অশান্ত মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা-নাটক ! রাহুল গান্ধী দেখা করলেন রাজ্যপালের সাথে

banner

# Pravati Sangbad Digital Desk :

বিগত প্রায় দু’মাস ধরে মণিপুরে ঝামেলা অব্যাহত। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে চাপের মুখে আজই রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীত্বের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। কিন্তু বাড়ির বেরোতে বেরোতে যাওয়ার মুখেই তাঁকে ঘিরে ধরলেন কয়েকশো মহিলা। তাঁদের মধ্যেই একজন অফিসারের হাতে থাকা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন।

এদিকে দুদিনের মণিপুর সফরের আজ, শেষদিনে সকালে রাহুল গান্ধী বিষ্ণুপুর জেলার মৈরাংয়ের দুটি ত্রাণ শিবির ঘুরে দেখেন। সেখানে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন কংগ্রেস নেতা। সকাল সাড়ে ৯টার সময় চপারে করে মৈরাংয়ে এসে পৌঁছন তিনি। ওই দুটি শিবির প্রায় হাজারখানেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। রাহুলের সঙ্গে ছিলেন মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিং, কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল প্রমুখ। উল্লেখ্য মৈরাং হল ইতিহাস প্রসিদ্ধ জায়গা। এখানেই নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজ ১৯৪৪ সালে তেরঙা উত্তোলন করেছিল। সেখানে আজাদ হিন্দ ফৌজের স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন তিনি। ত্রাণ শিবিরে শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করেই ফের চপারে ইম্ফলে আসেন রাহুল। সেখানে ইম্ফল হোটেলে দুপুরের পর সুশীল সমাজ, ইউনাইটেড নাগা কাউন্সিল, ১০টি সমমনস্ক রাজনৈতিক দল এবং মহিলা নেত্রীদের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।


শুক্রবার বেলা দেড়টা নাগাদ রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে বাসভবন থেকে বেরোন এন বীরেন সিং। এমন সময়ই কয়েকশো মহিলা তাঁর কনভয় আটকে দেন। এবং, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন। ফলে আজ ইস্তফা দিতে পারলেন না বীরেন সিং। মহিলাদের দাবি, এন বীরেন সিংকেই তাঁরা মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। তাঁদের বিশ্বাস, বীরেনই পারবেন মণিপুরের পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে। এদিকে আজ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও মণিপুরের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান।

জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল যে শুক্রবারই পদ থেকে ইস্তফা দেবেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। জল্পনাকে সত্যি করে ইস্তফা দিতে রাজভবনের উদ্দেশে রওনাও দিয়েছিলেন তিনি। তার পরের ঘটনাক্রম পুরোদস্তুর নাটকীয়তায় ভরা। সমর্থকদের ‘চাপে’বীরেনের ইস্তফা দেওয়া তো হলই না, উল্টে রাজ্যপালের কাছে যে ইস্তফাপত্রটি তিনি পেশ করতে যাচ্ছিলেন, সেটিও ছিঁড়ে ফেলা হল! শেষমেশ মণিপুর সরকারের এক মুখপাত্র জানালেন, ইস্তফা দিচ্ছেন না বীরেন। 

প্রসঙ্গত, বিগত ৩ রা মে থেকেই মণিপুরে কুকি এবং মেইতেই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে কুকিরা জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। এবার রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইরাও জনজাতিকরণে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানায়। এনিয়েই বিবাদে জড়ায় প্রাচীন দুটি জাতিগোষ্ঠী।

প্রায় কুড়ি হাজার সেনাকে কাজে লাগিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। গঠন করা হয়েছে শান্তি কমিটি। তার প্রধান করা হয়েছে মণিপুরের রাজ্যপালকে। তবুও ফেরেনি স্বাভাবিক জীবন। দুই জনগোষ্ঠীর এই ঝামেলায় ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ১০০ জন মানুষ। একাধিক নেতামন্ত্রীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Journalist Name : প্রিয়শ্রী

Related News