#Pravati Sangbad Digital Desk:
দীর্ঘ প্রায় ২ বছর করোনার ফাঁড়া অনেকটা কাটিয়ে নিউ নর্মালে ফিরছিল ভারত তথা পৃথিবী। কিন্তু এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি 'ওমিক্রন' ইতিমধ্যেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে গোটা বিশ্বজুড়ে। বি.১.১.৫২৯ কোভিড ভেরিয়েন্ট বা ওমিক্রনের অস্তিত্ব বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ৫৯ টি দেশে পাওয়া গিয়েছে। আর যা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের থেকেও নাকি শক্তিশালী এই নতুন প্রজাতি। তাই প্রথম থেকেই এবিষয়ে সতর্ক করেছে 'হু'।ভারতে অমিক্রন-এ আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ জন। ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ে জারি হয়েছে লকডাউন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তবে কি করোনার এই নতুন ভ্যারিয়্যান্টই ডেকে আনবে করোনার তৃতীয় ঢেউ? এবার এই প্রশ্নের জবাব দিলেন WHO-র গবেষক।
সম্প্রতি WHO-এর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ডিরেক্টর ড. পুনম ক্ষেত্রপাল একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, 'একটি নতুন ভ্যারিয়্যান্ট সামনে আসা মানে এই নয় যে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তবে ওমিক্রনের জন্য পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এখনও মহামারী শেষ হয়নি। বিশ্বে এই মুহূর্তে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ওমিক্রনের জেরে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকছে। পুনম খেত্রপাল আরও বলেন, 'দক্ষিণ এশিয়ার বাসিন্দাদের আরও সতর্ক হতে হবে। অর্থাৎ কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা না বলেও তাঁর স্পষ্ট দাবি, সংক্রমণের সম্ভাবনা কোনওভাবেই পুরোপুরি সরিয়ে ফেলা যাচ্ছে না।
এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ' দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন সংক্রমণ বাড়ছে। কিন্তু, আমাদের আরও তথ্যের প্রয়োজন। ডেল্টার ওমিক্রন কম শক্তিশালী কিনা এই প্রসঙ্গে এখনও পর্যাপ্ত তথ্য হাতে এসে পৌঁছায়নি।' ড. পুনম ক্ষেত্রপাল বলেন, 'এখন থেকেই পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়ার উচিত। হাসপাতালগুলিতে বাড়াতে হবে বেডের সংখ্যা। এছাড়াও সমস্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে করোনা টিকা।'
এদিকে, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানোম ঘেব্রেইসাস সম্প্রতি বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে ওমিক্রন সংক্রমণের ভয় থেক যাচ্ছে যে কোনও মানুষের। তিনি কোভিড-জয়ী হোন বা টিকা প্রাপ্ত। কিন্তু, সেই পরিসংখ্যান থেকেই এমন প্রমাণও মিলছে, যাতে মনে করা যেতে পারে ওমিক্রন সংক্রমিতদের উপসর্গ খানিকটা কম হবে। কিন্তু এখনি কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো ঠিক হবে না। এ জন্য আরও তথ্য পরিসংখ্যান যাচাই করা প্রয়োজন।’ যদিও ওমিক্রন নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। WHO-এর কথা অনুযায়ী, ওমিক্রনকে ঠেকানো সম্ভব।
অন্যদিকে, ওমিক্রনকে ঠেকাতে এখনই লকডাউনের প্রয়োজন নেই জানিয়েছেন নীতি আয়োগের সদস্য ভিকে পাল। তিনি বলেছেন, ' ওমিক্রন নিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে নিশ্চই একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই নিয়ে আমাদের গবেষকদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। কোন কারণে বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে, কতদিনের মধ্যে তা দেওয়া উচিত, এই বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে। এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য সমস্ত প্রাপ্ত বয়স্কদের সম্পূর্ণ টিকাকরণ।'
দেশগুলিকে 'হু'এর আর্জি
এখনও পর্যন্ত গোটা বিশ্বে ওমিক্রন আক্রান্ত দেশের সংখ্যা হাফ সেঞ্চুরি পার করেছে। এই সময়ে দেশগুলির ঠিক কী করা দরকার? এ প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা বলেছেন, 'প্রাথমিক করোনা কেস এবং ক্লাস্টারগুলি নিয়ে অবশ্যই সঠিক ভাবে রিপোর্ট করা উচিত, সঠিক তথ্য পেলে তবেই এই মারণ রোগ থেকে দ্রুত মুক্তি পাবে পৃথিবী।'
Journalist Name : Sangita Rana