গত
শনিবার উদ্বেগজনক দেশ থেকে বেঙ্গালুরু বিমান বন্দরে ফিরেছেন প্রায় ৫০০ বেশি মানুষ, আর তার মধ্যেই
দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত দুই যাত্রীর শরীরে মিলেছিল মারণ ভাইরাস করোনার হদিশ। রিপোর্ট পজিটিভ আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বেঙ্গালুরুর একটি কোয়ারিন্টায়ন সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার তড়িঘড়ি সমস্ত রাজ্য সরকার এবং বিমান বন্দরকে নির্দেশ দেয় বিদেশ থেকে আগত যে কোন যাত্রীর
করোনা পরীক্ষা করাতে এবং রিপোর্ট পজিটিভ এলে সঙ্গে সঙ্গে রোগীর চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে। ওমিক্রন নিয়ে দেশের ঘুম উড়েছিল আগেই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর নিশ্চিন্তে থাকা
গেল না। ভারতে শেষ পর্যন্ত খোঁজ মিলেছে ওমিক্রন আক্রান্তের। সম্প্রতি কর্ণাটকে দুই ওমিক্রন আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে একজন ব্যাক্তি বিদেশি। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হল সেই অমক্রন
আক্রান্ত ব্যাক্তি ভারত ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছেন। করোনা আক্রান্ত রগি কীভাবে এক দেশ ছেড়ে
অন্য দেশে পালিয়ে গেলেন তা নিয়ে জল্পনা
তুঙ্গে। এদিন কর্ণাটকের স্বাস্থ্য মন্ত্রী কে সুধাকর জানান,
“ দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কিছুদিন আগেই ৫৭ জন যাত্রী
ভারতে এসেছেন, কিন্তু তাদের মধ্যে ১০ জন ব্যাক্তি
উধাও। করোনা আক্রান্ত এই ব্যাক্তিদের অবিলম্বে
সমধান করা উচিত, তাদের প্রত্যেকেই ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্ত তাদের ফোন বন্ধ”।
শুধু
কর্ণাটক নয়, দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত এক ব্যাক্তির ওমিক্রন
ধরা পরে গুজরাটের জামনগর বিমান বন্দরে। বিমান বন্দরে করোনা পরিক্ষাই পজিটিভ আসা ঐ ব্যাক্তির লালা
রস সংগ্রহ করে পুনের গবেষণাগারে পাঠানো হয়, এবং তাতেই সেই ব্যাক্তির শরীরে অমিক্রনের সন্ধান মেলে। ওমিক্রনের প্রথম হদিশ মেলে কর্ণাটকে দুই ব্যাক্তির শরীরে, যাদের মধ্যে একজন মহিলা এবং ওপর জন পুরুষ। ওমিক্রন
আক্রান্ত মহিলা একজন স্বাস্থ্যকর্মী বলে জানা গেছে। তবে সম্প্রতি তার ভ্রমনের রেকর্ড পাওয়া যায়নি। শুক্রবার দিন দেশে ওমিক্রন আক্রান্ত মত ১২ জনকে
দিল্লির এক হাসপাতালে ভর্তি
করানো হয়েছে। সুত্র অনুযায়ী তাদের মধ্যে ১০ জনই ওমিক্রন
আক্রান্ত। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ রোগীরই বিদেশি বা সম্প্রতি বিদেশ
থেকে ফিরেছেন।
দক্ষিণ
আফ্রিকাই জন্ম এই নতুন প্রজাতির
ইতিমধ্যেই ৩০টি দেশে তার জাল বিস্তার করে ফেলেছে। ৩০ দেশের প্রায়
৪০০ জনের কাছাকাছি মানুষ এই নতুন প্রজাতির
করোনাতে আক্রান্ত। এখনও পর্যন্ত ডেল্টাকেই সবথেকে ভয়ানক প্রজাতি বলে মান্নতা দিয়েছিলেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা, তবে নতুন প্রজাতি সামনে আসার পরে তাদের দাবি ডেল্টার থেকে অনেক বেশি সংক্রামক ওমিক্রন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এখনই এত ভয় পাওয়ার
কিছু নেই, এখনও পর্যন্ত ওমিক্রন আক্রান্তের মৃত্যুর খবর গোটা দেশে কোথাও পাওয়া যায়নি। অতি সংক্রামক হলেও এই নতুন প্রজাতি
খুব একটা সর্বনাশ ডেকে আনবে বলা যায়। তবে আগের প্রজাতির মতো এই বারেও মাস্কেই
ভরসা করছেন চিকিৎসকরা। তবে ভারতের কোভিড জিনোমিক্স কনসর্টিয়াম বা ইনসাকগ চল্লিশ
ও তার বেশি বয়সিদের বুস্টার ডোজের আওতায় আনার কথা বিবেচনা করতে বলেছে কেন্দ্র সরকারকে। ভারতে তৃতীয় ঢেউ আনতে পারে ওমিক্রন বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের, তার আগেই দ্রুত টিকাকরণ এবং রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি আক্রান্তের সংখ্যা খানিকটা নিয়ন্ত্রনে আনতে পারে। টিকাকরণ বিফলে যাওয়ার প্রমান এখনও মেলেনি, তবে বারংবার চরিত্র পরিবর্তনের জন্য টিকার কার্যকারিতা খানিকটা কমতে পারে বলে আশঙ্কা।