ভারতের শেষ রেল স্টেশন

banner

#PRAVATI SANGBAD DIGITAL DESK:

বিদেশ ভ্রমণের কথা উঠলে প্রথমেই মাথায় আসে বিমানের কথা। কিন্তু আপনি কি জানেন, আমাদের দেশে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখান থেকে পায়ে হেঁটেই বিদেশ চলে যাওয়া যাবে। সীমান্ত অঞ্চলে গেলেই প্রতিবেশী দেশগুলিতে চলে যাওয়া যাবে একেবারে পায়ে হেঁটে। এর মধ্যে কিছু দেশে যেতে পাসপোর্ট-ভিসার প্রয়োজন রয়েছে। আবার কিছু দেশে এর কোনওটারই দরকার নেই।নেপালের যেমন তিন দিকে ভারত অবস্থান করে। ট্রেনে (Indian Railways) করে নেপাল যেতে হলে বিহারের আরাইয়া জেলার যোগবানী স্টেশনে নামতে হবে। তারপর পায়ে হেঁটেই পৌঁছে যাওয়া যাবে নেপালে। তেমনই পশ্চিমবঙ্গেও এমন কতগুলি স্টেশন রয়েছে যেখান থেকে পায়ে হেঁটেই বাংলাদেশে যাওয়া সম্ভব। এমনই একটি স্টেশন হল সিঙ্গাবাদ। 

এই স্টেশনটি পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার হাবিবপুর এলাকায় পড়ে। জানলে অবাক হবেন যে,সিঙ্গাবাদ  থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই রয়েছে বাংলাদেশ। এবং চাইলে মানুষ মানুষ পায়ে হেঁটে পৌঁছে যেতে পারে বাংলাদেশেও। এর পর ভারতে আর কোনও রেল স্টেশন নেই। এটি আসলে খুব ছোট একটি রেলওয়ে স্টেশন। এখানে কোনও তাড়াহুড়ো নেই। সময় যেন একেবারে থমকে গেছে এই প্রান্তে এসে।

স্বাধীনতার পর যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্তি হয় ঠিক তারপর স্টেশনটি জনশূন্য হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ১৯৭৮ সাল থেকে এই রুটে পণ্যবাহী ট্রেনের চলাচল শুরু হয়েছিল। এই রেলগাড়ি  গুলি সাধারণত ভারত থেকে বাংলাদেশে যাতায়াত করত। এরপর ২০১১ সালের নভেম্বরে পুরানো চুক্তিটি সংশোধন করা হয়েছিল এবং নেপালকে এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যার পর এখন নেপালগামী ট্রেনও এই স্টেশন থেকে যেতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত ,নেপালের খাদ্য রপ্তানি হয় বাংলাদেশ থেকে বড় পরিসরে। তাদের বহনকারী পণ্যবাহী ট্রেনের চালান রোহনপুর-সিংবাদ ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে আসে। বাংলাদেশের প্রথম স্টেশন হলো রোহনপুর। এই সিঙ্গাবাদ স্টেশনে কোনও যাত্রীবাহী ট্রেনই থামে না

এই সিঙ্গাবাদ স্টেশনটি মূলত কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে ট্রেন সংযোগের জন্য ব্যবহৃত হত। যেহেতু এই স্টেশনটি প্রাক স্বাধীনতার সময়কার, তাই মহাত্মা গান্ধী এবং সুভাষচন্দ্র বসুও ঢাকায় যাওয়ার জন্য এই পথটি বেশ কয়েক বার ব্যবহার করেছিলেন। একটা সময় ছিল যখন দার্জিলিং মেইলের মতো ট্রেনও এখান দিয়ে যাতায়াত করত। কিন্তু এখন পরিস্থিতি সেই রকম নেই। এখন শুধু পণ্যবাহী ট্রেনই এখান দিয়ে যায়।
বাহ্যিক দিক থেকে এই স্টেশনটি ভীষণ অদ্ভুত এবং পুরনো। স্টেশনের সব কিছুই ব্রিটিশ আমলের। এই স্টেশনে রাখা টেলিফোনটি এমন কি এই স্টেশন থেকে যে টিকিট আপনি কাটবেন সেটিও ব্রিটিশ আমলের। সিগন্যালের জন্য এখনো পর্যন্ত হ্যান্ড গিয়ার ব্যবহার করা হয় এই স্টেশনে। স্টেশনে কোন যাত্রীবাহী ট্রেন থামে না বলে এই স্টেশনের টিকিট কাউন্টার বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে।  এখানে শুধু সেই পণ্যবাহী ট্রেনগুলো থামে, যেগুলিকে রোহনপুর হয়ে বাংলাদেশে যেতে হয়। এই ট্রেনগুলি  অনেকসময়  এখানে থামে এবং সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করে।বর্তমানে মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ওয়ান এই দুটি ট্রেন এই রুট দিয়ে যাতায়াত করে।

Journalist Name : Susmita Das

Related News