জানুন রসুন খাওয়ার নিয়ম এবং রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বাঙালি রসুন প্রিয় মানুষ। বেশিরভাগ মানুষ রসুন খেতে ভালোবাসে। তাই অনেকে ইন্টারনেটে রসুনের উপকারিতা ও রসুন খাওয়ার সঠিক সময় জানতে চেয়ে অনুসন্ধান করে। তাদের জন্য আজকের পোস্টে তুলে ধরা হয়েছে রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। আজকে আমরা কথা বলবো রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে।
রসুন খাওয়ার নিয়ম:
রসুন এমন একটি মলা যা আপনি চাইলে কয়েকভাবে খেতে ও সেবন করতে পারেন। রসুন খুবই শক্তিশালী ঘ্রানযুক্ত একটি মশলা যা সবাই খেতে পারেনা। তাই রসুন খাওয়ার নিয়ম রয়েছে বিভিন্নভাবে।
প্রথমত পানিতে ভিজিয়ে রেখে রসুনের পানি খেতে পারেন এটি ও পরিক্ষিত পদ্ধতি।
আপনি রসুন কে কাঁচা খেতে পারেন যা সবচেয়ে বেশি উপকারী।
দ্বিতীয়ত রসুন খাওয়ার নিয়ম হলো সিদ্ধ করে রসুন সেবন করা। এটি ও উপকারী।
এছাড়া ও আপনি পানিতে ভিজিয়ে রেখে রসুনের পানি খেতে পারেন এটি ও পরিক্ষিত পদ্ধতি
আর উপরে উল্লেখিত কোন ভাবেই রসুন খেতে না পারলে আপনি তরকারির সাথে নিয়মিত রসুন খেতে থাকেন এবং কাঁচা রসুন খেতে অভ্যাস গড়ে তুলুন। মনে রাখবেন প্রথমে কাঁচা রসুন খেতে কষ্ট হলেও পরে অভ্যাস হয়ে যাবে একসময়।
রসুন খাওয়ার উপকারিতা:-
রসুনের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন। তাই এটা আমাদের শরীর গঠনে ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা সব সময় রসুন খেতে ভালোবাসে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ রসুন খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে।
(১) রক্ত পরিস্কার রাখতে রসুনের উপকারিতা : রসুনের দুটি কাঁচা কোষ নিন। তারপর এক গ্লাস পরিমান পানি গরম করুন। এবার এই গরম পানিতে কাঁচা রসুনের কোষগুলো দিন। তারপর রসুনযুক্ত পানি পান করে পেলুন। তাহলে রক্ত পরিস্কার হওয়ার পাশাপাশি আপনার ত্বকও ভালো থাকবে।
(২) রসুন দিয়ে ওজন কমানোর উপায় : প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানিতে দুই কোষ রসুন নিয়ে উক্ত পানিতে লেবুর রস দিয়ে খেয়ে পেলুন। নিয়মিত খেতে থাকলে অতি সহজে ফল পাওয়া যাবে।
(৩) জ্বর ও সর্দি নিরাময়ে রসুনের উপকার : অনেকে আছেন যারা কয়েকদিন পর পর জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তাদের জন্য রসুন খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জ্বর ও সর্দি ভালো করতে হলে প্রতিদিন অন্তত দুই বা তিন কোয়া রসুন আপনাকে খেতে হবে।
(৪) হৃদরোগ থেকে মুক্তি পেতে রসুনের উপকারিতা : প্রতিদিন দুই বা তিন কোয়া রসুন পানিতে রেখে আধা সিদ্ধ করে খেতে পারেন তাহলে আপনার রক্তে চর্বির পরিমাণ কম থাকে। এছাড়া ও হাইপ্রেসার ও ব্লাডে সুগারের পরিমান নিয়ন্ত্রণে রাখে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
(৫) জীবানু ঘটিত রোগ প্রতিরোধে রসুনের উপকারিতা : সাম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে রসুনের নির্যাস মানবদেহের কৃমি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন মাউথওয়াশ তৈরি করতে রসুন ব্যবহার করা হয়। নিয়মিত রসুন ব্যবহারে দাঁতের ব্যকটেরিয়া বিস্তার রোধ হয়।
(৬) ক্যান্সার প্রতিরোধে রসুনের উপকারিতা : প্রতিদিন নিয়মিত রসুন রান্না করে ও কাঁচা খেলে পাকস্থলী ও কোলন ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া ও ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করতে নিয়মিত রসুন খাওয়ার বিকল্প নেই।
(৭) কাঁটা খুলতে রসুনের উপকারিতা : শরিরের কোনো স্থানে কাটা বাঁধলে রসুন ব্যবহার করতে পারেন ঐ স্থানে। অতি অল্প সময়ে ব্যাথা সেরে যাবে।
রসুন কৃমি নাশ করতে, শ্বাস কষ্ট কমাতে, হজমে সহায়তা করতে, প্রস্রাবের সমস্যায়, শ্বাসনালী মিউকাস মুক্ত করতে, এ্যাজমা রোগের উপশমে, হাইপারটেনশন কমাতে, চুল পাকানো কমাতে, শরীরে কোলেস্টেরলের লেভেল কমাতে, হাড়ের বিভিন্ন রোগে রসুন সাহায্য করে। ভেষজ গুণের জন্য কাঁচা রসুন বেশি উপকারী।
খালি পেটে রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা:
উপকারিতা:-
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
খালি পেটে রসুন খাওয়া হলে এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর মতো কাজ করে।
যক্ষ্মা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে যকৃত এবং মূত্রাশয় সঠিকভাবে নিজ নিজ কার্য সম্পাদন করে।
রসুন যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, ফুসফুসের কনজেশন, হাপানি, হুপিং কাশি ইত্যাদি প্রতিরোধ করে।
যাদের রসুন খাওয়ার ফলে এলার্জি হবার আশঙ্কা রয়েছে বা হয় তারা অবশ্যই কাঁচা রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এছাড়া যাদের রসুন খাওয়ার ফলে মাথা ব্যথার সমস্যা হয়, বমির প্রাদুর্ভাব হয় বা অন্য কোন সমস্যা দেখা যায় তাদের জন্য কাঁচা রসুন না খাওয়াই ভাল।

