হাইড্রোপলিটিক্স

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আমরা ছোটবেলা থেকে শুনি আসছি জলের অপর নাম জীবন। কিন্তু এখন আরও একটা কথা প্রযোজ্য, জলের অপর নাম যুদ্ধ !যারা ভেবে থাকেন জল শুধু মাত্র পান করা ,গৃহস্থালির কাজ, দৈনন্দিন ব্যবহারে লেগে থাকে তারা কিন্তু ভুল ভাবছেন্ জল কিন্তু এক ছোট্ট গন্ডীর মধ্যে আবদ্ধ নেই ।এখন সামরিক ক্ষেত্রেও বড় বড় অস্ত্রের পাশাপাশি জল অস্ত্র ও বড় অস্ত্র ।কারণ এখন রাজনীতির মধ্যে চলে এসেছে সম্পূর্ণ একটি নতুন টার্ম, হাইড্রোপলিটিক্স ।জল নিয়েও রাজনীতি? হবে নাই বা কেন, পাকিস্তানের মতো দেশ যার সাথে ভারতের শত্রুতা বা বাংলাদেশ যাকে খোদ চীন সাপোর্ট করে তারাও এই জলের জন্য নির্ভর করে ভারতের উপর। প্রাকৃতিকভাবেই ভারত জলে পরিপূর্ণ একটি দেশ ।ভারতের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে অসংখ্য নদী উপনদী ।ভারতের প্রায় প্রতিটি রাজ্য ই সবুজ ও শস্য শ্যামলা । ভারত বাংলাদেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে মোট জনসংখ্যার তুলনায় জলের অনুপাত ০.৩৮ শতাংশ। যেখানে জলের অনুপাত হওয়ার কথা ১.১৬ শতাংশ। তাই জলের ঘাটতি সারা বছরই ।ভারতের লাগোয়া বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের পর দেখা যায় ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের উপর দিয়ে একত্রে ৫৪ টি নদী বয়ে গেছে ।এর ফলে জলের বন্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের গঙ্গা চুক্তি হয় ।২০১৯ এ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে ভারত পাবে ১.৮২ কিউসেক জল। এরফলে ত্রিপুরার মানুষ খুবই উপকৃত হবে এবং এর বদলে ভারতকে নিজের খরচে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সু সম্পর্ক বজায় রাখতে মৈত্রী সেতু গড়ে তুলতে হবে। এছাড়াও নেপালের সাথেও ভারতের একটি সুন্দর জলসম্পর্ক রয়েছে। ভারতের জল দিয়ে নেপাল এর 3লক্ষ হেক্টর জমিতে চাষ হয়।তার বদলে নেপাল এর ৬ হাজার নদী থেকে ৮৩ হাজার মেগাওয়াট হাইড্রো পাওয়ার উৎপন্ন হয় যা ভারতে বিদ্যুতের ঘাটতি মেটায়। আবার নেপাল ভারতের একটি বৃহৎ হাইড্রো পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি হচ্ছে।পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের চিরশত্রুতা থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান কখনোই সিন্ধু চুক্তির বাইরে আসে না। পুলওয়ামা কাণ্ডের পর ভারত পাকিস্তান কে জল দেবে না বলে দিয়েছিল। ১৯৪৮ সালে ভারত পাকিস্তানকে জল দেওয়া বন্ধ করে দেয় তখন পাকিস্তান বাধ্য হয়ে জল চুক্তি করে।ফলে ভারত জল পাবে তিনটি নদী, রবি ,বায়াশ এবং সুতলজ থেকে এবং পাকিস্তান সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব থেকে জল ব্যবহার করতে পারবে। যদি ভারত পাকিস্তানের সাথে এই জলচুক্তি ভেঙে দেয় তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে এটি। ভারতের ব্রহ্মপুত্র নদী চীনে ইয়ারলাঙ জাঙবো নামে পরিচিত। এই‌ নদীর ওপর চিন তৈরি করছে এক বিশাল ড্যাম।বাংলাদেশ ও ভারত নিচের দিকে ২ টি দেশ হওয়ায় চিনে র তৈরি এই ড্যাম এর ফলে ভারতেও বাংলাদেশে জলের ওপর প্রভাব পড়তে পারে ।কিন্তু ভারত ও হাত গুটিয়ে বসে নেই ।ভারতের শুরু হয়ে গিয়েছে হাইড্রো পাওয়ার এর কাজ।অরুণাচল প্রদেশ ১০ হাজার মেগা ওয়াট এর রিজার্ভার ।যা অনেক বেশি পরিমাণে শক্তির উৎপন্ন করতে পারবে ।তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছে বর্তমানে না হলেও ভবিষ্যৎ এ কখনো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধলে তার অন্যতম কারণ হতে পারে এই হাইড্রোপলিটিক্স।।

Journalist Name : Srimita Sasmal

Tags: