#Pravati Sangbad Digital Desk:
অলৌকিক' কিছু ঘটল না। থেমে গেল মৃত্যুর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি যুদ্ধ। বাঁচার লড়াইয়ের এক অদম্য উদাহরণ গড়ে অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা চলে গেলেন চিরঘুমের দেশে। কথা দিয়েছিলেন নিজে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে আর ফেরা হল না সব্যসাচীর। সবসময় নিজের কাছে আগলে রাখতেন তিনি, তবে আজ কাছের মানুষটা যে আর নেই। দীর্ঘ এতদিনের লড়াই, একের পর এক হার্ট অ্যাটাক, নতুন সংক্রমণ ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস হারালেও নিজের ভালবাসায় অগাধ আস্থা ছিল তাঁর। রাতের পর রাত শুধুই কাছের মানুষটার হাতটা ধরে বসে থেকেছেন। কিন্তু শেষরক্ষা আর হল না, চিরদিনের মত একা করে দিয়ে চলে গেল ঐন্দ্রিলা। নিজ দায়িত্বে একের পর এক আপডেট দিতেন তিনি। বড়মার ওপর আস্থা ছিল গভীর। তবে শনিবার রাত থেকেই অবস্থার অবনতি হয়, আর যেন পারলেন না লড়াই চালাতে। মৃত্যুকে প্রায় স্পর্শ করেও ঐন্দ্রিলা ফিরে এসেছেন। একবার নয়, বারবার। পরপর দু'বার শরীরে কামড় বসানো ক্যানসারকে দাঁতে দাঁত চেপে যুদ্ধ করে হারিয়ে দিয়েছিলেন ছিপছপে গড়নের মেয়েটি। গত ১ নভেম্বর আবার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় ঐন্দ্রিলাকে। এবার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ। কাছের মানুষ থেকে শুরু করে দূরে থাকা শুভানুধ্যায়ীরা আশায় ছিলেন, তৃতীয় বারও অসাধ্যসাধন করবেন ঐন্দ্রিলা। আবার ফিরে আসবেন। ফিরে আসবেন সুস্থ জীবনে। ফিরে আসবেন অভিনয়ে। কিন্তু তা হল না। গত সোমবার ১৪ নভেম্বর থেকে আচমকাই শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে অভিনেত্রীর। বুধবার বার বার হার্ট অ্যাটাক হয়। বাঁচিয়ে রাখতে ভেন্টিলেশনের মাত্রা বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু সব রকমের চেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো গেল না তাঁকে।
অভিনেত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল না। বারবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। সিপিআর দেওয়া হয়েছিল। হাসপাতালের তরফেই এমনটা জানা গিয়েছিল। প্রসঙ্গত, মস্তিকের যে দিকে ঐন্দ্রিলার অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল, ঠিক তার বিপরীত দিকে ছোট ছোট ক্লট পাওয়া গিয়েছিল। যেগুলো অপারেট করা যাবে না। ওষুধ দিয়ে সারাতে হত। যা নতুন করে চিকিত্সকদের চিন্তার মাত্রা বাড়িয়েছিল। সেই হাসিখুশি প্রাণোচ্ছ্বল মেয়েটির জন্য সকলের প্রার্থনা ব্যর্থ। অচিরেই চলে গেলেন। ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার খবর তাঁর অনুরাগীদের জানাচ্ছিলেন তাঁর সঙ্গী সব্যসাচী। তিনি লিখেছিলেন, ''আমি দিনে তিনবার করে গল্প করি ঐন্দ্রিলার সাথে। গলা চিনতে পারে, হার্টরেট একশো তিরিশ-চল্লিশে পৌঁছে যায়, দরদর করে ঘাম হয়, হাত মুচড়িয়ে আমার হাত ধরার চেষ্টা করে। প্রথম প্রথম ভয় পেতাম, এখন বুঝি ওটাই ফিরিয়ে আনার এক্সটার্নাল স্টিমুলি।'' গত ১৪ নভেম্বর সেই সব্যসাচীই ফেসবুকে লেখেন, ''অলৌকিকের প্রার্থনা করুন। দৈবের জন্য প্রার্থনা করুন।'' অনুরাগীরাও চিন্তায় পড়েছিলেন। ২৪ বছরের মেয়েটির সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু ঐন্দ্রিলা এ বার আর ফিরে এলেন না। 'মিষ্টি' হাসিটা রয়ে গেল ফ্রেমবন্দি হয়ে।
Journalist Name : Sampriti Gole