#Pravati Sangbad Digital Desk:
নকশিকাঁথার অপূর্ব কাজের জন্য বড় স্বীকৃতি পেয়েছেন বাংলার প্রীতিকণা গোস্বামী। পদ্মশ্রী সম্মাণে ভূষিত করা হয়েছে তাঁকে। সোনারপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রীতিকণার হাতের কাজ এখন বিদেশেও পাড়ি দেয়। বিনা পারিশ্রমিকেই মহিলাদের সেলাইয়ের কাজ শেখান তিনি। কমলাদেবী কাঁথা সেন্টারের নাম এখন লোকের মুখে মুখে ফেরে। লড়াই শুরু ১৯৭৩-এ। বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামের আর পাঁচজন মেয়ের মতোই সাদামাটা জীবন। ম্যাট্রিক পাশ করার কিছুদিনের মধ্যেই বাবার মৃত্যু স্তব্ধ করে দিয়েছিল প্রীতিকণা দেবীর পরিবারকে। তারপর পরই একদিন এক বন্ধুর বাড়িতে সেলাইয়ের কাজ মন দিয়ে দেখছিলেন তিনি। সেলাই করতে করতে শাড়িটা রেখে বেরিয়ে যান সেই বন্ধু। প্রীতিকণা কী মনে করে খানিকটা সেলাই করে দিয়েছিলেন। আর সেইদিনই বন্ধু বুঝে গিয়েছিলেন প্রীতিকণার হাতের জাদু।
বান্ধবী রমা দাসের সেলাইয়ের কাজই তাঁকে উত্সাহ দিয়েছিল। রমা সেলাইয়ের কাজের অর্ডার পেতেন। সেই সূত্র ধরেই পীতাম্বরি নামে একটি সংস্থা প্রীতিকণাদেবীকেও সেলাইয়ের কাজের অর্ডার দেয়। ২০০১ সালে তিনি তাঁর কাজের জন্য রাষ্ট্রপতি আবদুল কালাম আজাদের কাছ থেকে জাতীয় পুরষ্কার পান। সোনারপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রীতিকণার হাতের কাজ এখন বিদেশেও পাড়ি দেয়। দুই বাংলার শুধু সাহিত্যে নয়, জীবনযাপনে, সংস্কৃতির সঙ্গে এই লোকশিল্প অঙ্গাঙ্গিভাবে মিশে রয়েছে। সাধারণ কাঁথা সেলাইয়ের সঙ্গে শ্রম ও মনের মাধুরী মিশিয়ে বাংলার মা-বোনেরা শত শত বছর ধরে নকশিকাঁথার যে বর্ণময় ইতিহাস রচনা করেছেন, প্রীতিকণা গোস্বামীর হাত ধরে তা যেন আবার বাংলাকে উজ্জ্বল করে তুলল। তিনি আজীবন নকশিকাঁথা-সহ বিভিন্ন সুচিশিল্পের উজ্জ্বল সফরের যাত্রী থেকেছেন। হাতের দক্ষতার পাশাপাশি চোখের আন্দাজে ফুল পাতার নানা নকশা তুলেছেন জীবনভর। দেশে বিদেশের ভিন্ন ভিন্ন মিউজিয়াম ঘুরে কাজ শিখেছেন এবং শিখিয়েছেন। বাংলার মেয়েদের সেলাইয়ের কাজ শিখিয়ে তাঁদের স্বনির্ভর করার দায়িত্বেও তিনি সফল।
Journalist Name : Sampriti Gole