আবাস যোজনা নিয়ে আজ নবান্নে জরুরি বৈঠক

banner

#PRAVATI SANGBAD DIGITAL DESK:

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে আজ, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে শুরু হয়েছে জরুরি বৈঠক। গতকাল এই বৈঠক ডেকেছেন মুখ্য সচিব। নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠকে সব জেলার জেলাশাসকদের পাশাপাশি অতিরিক্ত জেলাশাসক, সংশ্লিষ্ট দফতরের জেলার আধিকারিকদেরও উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই বেশ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। আবাস যোজনার অন্তর্গত তালিকা নিয়ে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে কয়েকটি জায়গায়। এই সংক্রান্তই আজকের এই বৈঠকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিতে পারেন মুখ্য সচিব, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি এই বৈঠক থেকে সমীক্ষা করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে তা নিয়েও কিছু নির্দেশ দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। 

আগেই পুরুলিয়া জেলার শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় ঠাঁই পাননি বেশির ভাগ যোগ্য ব্যক্তি অথচ ওই তালিকায় রয়েছে আর্থিক ভাবে সচ্ছল বা পাকা বাড়ির মালিক। আবাস যোজনায় কারা বাড়ি পাবেন, তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে কার্যত সেই বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। 'চলো গ্রামে যাই' কর্মসূচীতে আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠে এসেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে বিধেঁছে বিরোধীরা। নানা জায়গা থেকে লাগাতার অনিয়মের অভিযোগ উঠে আসছে। কেন্দ্রীয় সরকার ২৪ নভেম্বর রাজ্যকে ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৪৮ বাড়ি তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। আবাস তথ্য ভাণ্ডার থেকে উপভোক্তাদের চিহ্নিত করতে হবে বলে কেন্দ্রীয় গ্রামান্নোয়ন মন্ত্রকের চিঠিতে বলা হয়েছে। 

ইতিমধ্যে রাজ্যকে কড়া বার্তা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামান্নোয়ন মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় গ্রামান্নোয়ন মন্ত্রক চিঠির মাধ্যমে রাজ্যকে জানায়, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে হবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উপভোক্তাদের চূড়ান্ত তালিকা। চূড়ান্ত তালিকা সঠিক সময়ের মধ্যে শেষ না করতে পারলে হাতছাড়া হতে পারে রাজ্যের কোটা। গত শুক্রবারই এই চিঠি পঞ্চায়েত দফতরে এসে পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় গ্রামান্নোয়ন মন্ত্রকের চিঠিতে বলা হয়েছে, "গ্রামীণ গরীব মানুষের আবাসন সমস্যার সমাধানে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। সারা দেশে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৫ লক্ষ বাড়ি নির্মাণের কথা। ইতিমধ্যেই ২ কোটি ১০ লক্ষ বাড়ি  তৈরি হয়ে গিয়েছে। ৩৮ লক্ষ বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র চাইছে রাজ্যগুলি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দ্রুত প্রকল্পগুলি রূপায়ণ করুক। সেজন্য উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির লক্ষ্যমাত্র ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে যে সব রাজ্য তাদের তালিকায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না করতে পারলে যে অংশটা বাকি থাকবে তা অন্য রাজ্যকে বরাদ্দ করা হবে"।

আবাস যোজনা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জানানোর জন্য অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রতিটি প্রশাসনিক অফিসের সামনে একটি করে ‘অভিযোগ বাক্স’ থাকবে। সেই বাক্সে আবাস যোজনা সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ জানাতে পারবে সকলেই। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ৭৩৭ টি অভিযোগ জমা পড়েছে। সব অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে জানান জেলাশাসক। জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পূর্ব বর্ধমান জেলায় ২ লাখ ৩০ হাজার জনের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। সেই তালিকা নতুন করে তিনটি স্তরে যাচাই করা হচ্ছে। প্রথমে, বিডিও ও মহকুমাশাসক স্তরে এবং সর্বশেষে এডিএম স্তরে। প্রশাসনকে খোঁচা দিয়ে বিজেপির জেলা সহসভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এবার থেকে প্রতিদিন এত অভিযোগ জমা পড়বে যে প্রশাসনিক আধিকারিকরা নাজেহাল হয়ে পড়বেন। কারণ, গরিব মানুষজনের নাম আবাস যোজনার তালিকায় নেই। যাঁরা প্রকৃতই এই যোজনার সুবিধা পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের নাম শাসক দলের নেতারা বাদ দিয়েছে। বদলে নিজেদের নাম তালিকায় নথিভুক্ত করেছেন। এই দাবি আমরা প্রথম থেকেই করে আসছি। তখন তৃণমূল কান দেয়নি। এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে, তাই বক্স করছে প্রশাসনিক দফতরে।"

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির টাকা কিস্তি মাফিক সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠাবে। উপভোক্তাদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরির সময় তাদের আধার কার্ড সংযোগ বা লিঙ্ক করাতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে, কেন্দ্রীয় গ্রামান্নোয়ন মন্ত্রকের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গয়া প্রসাদ সোমবারই রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিবকে চিঠি দিয়ে এমনটা জানিয়ে দিয়েছেন।

Journalist Name : Puja Adhikary

Related News