পুরভোটের ভবিষ্যৎ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দিলো কোলকাতা হাইকোর্ট

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

রাজ্যে দিনে দিনে ভয়ানক হয়ে চলেছে করোনা পরিস্থিতি, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন থেকে চিকিৎসক মহল সর্বত্র। কোভিড আবহের মধ্যেই রাজ্যে ২২শে জানুয়ারি ৪ পুরনিগমে ভোট, আর তা নিয়েই বেড়েছে উদ্বেগ। রাজ্যে পুর ভোট পেছনোর দাবিতে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল আগেই, কিন্তু তাতে বিশেষ ফল হয়নি। পুর ভোটে কার্যত বিধি নিষেধ বেঁধে দিয়েছিলো বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের তরফ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল “ করা যাবে না কোন বড় জমায়েত, করা যাবে না বাইক র্যা লি, সর্বচ্চ ৫ জন নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার করা যাবে”। কিন্তু আদালতের নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রকাশ্যে চলেছে পুর ভোটের প্রচার, যার জেরে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৪ প্রার্থীকে শোকজ পর্যন্ত করেছে।
কিছু দিন আগেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেই শোনা গিয়েছিলো, “ আগামী দুই মাস সমস্ত ধরণের রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখা উচিত”। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যকে সাধু বাদ জানিয়েছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, কিন্তু দলের পক্ষ থেকে সেই ভাবে কোন নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি, যা নিয়ে ক্ষোভের মুখে পরে বর্তমান জোড়া ফুল শিবির। 
অবশ্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য ছিল তারা নবান্নের সাথে বৈঠক করেই এই সিদ্ধান্তে এসেছে। রাজ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোট করা যাবে কিনা, যথাযত ভোটকর্মী এই করোনা পরিস্থিতিতে আছেন কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলো আদালত। তবে বৃহস্পতিবার আদালতে শুনানি চলাকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকার যে ভাবে একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে তাতে রীতিমতো হতবাক উচ্চ আদালত, যার জেরে আদালতের তীব্র নিন্দার মুখে পরতে হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকারকে। বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করে, “ পুর আইন তৈরির ২৭ বছর পরেও কেন স্পষ্ট নয় রাজ্যে পুরভোট কার নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয়?” এদিন আদালতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্যে পুরও ভোট সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় রাজ্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই বিবেচনা করতে হবে।

অনেকেই মনে করছেন রাজ্যে নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় ক্ষমতা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই দিতে চাইছে উচ্চ আদালত। রাজ্যে বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য আগামী ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পুরভোট পেছনো যায় কিনা তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিল কোলকাতা হাইকোর্ট। এদিনের শুনানিতে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে পুরভোট সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতকে আর কিছু জানানোর প্রয়োজন নেই, রাজ্য নির্বাচন কমিশনই যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার করবে, অর্থাৎ পুরভোট মামলার ইতি টানতে চাই কোলকাতা হাইকোর্ট।

রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট জমা পড়েছে আদালতের কাছে, আর তা খতিয়ে দেখেই আদালতের বক্তব্য পুরভোট কিছু দিন পিছিয়ে গেলে এমন কোন ক্ষতি হবে না, তবে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আদালতের মতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি স্বাধীন এক প্রতিষ্ঠান থিন তেমনই আদালতও স্বাধীন, তাই আদালত নিজের রায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপিয়ে দিতে পারে না।

Journalist Name : Sagarika Chakraborty

Related News