রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে বঞ্চিতদের হাতে লেখা চিঠি তুলে দিতে চেয়ে এবং কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বকেয়া না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ৫ দিন আগেই রাজভবন অভিযান করেছিলেন অভিষেক৷ কিন্তু, সেই সময় রাজ্যপাল সেখানে না থাকায় ধর্নামঞ্চ বেঁধেই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷ রাজ্যপাল মুখ্যসচিবকে চিঠিতে আইনের একাধিক ধারার উল্লেখ করে জানতে চেয়েছেন, রাজভবনের সামনে তৃণমূলকে ধর্না করার অনুমতি কে দিল? রাজভবনের সামনে ১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও কিভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালতে মামলাও করা হয়েছে।
তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে একশো দিনের কাজের ইস্যুতে আলোচনার পরপরই রাজ্যপাল বোসের ফের দিল্লি যাত্রা স্বাভাবিকভাবেই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অভিষেকরা দাবি তুলেছেন, রাজ্যপাল যাতে তাদের ইস্যুগুলি নিয়ে কেন্দ্রের থেকে জানতে চান।
সোমবার রাজভবনের বাইরে অভিষেকের ধর্নার পঞ্চম দিন। এদিন টলিউড অভিনেতা তথা ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব যখন গাড়ি থেকে নামছেন সেইসময় মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা রাখছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দেবকে দেখেই তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সাংসদ দেব এসেছেন।” দিল্লিতে এবং কলকাতায় অভিষেকের কর্মসূচিতে দলের দুই সাংসদ দেব ও মিমি চক্রবর্তীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। কারণ বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন, এই সময়ে দলের কর্মসূচি ‘এড়িয়ে’ যাওয়াকে ভালো চোখে দেখেনি রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
বিকেল ৪টের সময় রাজভবনে প্রবেশ করে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল৷ প্রত্যেক প্রতিনিধির হাতেই ছিল কম করে ২০০-৩০০টি চিঠি৷ সূত্রের খবর, এদিন রাজ্যপালের সামনে বেশ কিছু প্রশ্ন রাখা হয় তৃণমূলের তরফে৷ প্রথমত, ২০ লক্ষ মানুষ আদৌ কি ১০০ দিনের কাজ করেছেন? যদি করে থাকেন, তা হলে কোন আইনের কোন ধারায় তাঁদের টাকা দীর্ঘ দিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে?
রাজ্যপালের হাতে একটি স্মারকলিপি ও বঞ্চিতদের চিঠি তুলে দেওয়া হয় তৃণমূলের তরফে৷ বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংসদ সৌগত রায় জানান, ‘বৈঠক ভালই হয়েছে৷’ এরপরে তৃণমূলের কর্মসূচি কী হবে, তা পরবর্তী ক্ষেত্রে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে৷
রবিবার রাতেই তৃণমূল কংগ্রেসকে ইমেইল করে রাজভবন জানায় সোমবার বিকেল ৪টের সময় তাঁরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। সেই মতো এদিন প্রতিনিধি সাংসদ-বিধায়ক, ৭ বঞ্চিত ও ২০-৩০ লক্ষ চিঠি নিয়ে রাজভবনে পৌঁছন অভিষেক৷ যদিও এদিন ভিতরে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার রদ করা হয়েছিল রাজভবনের তরফে৷ মোবাইল ফোনও নিয়ে যাওয়ার অনুমতি ছিল না৷