#Pravati Sangbad Digital Desk:
এবার আর কোনো গ্রাম নয়, খোদ শহর কলকাতার বুকে এক যুবতি ও তার গোটা পরিবার কে ইসলাম ধর্মে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করলো এক যুবক ও তার পরিবার।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০১২ সালে ওই যুবতি এম এ পাস করে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্ত একটি সংস্থায় যুক্ত হন। কর্মসূত্রে ওই ইসলাম ধর্মাবলম্বী যুবকের সাথে যুবতীর পরিচয় হয়। জানা গেছে, ওই যুবক নিজেও এম কম এবং এম বি এ পাস। ক্রমে তাঁদের সম্পর্ক প্রেমে রূপান্তরিত হয়। কিছুদিন বাদে, ওই যুবক তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। যুবতি অন্য ধর্মের হওয়ার দরুন বিয়ে করতে সম্মত হয়না, তখন তাকে সেই যুবক জানায় সে ধর্ম পরিবর্তন ছাড়াই বিয়ে করতে পারেন। এছাড়া, এও জানায় সেই যুবক ও তার পরিবার নিরামিষভোজী তাই তাঁদের সঙ্গে সেই যুবতি সহজেই জীবন-যাপন করতে পারবেন। পরিবারের অমতে যুবতি ওই যুবককে ভারতীয় বিশেষ আইনে বিবাহ করেন। বিয়ের পরে প্রাথমিক ভাবে দুজনে আলাদা বসবাস করতেন। ওই সময়ে যুবক জানায় তার পরিবার এই বিশেষ আইনের বিয়ে মানেন না কারন, এই বিয়ে তাঁদের ধর্মমত বিরুদ্ধ, তাই তাকে ওই যুবকের পরিবারের সাথে থাকতে গেলে ইসলাম ধর্মমতে বিয়ে করতে হবে এবং নাম পরিবর্তন করতে হবে। যুবতি এই প্রস্তাব যখন নাকচ করেন তখন ওই যুবক জানান, ইসলাম ধর্মমতে বিয়ে হলেও এবং নাম পরিবর্তন হলেও, ওই যুবতিকে ধর্ম পাল্টাতে হবে না। সেই কথামত ইসলাম ধর্মমতে দুজনের বিয়ে হয় এবং ওই যুবতীর ইসলাম ধর্মমত অনুযায়ী পুরনো নাম বদলে নতুন নামকরণ করা হয়।
ওই যুবতীর বয়ান অনুযায়ী, ওই যুবক বিয়ের সময় তার ও তার পরিবারের কাছ থেকে অনেক অর্থ ও সম্পত্তি যৌতুক হিসেবে নিয়েছে। অপরদিকে, বিয়ের পরে সেই যুবতীকে সেই যুবকের পরিবারের সাথে থাকার জন্য নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে। এরপর থেকে, শুরু হয় অস্বাভাবিক অত্যাচার। প্রথমে ওই যুবতীকে বোরখা পরতে বাধ্য করা হয় এবং কালো পর্দা দেওয়া বন্ধ ঘরে রেখে দেওয়া হয়। ক্রমে, তাকে খাটের ওপর খাবার খাওয়া, জোর করে কোরান পরানো ইত্যাদি নানাবিধ অত্যাচার করা শুরু করে ওই যুবক ও তার পরিবার। ওই যুবতি আরও জানান, ওই পরিবার যুবতীকে জোরপূর্বক গো-হত্যা দেখানো হয়, এবং সেই দেখে যুবতি সংজ্ঞা হারালে, ওই যুবকের বাবা নিদান দেন, গো- হত্যার রক্ত দেখে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া মানুষের স্থান জাহান্নামে। এছাড়া ঐ যুবতী এও জানান, ঐ পরিবার তাকে এবং তার পরিবারকে ইসলাম ধর্মে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে, এবং এও জানায় ঐ যুবতীকে নিয়ে ঐ পরিবার হজে যেতে চান, যার জন্য দিনে পাঁচবার নামাজ পরার জন্য বলা হয়। শেষমেশ ওই যুবতি নিরুপায় হয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু, কিছুদিন বাদে ওই যুবক ও তার পরিবার ফের ওই যুবতীকে বাবার বাড়ি থেকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যেতে চান, এবং এও জানান তারা তাঁদের ভুল বুঝতে পেরেছে, আর তারা বদলে গেছে। এই বলে পুনরায় ওই যুবতীকে ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়, কিন্তু কিছুদিন থাকার পরে ফের ওই যুবতীর ওপর অত্যাচার শুরু করা হয় বলে অভিযোগ। ওই যুবতীর কথায়, ওই যুবক ও তার পরিবার তালাক দেওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। ওই যুবতি এও জানিয়েছে, ওই যুবক নিজে ৭০,০০০ টাকা এবং তার বাবা ৫০,০০০ টাকা রোজগার করে।
এই অত্যাচারের মধ্যেই ওই যুবতি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরে। ওই অবস্থাতেও তারা অত্যাচার জারি রাখে। যুবতি জানান, তাঁদের সঙ্গে থাকাকালীন, ওই যুবকের পরিবারের অথবা অন্য কোন পুরুষ বন্ধু তাঁদের বাড়িতে এলে যুবতিকে জোর করে দুর্গন্ধ যুক্ত অস্বাস্থ্যকর শৌচালয়ে আটকে রেখে দিত। এর কারন হিসেবে বলা হত, ইসলাম ধর্মে কোনো পর পুরুষ বাড়ির স্ত্রীকে দেখা অনুচিত। এই অত্যাচারের ফলে, ওই যুবতি ফের তার বাবার বাড়ি চলে আসে। বাবার বাড়ি থাকাকালীন ওই যুবক ও তার পরিবার জানায়, হাঁসপাতালে অনেক পুরুষ চিকিৎসক থাকে তাই সেখানে প্রসব করানো অনুচিত, তাই ওই যুবতীকে প্রসব করতে হলে বাড়িতে করতে হবে। তাঁদের কথা না শুনে ওই যুবতি বাবা এবং মায়ের সাথে নিরাপদ স্থানে থেকে হাঁসপাতালেই শিশুর জন্ম দেন। জন্মের পরে ওই শিশুর রক্তে যুবকের পরিবারের রক্ত আছে বলে যুবতি ও শিশুকে প্রানে মারার হুমকি দেন ওই যুবক ও তার পরিবার। ওই যুবতি ও তার পরিবার তখন নিরুপায় ও ভিত সন্ত্রস্ত হয়ে, কলকাতার এক নামজাদা আইনজীবীর দারস্ত হন সেই আইনজীবী তাঁদের কেসটি নেন এবং পুলিশে এফ আই আর দায়ের করতে বলেন, সেই কথা মত ওই যুবতি ও তার পরিবার যুবক সহ তাঁদের পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
Journalist Name : Tamoghna Mukherjee