শিল্প প্রেরণার আঁতুড় ঘর কুমোরটুলি

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

কৃষ্ণনগর কে বাংলার মৃৎশিল্পীর পিঠস্থান বলা হলেও যেন পুজোর  আগে থেকেই  উত্তর কলকাতার কুমোরটুলি হয়ে ওঠে মৃৎশিল্পীদের শিল্প মন্দির। কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে ১৩ পার্বন। তাই সারা বছর নিজের ছন্দে  চলতে থাকলেও পূজোর ঠিক আগে যেন তিলোত্তমার প্রাণ উৎস হয়ে ওঠে এই কুমোর পাড়া। ‘পুজো আসছে’ এই খবর অনেক মাস আগেই যেন কুমোর পাড়া বিশ্ব জননীকে আহ্বান করে।  রথের দড়িতে টান পড়ার সাথে সাথে এই জায়গার ব্যস্ততা বেড়ে ওঠে। তারই সাথে ঠিক এই সময়ই এই শিল্প মন্দিরে ভিড় করে আরো অন্যান্য শিল্প উৎসুক মানুষেরা যারা এ কুমরপাড়ার শিল্প প্রস্তুতি দেখে নিজেকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। এবছর, আমরাও চলে গেলাম এই প্রস্তুতি পর্বের সাক্ষী হতে। যেদিকেই চোখ যায় সেই দিকেই তুলির টানে আস্তে আস্তে মা চিন্ময়ী হয়ে উঠছেন মৃন্ময়ী। তাই কুমোর পাড়ার অলিগলিতে আমরা যখন মায়ের প্রতিমা প্রস্তুতি দেখছিলাম সেই সময়ে আমাদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল আরেক শিল্পীর। না না তিনি এই কুমোর পাড়ার মৃৎশিল্পী নন। তিনি একজন চিত্রশিল্পী। নাম আয়ুশ, যিনি এই কুমোর পাড়ার জাদুকরদের কাজ নিজের তুলি এবং রঙের মাধ্যমে খাতায় তুলে ধরছিলেন। তিনি আমাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানালেন , তিনি আসলে শিয়ালদার বাসিন্দা এবংএকাডেমী অফ ফাইন আর্টস এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। কুমোর পাড়ায় মায়ের প্রতিমা নির্মাণে ব্যস্ত সকল শিল্পীদের হাত ধরে নিজের আকার মধ্যে তুলে ধরতে চেয়েছেন তাদের ব্যস্ততা। তাদের এই ব্যস্ততম জীবনকে তিনি ডকুমেন্ট্রির মাধ্যমে তুলে ধরার  ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তার মতে তিনি নিজে একজন শিল্পী হয়ে এই সকল কুমরপাড়া শিল্পীদের কাজ দেখে খুবই অনুপ্রাণিত, তাই তিনি তাদের এই প্রতিমা তৈরি কে নিজের মতো করে তুলে ধরতে চেয়েছেন তার আসল কাজে।। যখন আমরা এই এক শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে মায়ের নির্মাণ কার্য দেখছিলাম ঠিক সেই সময় আমাদের দেখা হয় এই কুমোর পাড়া থেকে অনুপ্রাণিত আরেক শিল্পীর। আগেরবারের মতো তিনি খাতার মধ্যে কুমোর পাড়া কে তুলে ধরেনি তিনি তুলে ধরেছেন কুমোর পাড়াকে তার ক্যামেরার মধ্যে। আমরা যখন তার সঙ্গে কথা বলি তখন জানতে পারি তিনি আসলে কলকাতার বাসিন্দা নন। তিনি বাংলার মৃৎশিল্পের পিঠস্থান কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা। তিনি পেশাগতভাবে একজন ফটোগ্রাফার না হলেও তিনি তিলোত্তমার বুকে ছুটে আসেন মায়ের এই গঠন কার্যের ঠিক আগের সময়। তিনি বললেন তাকে যেন এই তিলোত্তমার বুকে টেনে আনে এই উত্তর কলকাতার  বাঙালিয়ানা এবং আভিজাত্ত যা ক্রমশই  বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। তিনি এও বলেন যে কুমোর পাড়া  তাকে সাহায্য করে জীবনের সৌন্দর্য বুঝতে। তিনি আমাদের সঙ্গে তার একটি ছবির অভিজ্ঞতা ভাগ করে বলেন, এখানে তিনটি প্রজন্ম একে অপরের সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করে। এখানে যেন সকল শিল্পীর মধ্যেই বাস করছেন স্বয়ং মা দুর্গা যা তিনি তার এক ছবির মাধ্যমেও প্রকাশ করেছিলেন। যেখানে একটি বৃদ্ধা মহিলা মায়ের গায়ে রং করছিল এবং তার পিছন দিয়ে যখন সূর্যের আলোটি আসে তখন যেন সাক্ষাৎ তাকেই মা দুর্গার রূপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। যেখানে মা দুর্গার দশটি হাত তার পাশ দিয়ে বেরিয়ে তাকে যে স্বয়ং মা দুর্গার আরেকটি রূপ বানিয়ে তুলেছিলো।

#Source: online/Digital/Social Media News   # Representative Image

Journalist Name : আশীস রায়

Related News