রাজপুর-সোনারপুরের পৌরপ্রধান, বহুমুখী প্রতিভাবান ডঃ পল্লব কুমার দাসের সাথে একান্তে প্রভাতী সাংবাদ

banner

#Exclusive Candid Interview :

রাজপুর-সোনারপুর মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান ডঃ পল্লব কুমার দাস, যিনি একজন রাজনীতিবিদের পাশাপাশি একজন চিকিৎসকও। তাঁর রাজনীতিতে আসার ঘটনা হিসাবে তিনি বলেন, "রাজনীতিতে ডাক্তার থেকে আসিনি, ডাক্তারির আগে থেকে এসেছি। মাধ্যমিক পাশ করি নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে। তারপর ইলেভেন-টুয়েলভ সেন্ট জেভিয়ার্সে করি। এরপর পড়তে পড়তে সালটা ১৯৮২, সেই সময় তখন আমাদের ছাত্র-পরিষদের টিম এখানে নতুন করে তৈরি হয়েছে, নতুন প্রজন্ম। তখন সবে বামফ্রন্ট সরকার এসছে সাতাত্তর সাল। প্রকৃতপক্ষে বলতে কি তখন মানে আমার মাথার মূল আকর্ষণ যিনি ছিলেন, তিনি ছিলেন এখন নেই প্রয়াত প্রিয়দর্শন দাশমুন্সি। তাঁর বক্তৃতা, তাঁর লেখা এইসবগুলো পড়তাম। পরবর্তীকালে কলকাতায় তাঁর একটা পত্রিকাও বেরোল দক্ষিণী বার্তা বলে। সেহেতু আমাদের এক মাস্টারমশাই সেখানে রেগুলার বেসিসের লেখক ছিলেন, তিনিও আজ নেই ডঃ কৌশিক রায় চৌধুরী নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের শিক্ষক ছিলেন। তিনিও লিখতেন। তিনি একদিন আমাকে নিয়ে যান তাঁর অফিসে। আর সেই থেকেই শুরু। তারপর ১৯৮৪ সাল, আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন ছাত্র-পরিষদের নেত্রী ছিলেন এবং ছাত্র-পরিষদ থেকেই কিন্তু লোকসভার প্রথম ক্যান্ডিডেট তিনি। ১৯৮৪ সাল, তারপর তো সেটা ইতিহাস হয়ে গেছে। ইন্দ্রপতন হয়েছিল ভারতের রাজনীতিতে। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে পরাজিত করে, তখন যাদবপুর লোকসভা আমাদের এখানটা তখন দক্ষিণ কলকাতার মধ্যে ছিল, যাদবপুরের মধ্যে ছিল না। কিন্তু আমাদের লাগোয়া এই মানিকপুর ওভারদিকগুলো সমস্ত সব তখন যাদবপুর লোকসভার মধ্যে ছিল। সেখানকার প্রার্থী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা তখন ছাত্র-পরিষদ করি। তারপর জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে ডাক্তারিতে চান্স পাওয়া। তারপর সেখানে যাওয়া। সেখানে মেডিকেলে ছাত্র-পরিষদের যে ইউনিয়ন ছিল, সেখানে পার্টিসিপেশন এবং সেখানকার ইন্টারনাল কলেজের ইলেকশনেও প্রতিদ্বন্ধিতা করা, কালচার ডিপার্টমেন্টটা সামলানো। পরবর্তীকালে আমাদের জুনিয়ার ডাক্তারের যে ইউনিট ছিল সেখানে প্রতক্ষ্যভাবে অংশগ্রহণ করি। তারপর কিছুদিন হাসপাতালে কর্মরত ছিলাম। সেইসময়টা একটু স্ট্রেসড ছিল। কিন্তু রাজনীতি থেকে বাইরে কোনো সময় যায় নি। মানে যোগাযোগটা সবসময় হতো, প্রত্যেকে ইলেকশনে থাকতাম, যা হতো, হতো। ডাক্তারিটা পড়ার সময় থেকে বা পড়ার আগে থেকেই আমি রাজনীতিটার সাথে ছিলাম। তারপরে প্রফেশন চালিয়ে যাচ্ছি, এখনও দেখছেন এই মুহূর্তে চেম্বারেই আছি পেশেন্ট দেখছি। একটু আগে দেখা শেষ করলাম আর এখন আপনাদের সাথে কথা বলছি। দুটো কাজই চালিয়ে যাচ্ছি সমানভাবে।"

