ড্রাগন ফলের উপকারিতা

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

সম্প্রতিক সময়ে এক নতুন প্রজাতির ফল মানুষের মন কেড়েছে। বর্তমান সময়ে বিদেশী ফলের জনপ্রিয়তা এদেশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মানুষ সবসময় নতুনকে বেশি প্রাধান্য দেয় নতুনের প্রতি কৌতহল বরাবরই মানুষের ছিল। এই ফলটিও তার ই উদাহরণ। যে সমস্ত মানুষ এই ফল বিষয়ে অবগত থাকতে চান এই প্রতিবেদনটি তাদের জন্য। 
এই জনপ্রিয় ফলটি সম্মন্ধে বিস্তারিত তথ্য রইলো আপনাদের জন্য-
নামকরণ ও প্রকারভেদ : ড্রাগন ফলটি পিটিয়া নামে পরিচিত। এই ফলটির বৈজ্ঞানিক নাম হায়লসেরিয়াস আনডেটাস। এই গাছটি হনলুলু কুইন বা রাতের রানী হিসাবে পরিচিত। গন্ডচিন এর দেশে এই ফলটি আগুনে ড্রাগন ফল বা ড্রাগম মুক্তার ফল নামে পরিচিত। অন্যান্য স্বদেশে এর নাম স্ট্রোবেরি নাসপাতি, ড্রাগন স্ফটিক, সুইট ড্রাগন নামে পরিচিত।
ধরণ ও গড়ন : ড্রাগন মূলত ক্যাকটাস বা সাকুলেট জাতীয় গ্রোত্রের গাছে। গাছটি লতাজাতীয়। পাতা বিহীন। গাছের গুলো সাদা অথবা হলুদ রঙের হয়। এই গাছের পরাগায়ন বিভিন্ন পতঙ্গ দ্বারা হয়ে থাকে। ফলটি ভিয়েতনাম জাতীয় জল। বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে তবে এদেশে লাল অথবা আগুন - লাল রঙের বেশি দেখা যায়। ফলটির বাইরেটি মোটা আবরণে আবৃত থাকে। ভিতরে অসংখ্য দানা যুক্ত শাস থাকে। ভিতরে সাদা শাস ও কালো দানা থাকে। দানা গুলো অত্যান্ত ছোট হয়। খেতে মিষ্টি। বিভিন্ন স্যালাড, জুস অথবা এমনি শুধু ফল হিসাবেও এটি খাওয়া যায়।
উৎসস্থল : ড্রাগন ফল দক্ষিণ মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার জঙ্গলে প্রথম পাওয়া যায়। এশিয়ার মধ্যে মালয়েশিয়াতে প্রথম এই ফলের চাষ শুরু হয়। বর্তমানে বাণিজ্যিক কারণে ভিয়েতনামে এই ফলের চাষ বেশি লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, চিন, ইসরায়েল, থাইল্যান্ড, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া সহ ভারতে এই ফলের চাষ শুরু হয়েছে।
পুষ্টিগুন : ড্রাগন ফল প্রচুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। ৮০% জল দ্বারা গঠিত। এছাড়া প্রচুর ফাইবার রয়েছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে রয়েছে, প্রোটিন =০.১৫-০.৫ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেড =৯-১৪ গ্রাম, চর্বি =০.১-০.৬ গ্রাম, আশ =০.৩-০.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম =৬-১০ মিলি  গ্রাম, আয়রন =০.৩-০.৭ গ্রাম, ফসফোরাস =১৬-৩৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন =৪-২৫ মিলি গ্রাম। এতে ক্যালোরি খুবই কম পরিমানে থাকে। একটি ড্রাগন ফলে ফাইবার থাকে ৭ গ্রাম। ওমেগা ৩, ফ্যাটি অ্যাসিড ও ওমেগা ৯ থাকে।
এই ফল খাওয়ার উপকারিতা- বিদেশী ফল হলেও এই ফল বিভিন্ন পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ। বিভিন্ন খনিজ দ্বারা গঠিত এই ফল আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রোগের ঝুঁকি কমায়।

যে ধরণের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে সেগুলি হলো :
* ওজন কমাতে : চর্বির পরিমান কম থাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডায়েট চার্ট এ এই ফল টি আপনারা রাখতে পারেন। এছাড়া ভিটামিন সি থাকায় ওজন কমাতে সাহায্য করে ।
* ক্যান্সার প্রতিরোধে : কেরোটিন নামক উপাদান থাকায় ক্যান্সার প্রতিরোধে ফলটি সাহায্য করে । তবে অবশই ডাক্তারের পরামর্শে খাওয়া উচিত।
* ডায়বেটিস প্রতিরোধে : এই ফল খেলে রক্ত-এ শর্করার পরিমান স্থিতিশীল থাকে। আঁশ থাকায় ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে । গর্ভবতী মহিলারা এই ফল খেতে পারেনা* হজুমে সাহায্য করে : ড্রাগন ফলে আশের পরিমান বেশি থাকায় পরিপক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে হযুমের গন্ডগোল থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
* রক্ত চলাচলে সাহায্য করে : আয়রণের ঘাড়তির ফলে শরীরে রক্তের পরিমান কমে যায়। ড্রাগন ফলে ১.৯মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে যা শরীরে আয়রণের মাত্রা সঠিক রাখতে সাহায্য করে ও হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে।
* ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফল শরীরে রোগ প্রতিরোধ বাড়ায় ও নিয়মিত খেলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
* কোলেস্ট্রেরোল মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। হার্ট সুস্থ রাখে।
* প্রচুর পানি থাকায় শরীরে জলের ঘাড়তি দূর করতে সাহায্য করে ।
* শরীরে আয়রণের লেভেল বাড়ায়।

* চুল পড়া, বয়েসের ছাপ, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
এই ফলের কিছু ক্ষতিকারক দিক :
* এলার্জি সমস্যা বাড়ায়. যে সকল ব্যাক্তির এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা এই ফল থেকে দূরে থাকবেন।
* অতিরিক্ত না খাওয়া উচিত।
* অতিরিক্ত খেলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে ডায়রিয়া হতে পারে।
* নিম্ন রক্তচাপ জনিত রোগ দেখা দিতে পারে। 

Journalist Name : Sayani Chatterjee

Related News