কর্মের নাস করে যে নদী

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ভারতবর্ষে আমরা নদী বলতে গঙ্গাকেই বুঝি। যার জল যেমন পবিত্র তেমনই অনেক কাজেও আসে সাধারণ মানুষের। গঙ্গা নদীর জলে স্নান করা থেকে শুরু করে চাষবাসের কাজ এছাড়াও বিভিন্ন কাজে লাগে এই নদীর জল। তবে জানলে অবাক হবেন ভারতবর্ষের মধ্যেই এমনই এক নদী আছে যার জলে স্নান করা তো দূরের কথা সেই জল ছুঁতেও মানুষ ভয় পায়। কি সেই নদীর নাম আর কোথায় বা আছে এই নদী?  

এই নদীটি বিহারের কাইমুর জেলা থেকে উৎপত্তি হয়ে উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র, চন্দউলি, বারানসি এবং গাজীপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিহারের বক্সারের কাছে গঙ্গার সাথে মিলিত হয়। কর্ম ও নাশা এই দুটি শব্দের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে নদীটির নাম দেওয়া হয় কর্মনাসা যার অর্থ এমন নদী যা ধ্বংস করে বা নষ্ট করে। কিন্তু কেন এই নাম ? 
https://youtu.be/QJ6rYCwvs4w
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে রাজা হরিশচন্দ্রের পিতা সত্যব্রত ছিলেন একজন পুরুষালী এবং পরাক্রমশালী এবং তিনি ছিলেন বশিষ্ঠ মুনির শিষ্য। এবং তিনি তার গুরু বৈশিষ্ট্য মুনির কাছে একটি ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেছিলেন, তিনি যেন তার দেহটি নিয়ে স্বর্গে যান। কিন্তু তার গুরু সেই ইচ্ছাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই সত্যব্রত তার গুরুর প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে এবং তখন তিনি তার গুরুর শত্রু বিশ্বামিত্রের কাছে যান এবং তার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। যেহেতু সত্যব্রত বিশ্বামিত্রের আগে থেকেই শত্রু ছিল সে কারণেই বিশ্বামিত্র তার এই ইচ্ছাকে সমর্থন করেন। এবং তিনি তাকে স্বর্গেও পাঠিয়ে দেন। কিন্তু শর্করা যা দেবরাজ ইন্দ্র বিশ্বামিত্রের এই কাজে ক্ষুব্ধ হয়ে সত্যব্রতকে উল্টো করে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন। পরক্ষণেই বিশ্বামিত্র সত্যব্রত দেহকে স্বর্গ এবং পৃথিবীর মাঝে আটকে দেন এবং দেবরাজ ইন্দ্রের সাথে শুরু করেন যুদ্ধ। আর তাদেরই এই যুদ্ধের মাঝে স্বর্গ এবং পৃথিবীর মাঝে আটকে থাকা সত্যব্রতর মুখ থেকে প্রবল বেগে লালা ঝরতে থাকে। আর সেই লালাই নাকি পৃথিবীতে কর্মনাসা নদী হিসেবে প্রবাহিত হয়েছে। মনে করা হয় সত্যব্রত তার গুরু অভিশাপ দিয়েছিলেন চন্ডাল হওয়ার। আর তাই এই নদীকে অভিশপ্ত নদী ও বলা হয়ে থাকে। তাই এই নদীটি আজ ও পৃথিবীতে অভিশপ্ত নদী হিসেবে পরিচিত যার কারণে এই নদীর জল মানুষ ছুতেও ভয় পায়। 

Journalist Name : Joly Pramanick

Tags: