দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত দুই যাত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাসের হদিশ

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

গোটা বিশ্বের সাথে ওমিক্রন নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রহর গুনছে ভারত। গত বৃহস্পতিবারই করোনার এই অতিসংক্রামক প্রজাতি নিয়ে ইংল্যান্ডের নেচার পত্রিকাই এক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল, যাতে বলা হয়েছিল এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের যতগুলি প্রকার বা প্রজাতি আমাদের সামনে এসেছে তার মধ্যে সব থেকে ভয়ঙ্কর হতে চলেছে এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট। যদিও নতুন এই ভ্যারিয়েন্টকে চিনতে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। তবে নেচার পত্রিকার দাবি দক্ষিণ আফ্রিকার বাৎসয়ানাই এই প্রজাতির জন্ম, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার বেশ কিছু জনের শরীরে এই মারণ ভাইরাস পাওয়া গেছে।


 কেন্দ্র সরকার সমস্ত রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে হুঁশিয়ার করেছিল আগেই, কিন্তু নিশ্চিন্তে আর থাকা গেল না। শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত দুই যাত্রীর শরীরে খোঁজ মিলেছে মারণ ভাইরাইসের, যেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে জল্পনা তুঙ্গে, তবে কি আর স্বাভাবিক ছন্দে ফেরা হল না ! সংশয় দেশজুড়ে। শনিবারই বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া বিমান বন্দরে নামেন দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত এই দুই যাত্রী, কেন্দ্রও সরকারের নির্দেশ মতো দেশের বাইরে থেকে ফেরা সকল যাত্রীর আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা হয়, আর তাতেই ওই দুই যাত্রীর শরীরে মারণ ভাইরাসের হদিশ পান বিমান বন্দর কতৃপক্ষ। করোনা রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ার সাথে সাথেই দুই আক্রান্তকে বেঙ্গালুরুর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে তাদের শরীরে বাসা বাঁধা করোনার প্রজাতি আদেও ওমিক্রন কিনা তা জানতে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে জানিয়েছে বিমান বন্দর কতৃপক্ষ।


বেঙ্গালুরুর ডেপুটি কমিশনার কে শ্রীনিবাস জানান “ শনিবার প্রায় ৫৮৪ জনকে ১০ টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়, তার মধ্যে ১০০ জনের কাছাকাছি ফিরেছেন দক্ষিন আফ্রিকা থেকে যাদের মধ্যে ২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ, বাকি যাত্রীদেরও নজরে রাখা হয়েছে”।  


ডেল্টা, ডেল্টা প্লাসের থেকে আরও বেশি সংক্রামক এই নতুন প্রজাতি ওমিক্রন। যে করেই হোক ভারতকে এই নতুন প্রজাতির হাত থেকে রক্ষা করতেই হবে, তার জন্য এই দুই দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত যাত্রীর খবর সামনে আসার সাথে সাথেই প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করেন। আন্তর্জাতিক উড়ানে আবার নিষেধাজ্ঞা জারি কর হবে কিনা তা নিয়ে খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভাইরাসের চরিত্র দেখে ইতিমধ্যেই এই নতুন ভ্যারিয়েন্টকে উদ্বেগ জনক তকমা দিয়েছে  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা “হু”। বিশেষজ্ঞদের মতে এই নতুন প্রজাতি এখনও পর্যন্ত মোট ৫০ বার নিজের রূপ পরিবর্তন করেছে। তাদের মতে দক্ষিণ আফ্রিকাই এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা গেছে বেশি স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে, অর্থাৎ এটা বলাই যাই এই ভাইরাস অল্প বয়সিদের ওপর বেশি প্রভাব বিস্তার করবে। ভারতে এখনও পর্যন্ত একশো কোটির বেশি মানুষের ভ্যাকসিন সম্পন্ন হয়েছে, কিন্তু চিন্তার বিষয় তাদের মধ্যে কেউই ১৮ বয়সের নীচে নয়। ভারতে এখনও ১৮ অনূর্ধ্বদের টিকাকরণ পক্রিয়া শুরুই হয়নি, তাই এটা বলাই ভালো করোনার নতুন প্রজাতি যদি ভারতে প্রবেশ করে তাহলে দুর্ভোগের শেষ থাকবে না। ইতি মধ্যেই বেশির ভাগ রাজ্য তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে, যদিও প্রতিষ্ঠানগুলি নিয়মিত ভাবে স্যানিটাইজ করা হয়। ভারতীয় চিকিৎসকদের একটাই পরামর্শ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে যেতে হলে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতেই হবে। কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিন এই নতুন প্রজাতির বিরুদ্ধে কতটা কার্যকারী হবে তা নিয়ে সংশয় স্বাস্থ্য মহলে।

Journalist Name : Sabyasachi Chatterjee

Related News