স্বামীজির 161তম জন্মবার্ষিকী, শনিতে বেলুড় মঠে আনন্দ-উৎসব

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আজ বৃহস্পতিবার ১২ই জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের ১৬০তম জন্মবার্ষিকী ও ৩৯তম জাতীয় যুব দিবস পালিত হচ্ছে বেলুড় মঠে।

রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বিভিন্ন কেন্দ্রে পালিত হচ্ছে আজকের দিনটি। উত্তর কলকাতার সিমলা স্ট্রিটে স্বামীজির বাড়িতেও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকেই ভক্ত সমাগম হয়েছে। গোটা দেশে বিবেকানন্দের জন্মদিনটি জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়। সেই উপলক্ষ্যেও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 

সকাল থেকেই বেলুড় মঠে ভক্ত সমাগম হয়েছে। বেলুড় মঠে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। তবে মূল অনুষ্ঠান হবে আগামী শনিবার। ওইদিন বেলুড় মঠে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মতিথি উত্‍সব হবে।

আজ বিবেকানন্দের আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে সকাল থেকেই স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল ক্লাব এবং মঠের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের সদস্যরা স্বামীজীর প্রতিকৃতি নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে গান করতে করতে বেলুড় মঠে আসেন। তারা স্বামীজীর মন্দিরে প্রণাম নিবেদন করে বেলুড় মঠ প্রদক্ষিণ করে মূল মন্দিরের পাশে নির্মিত অস্থায়ী মন্ডপে গিয়ে বসেন।

যেখানে সকাল সাড়ে নটা থেকে শুরু হবে নানা অনুষ্ঠান। প্রায় দেড় ঘন্টার এই অনুষ্ঠানে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণের পর উদ্বোধনী সংগীত, প্রস্তাবনা, ধর্মীয় আলোচনা, সংগীত, বিবেকানন্দ সম্বন্ধে বক্তৃতা, যোগ ব্যায়াম প্রদর্শনী ইত্যাদি হবে। পরিশেষে সকলে হাতে হাতে প্রসাদ নিয়ে বাড়ি ফিরবেন।

করোনা পরিস্থিতিতে জেরে গত কয়েক বছর স্বামীজির সিমলা স্ট্রিটের বাড়ির ভিতরে ভক্তদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। তাঁদের জন্য বাইরেই শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করা হত। আপাতত অবশ্য বদলেছে পরিস্থিতি। ফের আগের মতো ভক্তরা বাড়ির সমস্ত জায়গা ঘুরে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। স্বামীজির স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখার সুযোগও মিলছে ভক্তদের। একই ছবি ধরা পড়েছে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বিভিন্ন কেন্দ্রেও। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সারদাপীঠের সভাগৃহে সকালে প্রার্থনা ও ভক্তিগীতি দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। দেশাত্মবোধক গান, শারীরিক কসরত্‍, মার্শাল আর্ট, ছাড়াও বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়।

১৯৮৫ সালে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনটিকে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে ঘোষণা করে তত্‍কালীন কেন্দ্রীয় সরকার। যারপর থেকেই দেশজুড়ে স্বামী বিবেকানন্দর-র জন্মদিন হিসেবে যে দিনটি পালিত হয়ে আসছে। 

যুব সমাজের প্রতি স্বামীজির বার্তা ছিল “ওঠো , জাগো এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।” কাজ সম্পর্কে বিবেকানন্দর বার্তা, “সারাদিন চলার পথে যদি কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হও, তাহলে বুঝবে তুমি ভুল পথে চলেছ।” শিকাগোর বক্তৃতা রাখতে গিয়ে বিবেকানন্দ শুরু করেছিলেন, 'ভাই ও বোন' বলে সম্বোধন করে। তাঁরই বক্তব্য, 'জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।'

চরিত্র গঠন সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য ছিল, “নিজের উপর বিশ্বাস না এলে, ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আসে না।' তাঁর কথায়, “যে রকম বীজ আমরা বুনি, সে রকমই ফসল আমরা পাই। আমরাই আমাদের ভাগ্য তৈরী করি, তার জন্য কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই, কাউকে প্রশংসা করারও কিছু নেই। ” সঙ্গে ভয়ডরহীন হয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, 'ভয়ই মৃত্যু, ভয়ই পাপ, ভয়ই নরক, ভয়ই অসাধুতা, ভয়ই ভুল জীবন, এই বিশ্বের সমস্ত নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা ও ধারণা' এই ভয়ের অসৎ শক্তি থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।'

স্বামী বিবেকানন্দের জীবনাদর্শন এবং চিন্তাভাবনা যুব সম্প্রদায়ের প্রেরণা আজও। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি সাংসারিক মোহ মায়া ত্যাগ করে প্রবেশ করেছিলেন আধ্যাত্মিক জগতে। শরণাপন্ন হয়েছিলেন শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের। মাত্র ৩২ বছর বয়সে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।

Journalist Name : Sampriti Gole

Related News