রসুন ভর্তার উপকারিতা:-
রসুন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রান্নার বেশ উপকারী একটি অংশ। মাংস রান্না করা থেকে শুরু করে সবজি ভাজি কিংবা ভর্তা তৈরিতে রসুনের চাহিদা অনেক বেশি। আমাদের দেহে রসুন স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে দেশ-বিদেশে অনেক গবেষণা করা হয়েছে ।
১। অস্টিওপোরোসিস চিকিৎসায় সাহায্য করে।
২। দেহের কলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৩। রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে।
৪। হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
৫। দেহে ব্যাকটেরিয়া বিস্তার প্রতিরোধ করে।
৬। যক্ষ্মা চিকিৎসায় সাহায্য করে।
৭। দেহে আঘাত বা আঘাত জনিত কারণে পুজ হলে তা সাড়াতে সাহায্য করে।
৮। যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৯। দেহের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
১০। কোলন ক্যানসার বিস্তারে বাধা প্রদান করে।

রসুন খাওয়ার অপকারিতা:-
গবেষনার ভিত্তিতে বলা যায় যে রসুনে থাকা এলিসিন এসিড যকৃতের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এটি বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে অতিরিক্ত খাওয়াতে।
যেকোন জিনিস অতিরিক্ত খাওয়া কখনো উচিত নয়। সকালে খালিপেটে বেশি রসুন খাওয়ার ফলে আপনার পেটে ডাইরিয়া সৃষ্টিকারি গ্যাস তৈরি হতে পারে।
যাদের পেটে বেশি পরিমানে গ্যাস আছে তারা রসুন কম খাওয়া উচিত। কারন রসুন পেটে গ্যাস সৃষ্টি করে। যার ফলে বুক জ্বালাপোড়া অনুভূতি হবে।
বেশি রসুন খেলে মুখে দূর্ঘন্ধ সৃষ্টি হয়।

Journalist Name : SANGITA RANA

Related News