#Pravati Sangbad Digital Desk:
মধুর গুণের কোন শেষ নেই। মধু রূপচর্চাতে, রান্নাবান্নাতে ও স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে খুব বেশি কার্যকরী। রূপচর্চায় যেসব পন্য ব্যবহার করা হয় তার মাঝে মধু খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটা পণ্য। প্রাচীনকাল থেকেই মধু আমাদের বিভিন্ন কাজে লাগে।
শুষ্ক ত্বকে ময়েশ্চারাইজার জোগাতে মধু কার্যকর এক উপাদান। শীতে ত্বকের যত্নে মধু ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ।
শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে খুব সহজেই। শুষ্কতা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এ জন্য ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। প্রাকৃতিক উপাদান মধু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। ত্বকে ময়েশ্চারাইজার জোগাতে মধু এতটাই উপকারী যে তৈলাক্ত ত্বকে মধু ব্যবহার করতে নিষেধ করে থাকেন রূপবিশেষজ্ঞরা। কেননা তাতে ত্বকের তৈলাক্ততা আরো বাড়ে। এতে ত্বকে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। মধু শুধু ত্বকের শুষ্কতাই দূর করে না, ডার্ক ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। নিয়মিত মধু ব্যবহারে ত্বক হয়ে ওঠে নরম ও কোমল। ত্বকে মধু ব্যবহারের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। খাঁটি মধুর পুরোটাই প্রাকৃতিক। যাঁরা ত্বকে টান টান ভাব আনতে চান তাঁরাও নিয়মিত মধু ব্যবহার করতে পারেন। তাই বলে প্রতিদিন কিন্তু ত্বকে মধু ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। প্রতিদিন ব্যবহারে বরং উল্টো ফল হতে পারে।
সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ত্বকে মধু ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন প্যাকের মধ্যে যেমন মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন তেমনি সরাসরিও ব্যবহার করা যায়। সকালে ত্বকে খাঁটি মধু মেখে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক পরিষ্কারের পাশাপাশি কোমল হবে। ত্বকে টান টান ভাব চলে আসবে।
আবার ব্রণ হলে সবারই দুশ্চিন্তার কোন সীমা থাকে না। মধু মূলত অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে। তাই ত্বকের যেকোন সমস্যায় বা ত্বকে কোন ধরনের আঘাত লাগলে মধু তা সারিয়ে তুলবে। মধু মৃত কোষ তুলে ফেলতে সাহায্য করে ও ত্বকের গভীরে জমে থাকা ময়লা তুলে আনতে সাহায্য করে। মধু টিস্যু পুর্নগঠন করতেও সাহায্য করে। মধু ত্বকের লালচে ভাব দূর করে। মুখের কালো দাগ দূর করে ও মধু ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায়।
ত্বকের ওপর মধু ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত মধু পান করতে পারেন। এটা বরং আরো ভালো ফল এনে দেবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক চামচ মধু হাতের তালুতে নিয়ে চেটে খেতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় কুসুম গরম পানিতে এক চামচ মধু এবং একটি লেবুর রস মিশিয়ে পান করা। এতে কণ্ঠ পরিষ্কার থাকে। শরীরের জন্যও উপকার দেয়। লেবু-মধু পানি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কাটতে সহায়তা করে। এটাও কিন্তু একদিক দিয়ে আমাদের ত্বকের জন্যই উপকার বয়ে আনে। তবে যাঁরা ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন তাঁদের মধু পান করার প্রয়োজন নেই।
মধু বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। মধু ব্যবহারের ব্যবহারবিধি-
১। গোসলের সময় মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। ২ টেবিল চামচ মধু ১ কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে এক বালতি পানিতে ঢেলে দিতে হবে সেই মধু মিশ্রিত পানি। সেই মধু মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বক পরিষ্কার থাকবে ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে।
২। আধা চা চামচ মধু ও আধা চা চামচ টমেটোর রস মিলিয়ে একটা ফেসপ্যাক তৈরী করা যায়। এই প্যাক মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর সাথে আধা চা চামচ ডালের বেসন যোগ করলে এর ঘনত্ব বেড়ে যায়।
এছাড়া আধা চা চামচ মধু ও আধা চা চামচ শসার রস মিলিয়েও একটি ফেসপ্যাক তৈরী করা যায়। তরল দুধ বা গুড়া দুধ মিশিয়েও এই প্যাক তৈরী করা যায়।
৩। দুধ ও মধু সমপরিমাণ মিশিয়ে ক্লিনজিং ক্রিম তৈরী করা যায়। কাচের বয়ামে মুখ বন্ধ করে ফ্রিজে এক সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। প্রতিদিন গোসলের আগে ২০ মিনিট এই মিশ্রণ মুখে লাগাতে হবে।
৪। যেখানে ব্রণ হয়েছে সেখানে সিকি চা চামচ মধু ও লবঙ্গ গুড়া মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে নিতে হবে। ব্রণের স্থানে প্রতিদিন ব্যবহার করলে ব্রণ দূর হয়ে যায়।
৫। মধু চুলের যত্নে খুব ভালো কাজ করে। ১ টি পাকা কলা, ১ টি ডিম, আধা কাপ টক দই ও ১ চা চামচ মধু দিয়ে সপ্তাহে ১ দিন চুলে লাগালে চুলের খুব উপকার হয়।
৬। শ্যাম্পু করার সময় ও মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। শ্যাম্পুর সাথে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে চুলে দিলে চুল খুব সফট হয়।
৭। কন্ডিশনার হিসাবে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে চুলে ভালো মতো মালিশ করতে হবে। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
Journalist Name : SANGITA RANA