#Pravati Sangbad Digital Desk:
শীতের শাকসবজির ভিড়ে বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে মিষ্টি আলু। এটি এমন একটি খাবার যা সকালে, দুপুরে কিংবা বিকালেও খাওয়া যায়। মিষ্টি আলু শুধু খেতেই শুধু সুস্বাদু নয়, এর উপকারিতাও অনেক।বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের সময় কাশি-সর্দি-জ্বরসহ নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে তাই এই সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করা খুবই জরুরি। আবহাওয়া ও আপনি কোন অঞ্চলে আছেন তার ওপর নির্ভর করে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। শীতের এই সময়ে আমাদের দেশে প্রচুর মিষ্টি আলু পাওয়া যায়। লালচে বেগুনি রঙের এই আলু দিয়ে সবজির বিভিন্ন ধরন রান্না করা যায়। কেউ সেদ্ধ করে, কেউ পুড়িয়ে খেতেও পছন্দ করেন। কিন্তু মিষ্টি আলু কি সত্যি উপকারী? মিষ্টি স্বাদের কারণে কি এটি অল্প করে খেতে হবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক মিষ্টি আলুর পুষ্টি, স্বাস্থ্য উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন খাবার খুঁজছেন? মিষ্টি আলু হতে পারে সহজ সমাধান। মিষ্টি আলুতে থাকা ক্যারোটিনয়েড এবং অ্যান্থোসায়ানিন নামক দুটি উপাদান আমাদের শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালের হাত থেকে বাঁচায় এবং সেইসঙ্গে বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এটি আমাদের ত্বক ও চুলের জন্যও উপকারী। পুষ্টিবিদ রূপালী দত্ত বলেন, ‘মিষ্টি আলুর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতা শুধুমাত্র এর ক্যারোটিনয়েডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি অ্যান্থোসায়ানিনের একটি বড় উৎস, যা বেগুনি রঙের ফল ও সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।’
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
মিষ্টি স্বাদের বলে ডায়াবেটিস রোগীরা মিষ্টি আলু এড়িয়ে যাবেন, এমনটাই মনে হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। মিষ্টি আলুর গ্লাসেমিক ইনডেক্স কম থাকে এবং থাকে প্রচুর ফাইবার। এর স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট রক্ত প্রবাহে সুগারের মাত্রাও ধীর করে দেয়। আমেরিকান ডায়াবেটিস সোসাইটির তথ্য অনুসারে, ‘ডায়াবেটিসের জন্য মিষ্টি আলু এক ধরনের সুপার ফুড। স্টার্চি এই সবজি ভিটামিন এ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। সেইসঙ্গে এতে আরও আছে ভিটামিন সি এবং পটাসিয়াম।’
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু আমাদের চোখ ভালো রাখার ক্ষেত্রেও সমান কার্যকরী। এই আলুতে থাকে বিটা ক্যারোটিন। এই উপাদান আমাদের চোখকে সূর্যের অতিবেগুনী আলোকরশ্মি থেকে রক্ষা করে। তাই দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে নিয়মিত মিষ্টি আলু খেতে পারেন।
হজমে সহায়ক
মিষ্টি আলু নিয়মিত খেলে হজমের সমস্যা দ্রুত সেরে যায়। রুজুতা দিবাকর বলেন, ‘মিষ্টি আলুতে থাকা মিনারেল ও ভিটামিন বি পেট ফাঁপা, অ্যাসিডিটি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।’ হজম সংক্রান্ত নানা সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদের জন্য অন্যতম কার্যকরী খাবার হলো এই মিষ্টি আলু।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
যারা ওজন কমাতে চাইছেন, তাদের জন্য উপকারী একটি খাবার হতে পারে মিষ্টি আলু। এই সবজিতে থাকে খুবই অল্প ক্যালোরি এবং প্রচুর ফাইবার। যে কারণে এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখলেও ওজন বৃদ্ধির ভয় থাকে না। এটি নাস্তার পদ হিসেবে চমৎকার হতে পারে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে
মিষ্টি আলুতে থাকা ক্যারোটিনয়েড ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। বেগুনি মিষ্টি আলুতে অ্যান্থোসায়ানিন নামক এক ধরনের প্রাকৃতিক যৌগ বেশি থাকে। এ উপাদানটি শরীরে কোলোরেক্টাল ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে
গবেষণায় দেখা গেছে,মিষ্টি আলু শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। এর ফলে মিষ্টি আলু খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ম্যাকুলার ডিজেনারেশন
মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ থাকায় ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের মতো চোখের রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে, যা দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের সবচেয়ে সাধারণ কারণ।
স্থূলতা কমায়
মিষ্টি আলু আপনার শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং চর্বি কোষগুলোর বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। যার ফলে এই খাবারটি ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
Journalist Name : Sampriti Gole