একটি
রায় যা একজন ১০
বছর বয়েসের ছেলেকে জোর করে ওরাল সেক্স করতে বাধ্য করা সত্ত্বেও অভিযুক্ত সোনু কুশওয়াহা নামক এক ব্যক্তির শাস্তির
মেয়াদ কমানো হয়, এবং তার জন্য অনেক ক্ষোভ-চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
যে
আদেশটি একদিনের মধ্যে ল্যান্ডমার্ক সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে ছিল,সেটি এখন শুধুমাত্র রিপোর্ট করা হয়েছে, সেটাই এবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
ঘটনাটি
২০১৬ ঘটে। অভিযুক্ত ব্যক্তিটি ওই বাচ্চা ছেলেটিকে
তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল কাছের একটি মন্দিরে এবং সেখানেই তার ওপর যৌন নির্যাতন করেন। পরে তিনি ছেলেটিকে একটি ২০ টাকার নোট
দিয়ে হুমকি দেন যে এই বিষয়ে
কাউকে কিচ্ছু বললে তার পরিণতি ভালো হবে না।
২০১৮
সালে ট্রায়াল কোর্ট লোকটিকে পকসো (POCSO)(Protection Of
Children From Sexual Offences) আইনের
অধীনে "উত্তেজক অনুপ্রবেশমূলক যৌন নিপীড়নের" জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড
দেওয়া হয়।
লোকটি
আপিল করেছিল এবং গত সপ্তাহে, হাইকোর্টের
বিচারক তার জেলের মেয়াদ কমিয়ে সাত বছর করে দিয়েছিলেন, এবং তিনি বলেন যে আক্রমনটি এতটাও
উত্তেজিত ছিলো না এবং ট্রায়াল
কোর্টের বিবেচনার থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
আইন
বিশেজ্ঞরা কোর্টের রায়কে প্রশ্ন করেছেন, বলেছেন যে পকসো(POCSO) আইনে
এমন অনেকগুলি কারণ আছে যা একটি আক্রমণকে
খুবই উত্তেজিত করে তোলে, যার মধ্যে একটি হলো যদি কোনো ভিক্টিমের বয়স ১২ বছরের কম
হয়। POCSO আইনের ছয় নম্বর ধারা
নয় চার নম্বর ধারায় মধ্যে পড়ছে।ভারতে
এর ক্ষোভ এতটাই তীব্র হয়েছিল যে, মানুষ সোসিয়াল মিডিয়ার সাহায্যে নিজেদের গলার আওয়াজ চারিদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন।
সাম্প্রতিক
এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয়, যে ১০ বছরের
শিশুটির সঙ্গে ওরাল সেক্সের সাজা গুরুতর অপরাধ নয়। একটি মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণ নিয়ে
তোলপাড় গোটা দেশ। বিতর্কিত এই রায় নিয়ে
এবার সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র একটি টুইট করে তিনি হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণের প্রতিক্রিয়া
দেন, “চোখ খুলুন! POCSO আইন শিশুদের রক্ষা করার জন্য তৈরি। এটিকে লঘু করে দেখবেন না।”
সুপ্রিম
কোর্টের বক্তব্য, “ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা এবং ৫০৬ ধারায় সোনু দোষী নয়। এর ফলে ১০
বছরের বদলে তাঁর সাজা কমে দাঁড়ায় সাত বছরে। যদিও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার সাজা বহাল রাখা হয় উচ্চ আদালতেও।
উচ্চ আদালতের সিঙ্গল বেঞ্চের এই পর্যবেক্ষণ দেখে
মানুষজন একেবারে হতবাক হয়ে গেছেন।
ত্বকে
স্পর্শ না করলে যৌন
নির্যাতন নয়, POCSO আইন নিয়ে বম্বে হাইকোর্টের এই রায় অবশ্য
খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। বিচারপতি ইউ
ইউ ললিত, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্ট
এবং বিচারপতি বেলা ত্রিবেদীর বেঞ্চ বম্বে হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেয়। ত্বকে স্পর্শ না করে শিশুদের
যৌন নির্যাতন করা হলে সেক্ষেত্রে POCSO আইন লাগু হবে না, এই সিদ্ধান্ত সঠিক
নয়, স্পষ্ট জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।