমাত্রা প্রায় শূন্যের নিচে নেমে গিয়েছিল এবং শীতের তীব্রতা এতই ছিল যে বরফ মাটিতে পড়ার সাথে সাথেই জমে পিচ্ছিল হয়ে পড়ছিল। আর তার মধ্যেই ভারতীয় সেনার ব্ল্যাক ক্যাট ডিভিশন উদ্ধার কাজ চালাই।
তবে সিকিমের এহেন পরিস্থিতি নতুন কিছু নয় এর আগেও বহু পর্যটক তুষারপাতের কারণে আটকে পড়েছিলেন আবার অনেক সময় পাহাড়ে ধ্বস নামার কারণে তারা আটকে পড়েন। রবিবার সকালে পূর্ব সিকিমের পুলিশ সুপার শিবা এল্লাসিরি সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও অন্যান্য এলাকার পর্যটকদের এদিন উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো জানিয়েছেন অতিরিক্ত তুষার পাতের মধ্যে হাঁটার কারণে অনেক পর্যটকই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাদের শিবিরে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে এবং বর্তমানে তারা সকলেই সুস্থ।

হুগলির হিন্দমোটর এর বাসিন্দা সুভাষ কর্মকার জানিয়েছেন শনিবার রাতে যদি সেনাবাহিনী তরফ থেকে এবং স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে উদ্ধার কাজ না চালানো হতো তাহলে তারা সকলেই প্রবল ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়তেন। এছাড়া যে সকল পর্যটক গাড়ি ভাড়া করতে পারেননি তাদের সকলকে সেনাবাহিনী তরফ থেকে গ্যাংটক এ পৌঁছে দেয়া হয়।

Journalist Name : Sabyasachi Chatterjee

Related News