#Pravati Sangbad Digital Desk:
শদ্য প্রয়াত হয়েছেন ভারতের কিংবদন্তী গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। রবিবার সকালে মুম্বাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতরত্ন গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কোভিড নিয়ে, তারপর ধীরে ধীরে অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে তাঁর। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয় মহান গায়িকাকে। গোটা দেশ এখনও পর্যন্ত শোকস্তব্ধ, পালিত হয়েছে রাষ্ট্রীয় শোক। রবিবার বিকেলে মুম্বাইয়ে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চোখের জলে বিদায় জানানো হয় তাঁকে। তবে তিনি আজীবন জীবিত থাকবেন তাঁর সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে। প্রায় হাজারের ওপর গান তাঁর কণ্ঠে, তাই মানুষ তাঁকে ভালোবেসে নাম দিয়েছে 'কোকিল কণ্ঠি'। শুধু হিন্দি নয় পাশাপাশি আরও অনেক ভাষাতেই গানের দক্ষতা ছিল সমান। জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক সব পুরস্কারই তাঁর ঝুলিতে, পেয়েছেন ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সন্মান লেজিও দ্যা নর, পেয়েছেন দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার।
গোটা দেশের সাথে এই রাজ্যের মানুষের চোখেও জল তাঁর প্রয়াণে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে শোক জ্ঞাপন করেন। তিনি এও বলেন, লতা মঙ্গেশকরের স্মৃতির উদ্দেশ্যে রাজ্যে ১৫ দিন বাজবে তাঁর গান। আসলে জন্ম সূত্রে বাঙালি না হলেও বাংলার সাথে ছিল তাঁর বহুদিনের সক্ষ্যতা, বাংলার মানুষের প্রতি ছিল তাঁর অগাদ ভালোবাসা; বাংলা ভাষাকে ভালোও বাসতেন খুব, বারবারই তাঁর মুখে শোনা গেছে এই কথা। বাংলা ভাষা শিখতে বাসু ভট্টাচার্যকে নিজের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগও করেছিলেন। শুধু বাংলা ভাষাই নয়, বাংলার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রামকৃষ্ণ দেব, রবি ঠাকুর ছিলেন তাঁর অত্যন্ত পছন্দের।
বাংলার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখপাধ্যায়, মান্না দে, কিশোর কুমার, সলিল চৌধুরীর সাথে গেয়েছেন অসংখ্য গান। তাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীত বাঙ্গালির সর্বকালের পছন্দের। আনন্দমঠ ছবিতে বন্দেমাতারম গানের জন্য নেননি কোনো পারিশ্রমিক। উচ্চতার শিখরে পৌঁছেও তিনি আজীবন মাটির দিকে তাকিয়ে চলেছেন, তাঁর জীবনে কোনোদিনই ছিল না স্টার সুলভ আচরণ, যা সব সময় তাঁর গুণমুগ্ধদের কাছে পছন্দের। লতা মঙ্গেশকর মনে করতেন বাংলা এবং মারাঠি ভাষার মধ্যে রয়েছে ভাবগত মিল। বাংলা গান গেয়েছেন প্রায় ২০০ এর বেশি। তাঁর কণ্ঠে আকশপ্রদীপ জ্বলে গান প্রেমী বাঙ্গালিদের কাছে সব সময় পছন্দের। ১৯৫৬ সালে অসমাপ্ত ছবির জন্য গেয়েছিলেন জীবনের প্রথম বাংলা গান 'রিমিকি ঝিমিকি ছন্দে কে যায়', যা ছিল তাঁর সঙ্গীত জীবনের প্রথম আধুনিক বাংলা গান, শোনা যায় এই গানের জন্য নাকি কোনো পারিশ্রমিক নেন নি তিনি। সঙ্গীত পরিচালক নচিকেতা ঘোষের কাছে পারিশ্রমিক হিসাবে নিয়েছিলেন রূপোর বিনা, যা এখনও তাঁর অসংখ্য প্রাপ্তির মাঝে বিরাজমান।
Journalist Name : Sagarika Chakraborty