বিগত দু'বছরের করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে একটু একটু করে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে মুচিশা নার্সারি। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে শত শত পরিবার। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার 'মুচিশা' অঞ্চল - যার সাথে আজ পরিচিত ভারতের প্রতিটি কোণার মানুষ। রংবেরঙের ফুল গাছ হোক কিংবা নানারকম বাহারি গাছ, সমস্ত কিছুরই সম্ভার রয়েছে এই 'মুচিশা' অঞ্চলের নার্সারি তে। আর সেই কারণেই এর নাম জগৎজোড়া। বিগত দু'বছরের মহামারী ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছিল ভারতবাসীকে। বিপর্যস্ত হয়েছিল বাংলার অর্থনীতি। সেই সঙ্গে চরম সঙ্কটময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এই অঞ্চলের শতাধিক নার্সারি-তে। সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছিল এখানকার অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট। আর সেখান থেকেই একটু একটু করে বেরিয়ে আসছেন এখানকার খেটে খাওয়া মানুষরা। দু'বছরের চরম সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে অধিক হারে বেড়ে গিয়েছিল সার-কীটনাশকের মূল্য। একই সঙ্গে বেড়েছিল টবের দাম। এই অধিক দ্রব্যমূল্যের কারণে পকেটে টান পড়েছিল স্থানীয়দের। বহুগুনে কমে গিয়েছিল চারাগাছের উৎপাদন। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন বহিঃরাজ্যের ট্রাক চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকায় রপ্তানি করা সম্ভব হয়নি কোনোরকম গাছ। পাশাপাশি বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বৃহৎ সংখ্যক চারাগাছ। মাথায় হাত পড়েছিল নিম্নমধ্যবিত্ত চারা ব্যবসায়ীদের। একইসাথে দুবেলা দুমুঠো অন্যের সংস্থান করতে কালঘাম ছুটেছিল এই অঞ্চলের দিনমজুরদের। আর সেই পরিস্থিতি থেকেই একটু একটু করে বেরিয়ে আসছেন এখানকার নার্সারি ব্যবসার সাথে যুক্ত মানুষজন। দ্রব্যমূল্য তুলনামূলক কম থাকায় বর্তমানে গাছের উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণে। গুজরাট, বিহার, পঞ্জাব, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ থেকে আসছে বহু ট্রাক। বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে বহু প্রজাতির গাছ। চলতি বছরের খরা পরিস্থিতিতে গাছের কিছুটা ক্ষতি হলেও তা খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারবেনা বলেই মনে করছেন স্থানীয় চারা ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে বর্তমানে সবচেয়ে চাহিদা রয়েছে বোগেনভিলিয়া গাছের। যা মুচিশা অঞ্চলের বিরাট নার্সারির এক প্রাচীন ঐতিহ্যের সমান। সবমিলিয়ে পুজোর আগে আবার নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন এখানকার চারা ব্যবসায়ীরা।