প্রয়াত প্রাক্তন ফুটবলার পরিমল দে

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘুমের মধ্যেই পরলোক গমন করেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার পরিমল দে । ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলেই তিনি বিখ্যাত হয়েছিলেন। মঙ্গলবার রাতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর ৮২ বছর বয়স হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে অ্যালজাইমারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। মঙ্গলবার রাত ১২.১৫ মিনিটে কসবায় নিজের বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ময়দানের জংলাদা। ময়দানে তিনি পরিচিত ছিলেন জংলা নামে। স্বাধীন ভারতে বিদেশি ক্লাবের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম বড় সাফল্য ছিল ইরানের পাস ক্লাবের বিরুদ্ধে জয়। আর এই ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি। ইডেনের সেই ম‍্যাচে পরিবর্ত ফুটবলার হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন। স্বপন সেনগুপ্তর বাড়ানো বল ধরেই গোল করে নায়ক হয়েছিলেন পরিমল দে। ১৯৬৪ সালে তিনি যোগ দেন লাল হলুদ ক্লাবে। ইস্টবেঙ্গলে তুলসীদাস বলরামের মতো ফুটবলারের অভাব অনেকটা পূরণ করে দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৬৬ সালে মারডেকায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে তার একমাত্র গোলে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল ভারত। এরপর রাতারাতি বাংলার ফুটবল প্রেমীদের নয়নের মনি হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে ফুটবল জীবনে তার সবচেয়ে বড় অর্জন এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতেই।

IFA শিল্ড ফাইনালে ইরানের পাস ক্লাবকে হারায় ইস্টবেঙ্গল ১৯৭০ সালে। স্বাধীনতার পর সেই প্রথম কোনও ভারতীয় ক্লাব বিদেশি ক্লাবকে পরাজিত করে শিল্ড যেতে। ইস্টবেঙ্গলের সেই গৌরবময় ইতিহাসের নায়ক ছিলেন পরিমল দে। ফাইনালে তাঁর অনবদ্য গোল ময়দানের প্রবীণ ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতিতে আজও অক্ষত। ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে পরিবর্ত হিসাবে নেমেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক গোলটি করেন পরিমল। তাঁর সেই গোল মিলিয়ে দিয়েছিল গোটা ময়দানকে। ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে মহম্মদ হাবিবের পরিবর্ত হিসাবে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। গোলের মুহূর্তে ধারাভাষ্যকার কমল ভট্টাচার্য বলছিলেন, ”বল নইমের পায়ে। নইম স্বপনকে দিয়েছে। স্বপন অসম্ভব জোরে ছুটছে। বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। জংলাকে দিয়েছে। জংলা গোল করে দিয়েছে। গো-ও-ও-ল। ইস্টবেঙ্গলের পি দে গোল করেছে।”  কারিগর ছিলেন পরিমল। ঐতিহাসিক পাস ক্লাবের ম্যাচ প্রসঙ্গে একবার পরিমল দে বলেছিলেন, ”এত দ্রুত ঘটেছিল সব কিছু যে প্রথমটায় আমি উপলব্ধিই করতে পারিনি যে ইতিহাস তৈরি হয়েছে। কেমন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম।” ইস্ট-মোহন-মহামেডান সমর্থকরা যেন মুহূর্তে ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে যান। তারপর থাকে দর্শকরাই কাঁধে তুলে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে পৌঁছে দেন।

Journalist Name : Aparna Dutta

Tags:

Related News