চিকিৎসক ও  রাজনীতিবিদ, এই দুটো প্রফেশন তিনি নিজের মত করে ব্যালেন্স করছেন। তিনি যেমন মানুষদের সুস্থ করে খুশি পান তেমনি রাজনীতিবিদ হিসাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে সাহায্য করেও  খুশি হন।
বিরোধীদের সাথে মোকাবিলা প্রসঙ্গে উনি বললেন," এতগুলো ভোট হল, আপনারা তো দেখছেন। বিধানসভা হল, ক্যালকাটা কর্পোরেশন হল, পরে আসানসোল, শিলিগুড়ি, চন্দননগর, বিধাননগর কর্পোরেশন হল আমরা তো দেখছি বিরোধীদের; আমরা যেখানেই যাচ্ছি, তবে আত্মতুস্টিতে কেউ ভুগছি না আমরা। মানে যেকোনো বিরোধীকে ছোটো করে দেখার কোনো জায়গা নেই। বলবেটা কে? আপনি কেন্দ্রীয় সরকারের যতগুলো প্রকল্প দেখছেন ব্যাঙ্ক থেকে, এলআইসি থেকে, এয়ার ইন্ডিয়া থেকে সব বাইরে ছেড়ে দিয়েছে। মানুষ দেখছে না? গ্যাসের দামটা কোথায় ছিল আর কোথায় গেছে। আর যারা লক্ষ্মী ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী, সবুজসাথী এই সমস্ত কিছু মানুষ দেখছে। আপনারা বোকা ভাববেন না, মানুষ সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান। আগে থেকে সব ঠিক করা তাদের, তারা কি করবে না করবে। আমাদের কিচ্ছু করতে হবে না। আমরা শুধু কি করেছি আর মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর যে প্রকল্পগুলো ৫ বছরে কি কি পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজ করেছি, সেগুলো শুধু মানুষের কাছে তুলে ধরবো। আমাদের জলের যে প্রকল্পটা চলছে, তার সেকেন্ড ফেস চলছে। ফার্স্ট ফেসের ৯৫% কাজ হয়ে গেছে, সেকেন্ড ফেস অন দ্য ওয়ে, থার্ড ফেস কমপ্লিট করা। আর এটা প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি যাওয়া হবে। আর নিকাশি ব্যবস্থা, নিকাশি ব্যবস্থার জন্য ইতিমধ্যে আমরা চিঠি দিয়েছি যেটা মিউনিসিপ্যালিটি থেকে পঞ্চায়েতের মধ্যে ভাগ হবে। অলরেডি তাদের সাইট ভিসিট হয়ে গেছে। শর্ট ফেস, মিড ফেস, লং ফেস এই ধরে ধরে করছে। ভোটটা না হলে এটা এতদিনে শুরু হয়ে যেত অথবা জুন-জুলাই মাস থেকে শুরু হয়ে যেত। রাজপুর-সোনারপুর পৌরসভায় ১০০% মানুষের ফার্স্ট ডোজ হয়ে গেছে আর ৮০% মানুষদের সেকেন্ড ডোজ হয়ে গেছে ঠিক আছে; আর যাদের বাকি আছে তাদের ডেট আসে নি বলে হচ্ছে না। ১৪ থেকে ১৮ বছরের বাচ্ছাদের সেকেন্ড ডোজ কমপ্লিটের পথে। আপনি এখানে এমন একজনকেও দেখাতে পারবেন না যে সেকেন্ড ডোজ না নিয়ে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক, নিট পরীক্ষা দেবে না। আমরা সব জায়গা স্যানিটাইজেশন করিয়েছি। মাঝখানে ওমিক্রন এসছিল। আর এটা কম ইনফেক্টেড, তাই এবারে আমরা কম মানুষজনদের হারিয়েছি। আর দেখুন, পৃথিবী থাকবে, রোগও থাকবে আর তার প্রতিকারও থাকবে। মেডিকেল সাইন্স নিত্যনতুন আবিষ্কারও করবে, তবে ওয়েট করতে হবে। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সতর্ক থাকতে হবে। তাছাড়া ভোট কেন্দ্রে মাস্ক ছাড়া অ্যালাও নেই।" 
এছাড়া তিনি আরও জানালেন, সহকর্মীদের আলাদাভাবে বলার কিছু নেই। কারণ তারা সবাই সচেতন। তারা সবাই যথেষ্ট জ্ঞানী, আমার থেকেও জ্ঞানী। আমি একটাই কথা বলবো আমাদের যেটা প্রকল্পগুলো হয়েছে, যে কাজগুলো হয়েছে সেগুলোকে মানুষদের কাছে তুলে ধরবেন, তবে নম্রভাবে। এইতুকুই আমি বলবো।

Journalist Name : Trina Bhattacharya

Tags:

Related News