নতুন বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদে এলেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। সোমবার বিজেপির পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই নতুন নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন সর্বভারতীয় মহাসচিব অরুণ সিং। পাশাপাশি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হলেন দিলীপ ঘোষ। অর্থাৎ মুকুল রায়ের ছেড়ে যাওয়া জায়গায় অভিষিক্ত হলেন দিলীপ।
একুশের
বিধানসভা ভোটে বিজেপির ‘ডবল
ইঞ্জিন’ সরকারের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। ইতিমধ্যে দল ছেড়েছেন চার
বিধায়ক এবং এক সাংসদ।
জেলায় জেলায় দল ছাড়ছে বহু
কর্মী-সমর্থক। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব
পেলেও আত্মবিশ্বাসী সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “বিজেপির
মূল সম্পদ হল বুথে লড়াই
করা কার্যকর্তারা। যাঁরা আদর্শকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেন।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সফল হবে এবং
আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি আগেরবারের
চেয়েও বেশি আসন নিয়ে
কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসবে।”
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি রাজ্য সভাপতি
দিলীপ ঘোষের মেয়াদ শেষ
হওয়ার আগেই তাঁকে সরিয়ে
দেওয়া হল পদ থেকে।
দিলীপ ঘোষের স্থলাভিষিক্ত করা হল
সুকান্ত মজুমদারকে। বাংলরা বিধানসভা
নির্বাচনের পর থেকেই রাজ্য
বিজেপিতে এই বড়সড় রদবদলের
জল্পনা চলছি।শেষপর্যন্ত সুকান্ত মজুমদারকেই
রাজ্য বিজেপির সভাপতি করা
হল। বিজেপি সূত্রে খবর,
বঙ্গ বিজেপির খুবই ঘনিষ্ঠ
হিসেবে পরিচিত সুকান্ত মজুমদার।
তিনিও সঙ্ঘের থেকেই সংগঠনে
আসা নেতা। যে কারণে
তাঁর উপর আস্থা রাখতে
পিছপা হয়নি বিজেপি শীর্ষ
নেতৃত্ব।
কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরেই পদ খোয়ালেন মেদিনীপুরের বিজেপি এমপি। পাশাপাশি বিধানসভা ভোট বিপর্যয়ের পর ভেঙে পড়া গেরুয়া সংগঠনের হাল ফেরাতে অপেক্ষাকৃত যুব মুখের উপরই ভরসা রাখল দিল্লি। অথচ, ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে পর্যন্ত সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যোগ ছিল না পেশায় কলেজ অধ্যাপক সুকান্তবাবুর। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) তরফে বালুরঘাট কেন্দ্রের জন্য বছর বিয়াল্লিশের এই নেতার নাম সুপারিশ করা হয়েছিল।
সুকান্তবাবু
বলেন, কিছু মানুষ ভাবেন যে তাঁরা বিজেপি ছেড়ে চলে গেলে বিজেপি শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু
তাঁদের এই ভাবনা কোনদিনও সত্যি হবে না। সুকান্তবাবু বলেন, পশ্চিমবঙ্গে তালিবানের বিরুদ্ধে
আমাদের লড়াই জারি থাকবে। উনি হুঙ্কারের সুরে বলেন, তৃণমূল যদি কলকাতা সহ গোটা বাংলার
নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে ভোট করানোর অনুমতি দেয়, তাহলে আমরা দেখিয়ে দেব বিজেপি
কী করতে পারে।
এদিন
সুকান্ত মজুমদার বালুরঘাটে নিজের কেন্দ্রে ব্যস্ত ছিলেন। সন্ধ্যা নাগাদ সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার
অফিস থেকে তাঁর কাছে
একটি ফোন আসে। তখনই
সুকান্তবাবুকে নয়া দায়িত্বের কথা
জানানো হয়। যদিও দিলীপ
ঘোষকে এই অপসারণ সংক্রান্ত
খবর আগে দেওয়া হয়নি।
দিলীপ-ঘনিষ্ঠদের দাবি, মেদিনীপুরের এমপিকে কার্যত অপমান করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কারণ, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে
রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পরই দিলীপ ঘোষের
হাত ধরে বাংলায় গেরুয়া
পার্টির উত্থান।