পশ্চিমবঙ্গ এর গরিব রাজ্যপাল, হাত পেতে চাঁদা তুলতেন

banner

#kolkata:

আমাদের রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপাল এর সংঘাতের ঘটনা নতুন কিছু নয় এই ঘটনা নতুন মোড় নেয় যখন কয়েকদিন  আগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এর বিরুদ্ধে সজনপোষনের অভিযোগ আনেন রাজ্যভবনের এর ৬জন অফিসার অন special ডিউটি অর্থাৎ এসডির তালিকা প্রকাশ করে তিনি দাবী করেন যে তারা সকলেই রাজ্যপাল এর আত্মীয় অথবা তার ঘনিষ্ঠ আধিকারিকদের পরিবারের সদস্য শুধু তাই নয় রাজ্যপালকে ‘uncle’ জী বলে সমবোধন করেন মহূয়া মৈত্র।

 

সমপ্রতি রাজ্যপাল রাজ্যের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে দিললী গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সহ একাধিক দপ্ততে যান এবং রাষ্ট্রপতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ অনেক কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে সাক্ষাৎ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করেও পশনো উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে কারন এরকম কোনো ঘটনা কেউ আগে দেখেননি একজন রাজ্যপাল-এর যে রাজ্যের প্রতি কিছু দায়িত্ব আছে, রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতের কারনে সেই কথা হয়তো ভুলেই গেছেন বাংলার বতর্মান রাজ্যপাল

তবে বাংলার রাজ্যপাল দের মধ্যে একজন এমনও ছিলেন যিনি তার কাজের জন্যে চিরকাল সমরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি  ১৯৫১থেকে ১৯৫৬ সাল পযর্ন্ত পূর্ণ সময় বাংলার রাজ্যপাল-এর পদ সামলেছেন তিনি হলেন হরেন্দ্রকুমার মুখার্জি তখনকার দিনে রাজ্যপাল হিসাবে তিনি বেতন পেতেন ৫০০০ টাকা কিন্তু মাত্র ৫০০ টাকা নিজের এবং পরিবারের খরচের জন্য রেখে বাকি পুরো টাকাটাই তিনি বিলিয়ে দিতেন গরীব মানুষ আর টিবি রোগীদের মধ্যে   দুর্গত মানুষদের সেবার জন্যে নিজের অধস্তন সহকারী দের কাছে সাহায্য এর অনুরোধ করতেন তিনি তাদের কাছে নিজেকে সম্বোধন করতেন গরীব রাজ্যপাল বলে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে অনুরোধ করতেন সাহায্য এর জন্যে যাতে আরো কিছু অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো যায় এক বার রাজ্যভবনে সকল কমচারিকে তিনি ডাকলেন চায়ের আসরে সকলে যথাসময়ে চায়ে্র আসরে এসে উপস্থিত হলেন

কিন্তু সকলের মনেই এক আশঙ্কা আসলে মাঝে মধ্যে এ্রকম চায়ের আসর থেকে রাজ্যপাল টাকা তুলতেন সামাজিক উন্নয়নের জন্যে কিনতু এবার চা পরব শেষে সকলকে চমকে দিয়ে হাত জোড় করে উঠে দাড়ালেন রাজ্যপাল এবং সবাইকে  আরো অবাক করে দিয়ে তিনি বললেন "আমি গরীব রাজ্যপাল। আদেশ করতে পারি না। বরং আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোধ আছে আপনারা জানেন যে আমায় টিবি ফান্ডের খাতাপত্রের হিসেব রাখার জন্য একজন লোক রাখতে হয়েছে এবং তাকে মাইনে দিতে হয় আপনারা যদি একটু ভাগাভাগি  করে  হিসেবপত্তর গুলো রাখার দায়িত্ব  নেন, তাহলে মাইনের টাকাটা বেঁচে যায়

ওই টাকা দিয়ে বরং রোগীদের কিছু ফলমূল কিনে দিতে পারি " এই কথা শুনে সকলেরই লজ্জায় মাথা হেট হয়ে গিয়েছিল এমনি ছিলেন এই রাজ্যের তৃতীয় রাজ্যপাল হরেন্দ্রকুমার মুখার্জি তা্র  স্ত্রীর নাম ছিল বঙ্গবালা তাকে রাজভবনে সকলে মা বলে সমমধন করতেন তবে শুধু একজন মানুষ হিসেবেই নয়, একজন ছাত্র হিসেবেও তিনি ছিলেন অসাধারন তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ইংরেজিতে পাশ করা প্রথম ডক্টরেট পরে এই বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন

হরেন্দ্রকুমার মুখার্জি হলেন বাংলার একমাত্র বাঙালি রাজ্যপাল যিনি টানা পাচবছর ধরে এই পদ সামলেছেন হরেন্দ্রকুমার মুখার্জি রাজ্যপাল থাকাকালীন মাঝেমধ্যেই এক বৃদ্ধকে রাজভবনে আসতে দেখা যেত এমনিতে রাজভবনে সকলের প্রবেশের অনুমতি নেই কিনতু তখন সবার জন্যই রাজভবনের দরজা খোলা ছিল বর্তমান রাজ্যপাল এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে যে তিনি রাজভবনে তার গোটা পরিবার কে তুলে এনেছেন সরকারি টাকা নিজের পরিবার এবং প্রিয় মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দেবার অভিযোগ উঠছে জগদীপ ধনকরের বিরুদ্ধে অপরদিকে, রাজ্ভবনে থাকাকালীন খুবই সাধাসিধে জীবনযাপন করতেন

Journalist Name : Abhinaba Poddar

Related News