ডিসেম্বরের শুরুতেই লেপের আগমন, সাথে খেজুর গুর, তবে এই বারের শীত একটু ব্যাতিক্রমি। লেপ কম্বল তো দুরস্ত গায়ে বেশিক্ষণ মোটা জামা দিয়ে থাকলেই গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। নিম্নচাপের জেরে হিম ভাব কমবে আগেই জানিয়েছিল মৌসম ভবন, তবে নিম্নচাপ যে আর শুধুই নিম্নচাপ থাকল না টা স্পষ্ট। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস নিম্নচাপ পরিণত হবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে। শুক্রবার থেকে বাড়বে তাপমাত্রা, জানিয়েছে হাওয়া অফিস। শীতের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সুদূর থাইল্যান্ড থেকে আসা প্রবাসি ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। এমনিতেই চলতি বছর স্বাভাবিকের তুলনাই বৃষ্টির পরিমান ছিল অনেক খানি বেশি, তার সাথে যোগ দিতে আসছে নতুন ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। ঘণ্টাই ১১৭ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়তে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস, তবে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পরবে না গা ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে তা নিয়ে স্পষ্ট নয় মৌসম ভবন। গা ঘেঁষে পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টির আশঙ্কা নেই এখনই তা স্পষ্ট নয়।
গত ১২ ঘণ্টাই বঙ্গোপসাগরের দিকে এগিয়ে এসেছে নিম্নচাপটি, এবার শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পালা। আলিপুর হাওয়া অফিস সুত্রে খবর আগামি ৪ ডিসেম্বর অন্ধ্র উপকূলে এসে পৌঁছাবে সাইক্লোন। নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তরের শীতল বায়ু বাঁধা প্রাপ্ত হওয়ার কারনে শুক্রবার থেকে বঙ্গে চড়বে পারদ। আপাতত হিমেল পরশ থেকে বঞ্ছিতই থাকবে বঙ্গবাসী। নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার থেকেই আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গে। হাওয়া অফিস সুত্রে বলা হয়েছে হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং উত্তর ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিম মেদিনীপুর এ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির সাথে থাকবে ঝর হাওয়া, ঘণ্টাই ৫০ থেকে ৫৫ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইবে। সময়ের সাথে সাথে বাড়বে ঝোড়ো হাওয়া। আবহাওয়াবিদদের মতে এই সময় বঙ্গোপসাগরের ওপর ঘূর্ণাবত্ত সৃষ্টি হওয়া খুব একটা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। সেপ্টেম্বরের শেষে পূজার আগে আগেই ব্যাপক বৃষ্টি দেখা গিয়েছিল দক্ষিণের জেলা গুলিতে, যার জেরে বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল বহু মানুষ, নষ্ট হয়েছিল বিঘের পর বিঘে ফসল, যার জেরে এমনিতেই সঙ্কটে দক্ষিণবঙ্গের চাষিরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে না দিতেই একের পর এক নিম্নচাপ চাষিদের রাতের ঘুম কেরছে। ডিসেম্বরের শুরুতেই আবার এক পরিস্থিতির জন্য দুশ্চিন্তার প্রহর গুনছে বঙ্গবাসী। প্রশাসনের তরফ থেকে এই কয়দিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকবে পুলিশ প্রশাসন এবং উপকুল রক্ষা বাহিনী।
উড়িষ্যার উপকূলবর্তী অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বলে জানা গিয়েছে, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বেশ কিছু অঞ্চলে। আগামি ৫ই ডিসেম্বর দক্ষিণবঙ্গ এবং উড়িষ্যার উপকূলবর্তী কিছু অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস করা হয়েছে হাওয়া অফিস তরফ থেকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই নিম্নচাপের সাথেই বঙ্গে ঢুকবে শীত। দক্ষিণের তাপমাত্রার বাড়বাড়ন্ত হলেও উত্তরে কিন্তু বেশ মনোরম পরিবেশ। নামতে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গের পারদ। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, শিলিগুড়ি থেকে শুরু করে বাঙালির দ্বিতীয় বাড়ি দার্জিলিং এ রীতিমত হাড় কাঁপাচ্ছে শীতল হাওয়া। উত্তরের আকাশ পরিষ্কার থাকার কারণে তাপমাত্রা আরও নীচের দিকে নাম্বে বলে জানিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস।