ফাটা ঠোঁটের সমস্যার ঘরোয়া সমাধান

banner

#Pravati Sangbad digital Desk:

শীতের ঠান্ডা আমেজ শুরু হয়েছে চারদিকে । কমেছে বাতাসের আর্দ্রতা । শীতে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ত্বক ও চুলের পাশাপাশি ঠোঁটও ফেটে যায়। শীতে ত্বকের চেয়েও বেশি রুক্ষ হয়ে ওঠে ঠোঁট । শুষ্ক ও ফাটা ঠোঁট শুধু প্রাণবন্ত হাসির অন্তরায় । কখনো কখনো যন্ত্রণা কারণও । কেননা, কারও কারও ঠোঁট ফেটে রক্তক্ষরণ হয় । কিছু নিয়ম মেনে চললে মুক্তি পেতে পারেন এই সমস্যা থেকে । জেনে নিন এই সমস্যার ঘরোয়া উপায়-

 মধু  ও পেট্রোলিয়াম জেলি  -আমরা সকলেই জানি যে মধু খুবই ভালো অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াজাত পদার্থ। এবং ভ্যাসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ত্বককে কোমল করতে সাহায্য করে, ত্বকের শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে রোধ করে। এই দুটো জিনিস যদি একসঙ্গে ঠোঁটে ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা ঠোঁটের জন্য উপকারীও হবে আবার ঠোঁট ফাটার সমস্যা থেকেও রেহাই মিলবে। আসলে এই দুটি উপাদানই প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজারের কাজ করে। কখনও দুটি একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করেছেন? ফাটা ঠোঁটের জন্য বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন এই চটজলদি সমাধান। প্রথমে ঠোঁটে মধু লাগিয়ে নিন। একটা পাতলা স্তর বা আস্তরণ তৈরি হবে। তার উপর দিয়ে ভেসলিনের একটা স্তর তৈরি করুন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট এই দুই উপাদান ফাটা ঠোঁটে লাগিয়ে রাখতে হবে। এবার টিস্যু বা পাতলা কাপড়ের সাহায্যে ঠোঁটের ওই আস্তরণ তুলে ফেলুন। প্রতিদিন একবার করে এই দুই উপাদান ঠোঁটে লাগান। এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার ফাটা ঠোঁটের সমস্যার ম্যাজিকের মতো সমাধান হবে।

গ্রিন টি ব্যাগ -গ্রিন টি-র মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ফাটা ঠোঁটের সমস্যার সমাধানে এটি অত্যন্ত জরুরি উপাদান। ত্বকের শুষ্কতা দূর করতেও  গ্রিন টি ব্যাগ অত্যন্ত উপকারী।  প্রথমে একটি গ্রিন টি ব্যাগ, এক কাপ গরম জল  নিন ।  গরম জলে গ্রিন টি ব্যাগটি কয়েক মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। এরপর ওই টি ব্যাগটি সরাসরি ফাটা ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। কয়েক মিনিট রেখে সাধারণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন একবার করে এটা করতে পারেন। ফাটা ঠোঁটের সমস্যা মিটবে। 

 শশা-গরম কালে শশা রূপচর্চার ক্ষেত্রে আপনার প্রিয় বন্ধু হতে পারে। শুষ্ক এবং ফাটা ঠোঁটের সমস্যায় এর থেকে ভাল প্রাকৃতিক ওষুধ আর হয় না। ত্বককে নরম এবং কোমল করে তুলতেও এর জুরি মেলা ভার।  প্রথমে  টুকরো করে কেটে নেওয়া ফ্রেশ শশা  লাগবে । এরপর দুই থেকে তিন মিনিট ধরে শশার টুকরো ঠোঁটের উপর ঘষতে থাকুন।  অন্যদিকে আরেকটি পাত্রে  শসা গ্রেট করে   রস  বার করে রাখুন। কিছুক্ষণ পরে  ওই আগে থেকে তৈরি করে রাখা শশার রস ঠোঁটে লাগিয়ে রেখে দিন অন্তত ১০ মিনিট। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন অন্তত একবার করে এই টোটকা ব্যবহার করলেই দূর হবে ফাটা ঠোঁটের সমস্যা।

নারকেল তেল -নারকেল তেল প্রাকৃতিক ভাবে ময়শ্চারাইজারের কাজ করে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যা ত্বককে আর্দ্র করে। ঠোঁটকে নরম ও কোমন করতে সাহায়্য করে। এর মধ্যে টিট্রি অয়েল বা গ্রাপিসড অয়েল যোগ করে নেওয়া যায়। যা ফাটা ঠোঁটের উপকার করবে। ফাটা ঠোঁট থেকে অনেক সময় সংক্রমণের ভয় থাকে। এ সব প্রাকৃতিক তেল সেই সব সংক্রমণকেও রোধ করতে পারে। প্রথমে এক চা চামচ নারকেল তেল,   টিট্রি  ওয়েল এক চা চামচ   ও এক চামচ চিনি নিয়ে নিন । এবার  এক  চা চামচ নারকেল তেল   ও এক চা  চামচ টিট্রি অয়েল ,  এক  চা চামচ চিনি দিয়ে বানিয়ে নিন লিপ স্ক্রাব।  দু মিনিট মতো  ঠোঁট স্ক্রাব করে ধুয়ে ফেলুন। এতে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর হবে 

অ্যালোভেরার-অ্যালোভেরার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ত্বকের মরা কোষ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকে ঠাণ্ডা ভাবও বজায় রাখতে সাহায্য করে অ্যালোভেরা।  প্রথমে অ্যালোভেরা পাতা জোগাড় করতে হবে।  এরপর অ্যালোভেরার পাতা কেটে নিয়ে তার ভিতরে থাকা জেল বের করে একটি পাত্রে রাখতে হবে। ওই জেল রাতে ঘুমতো যাওয়ার আগে ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। একটি পাত্রে ওই জেল  স্টোর করে  ফ্রিজে রাখতে পারেন। প্রতিদিন রাতেই এটা ব্যবহার করলে ফাটা ঠোঁটের সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি মিলবে। 

প্রচুর পরিমাণে জল খান। এতে করে ঠোঁটের ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকবে আর আপনি ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া থেকে মুক্তি পাবেন।

 এছাড়াও যাদের ঠোঁট ভীষণ শুকিয়ে যায় তাদের একটি বদ অভ্যাস তৈরি হয়। যা হল খানিকক্ষণ পর পর জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজানো। অনেকে ভাবেন এটি করলে ঠোঁট শুকোবে না। কিন্তু এতে ঠোঁট আরও বেশি শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তাই এই কাজটি থেকে বিরত থাকুন।

Journalist Name : Susmita Das

Related News