Diksha App থেকে ফাঁস ১৬ লাখ ইউজারের তথ্য

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ডিজিটাল দুনিয়ায় বোধ হয় কোনও কিছুই আর সুরক্ষিত নয়। বেসরকারি সংস্থা থেকে কোটি-কোটি গ্রাহকের তথ্য ফাঁসের ভুরিভুরি অভিযোগ উঠেছে। এবার কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের (পূর্বতন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক) অধীনে থাকা সরকারি অ্যাপ থেকেই মোট ১৬ লক্ষ শিক্ষক-পড়ুয়ার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
Facebook, Twitter-এর মত বড় বড় কোম্পানিগুলি বেশ কয়েকবার এই কেলেঙ্কারির মুখে পড়েছে, যাতে ডার্ক ওয়েবে উপলব্ধ হয়েছে লাখো লাখো মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সরকারের Diksha অ্যাপে একটি ত্রুটির কারণে এর সাথে সংযুক্ত প্রায় ৬ লাখ ভারতীয় শিক্ষার্থীর ডেটা ইন্টারনেটে ফাঁস হয়েছে; মূলত অ্যাপের ডেটা একটি অরক্ষিত ক্লাউড সার্ভারে সংরক্ষণ করার ফলেই ইউজারদের (শিক্ষার্থী, শিক্ষক উভয়েরই) নাম, ইমেইল আইডি, স্কুলের ব্যাকগ্রাউন্ড ইত্যাদি বহু তথ্য এই বিভ্রাটের শিকার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আমেরিকা যুক্তরাজ্যের সিকিউরিটি রিসার্চাররা (হিউম্যান রাইটস ওয়াচের) সরকারের এই দীক্ষা (পড়ুন দীক্শা) অ্যাপের ত্রুটিটি চিহ্নিত করেছেন। এই ত্রুটির কারণে অ্যাপের সাথে সংযুক্তদের সংবেদনশীল ডেটা বেহাত হয়ে যেতে পারে বলেই তাঁদের দাবি। সেক্ষেত্রে রিপোর্ট বলছে যে, এই শিক্ষামূলক অ্যাপ থেকে ৬ লাখের কাছাকাছি সংখ্যক শিক্ষার্থীর ডেটা (যেমন তো লিক হয়েছেই, এরই সাথে ১০ লাখেরও বেশি শিক্ষকের পুরো নাম, ফোন নম্বর এবং ইমেইলের মত ডেটা ক্লাউড সার্ভারে উন্মুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের ইমেইল বা ফোন নম্বর আংশিকভাবে অস্পষ্ট হলেও অ্যাক্সেস করা গেছে তাদের সম্পূর্ণ নাম, স্কুল সম্পর্কিত তথ্য, তালিকাভুক্তির তারিখ এবং কোর্স সমাপ্তি ইত্যাদি বিশদ। ‘ওয়ার্ড’ নামে একটি সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘২০১৭ সালে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের জন্য ‘দীক্ষা’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছিল ত‍ৎকালীন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পরে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে যাতে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের কোনও অসুবিধা না হয় সেই বিষয়টি মাথায় রেখে ওই অ্যাপে পড়াশোনা সংক্রান্ত মেটেরিয়াল আপলোড করা হয়। তাতে পড়ুয়াদের অনেকটা সুবিধা হয়েছিল। কিন্তু অ্যাপের নিরাপত্তার বিষয়টির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়নি। সুরক্ষিত নয় এমন ক্লাউডে ৬ লক্ষ শিক্ষার্থী ও ১০ লক্ষ শিক্ষকের তথ্য মজুত রাখা হয়েছিল।’

রিপোর্ট অনুযায়ী, মাইক্রোসফ্ট অ্যাজুরে পরিচালিত একটি ক্লাউড সার্ভারে দীক্ষা অ্যাপের ডেটা অসুরক্ষিত ভাবে রাখার কারণেই কিছু ডেটা গুগলে উপলব্ধ ছিল বলে জানা গেছে। এদিকে শোনা যাচ্ছে যে এই প্রথমবার নয়, বরং এর আগে ২০২২ সালের জুন মাসে গবেষকরা এই অ্যাপ্লিকেশনের একটি ত্রুটি আবিষ্কার করেছিলেন। শুধু তাই নয়, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সংস্থা দাবি করার প্রায় এক মাস পরেও নাকি এটি গতানুগতিক চালেই চলেছে এবং বহু সংবেদনশীল ডেটা সংগ্রহ করে তা গুগলসহ বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থাগুলির সাথে শেয়ার করেছে। কিন্তু ভারত সরকার এমনকি শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা দীক্ষা অ্যাপের ব্যবহার এড়িয়ে কোনো অন্য বিকল্প খোঁজেনি।এই ডেটা ফাঁসের বিষয়টি সরাসরি ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত না হলেও, এটির কারণে নানা বিপত্তির সৃষ্টি হতে পারে। কথায় আছে দুর্জনের ছলের অভাব হয়না! সেক্ষেত্রে শিশুদের ডেটা কাজে লাগিয়ে ব্ল্যাকমেইল, অপহরণ বা অন্যান্য হয়রানির ঘটনা ঘটানো যেতে পারে; অর্থাত্‍ এটি সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি বড় প্রশ্ন চিহ্ন।

Journalist Name : Sampriti Gole

Tags:

Related News