পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে স্থগিত থাকল পাহাড় বনধ

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গবিরোধী প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরই ক্ষুব্ধ GTA সদস্যরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ২৩ ফেব্রুয়ারি বনধের ডাক দিয়েছিলেন। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পাহাড়ের বনধ স্থগিত। বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। 

বিনয় তামাং এই বিষয়ে সাফ জানিয়েছিলেন, 'গোর্খাদের জন্য আমরা পৃথক রাজ্য চাই। এই দাবি প্রতিটি গোর্খার। আমাদের সকলে মিলে এই দাবিতে সরব হওয়া উচিত।' একই দাবি উঠল হামরো পার্টির নেতা অজয় এডওয়ার্ডের গলাতেও। তিনি বলেন, 'আশির দশকে যখন এ নিয়ে আন্দোলন হয় তখন আমরা ছোট ছিলাম।কিন্তু তখনই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম পাহাড়বাসী নিজের রাজ্যের পক্ষে। তাই আমরা চেষ্টা করব চাপ দিয়ে এই দাবি পূরণ করতে।'

শিলিগুড়িতে দাঁড়িয়ে একদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে, বনধ ডাকার সংস্কৃতিকে একেবারেই সমর্থন করেন না তিনি। কোনও ভাবেই বনধ করতে দেওয়া হবে না। এর পরই বুধবার বনধ স্থগিত রাখার কথা জানান বিনয় তামাংরা।

২০১১ সালে ১৭ জুলাই পাহাড়ে তৈরি করা হয় জিটিএ অর্থাৎ গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। এর অর্থ হল কীভাবে কেন্দ্র, রাজ্য ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়।  


কিন্তু এরই মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে এক যুগ। শুধুমাত্র ত্রিপাক্ষিক চুক্তি থেকে পিছিয়ে আসা নয়, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দিল্লি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক জানালেন, '২০১৫ সালে সুভাষ ঘিসিংয়ের মৃত্যুর দিন শেষ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছিল, তার পর থেকে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক বা রিভিউ মিটিং নিয়ে হেলদোল নেই কোনও সরকারের। আমরা জিটিএকে সমর্থন করছি না'।

দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর প্রকাশ্যে এসে প্রথমে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন গুরুং৷ এর পর পাহাড়ে ফেরেন তিনি৷ এর পর পায়ের তলার মাটি ফের একবার শক্ত হতেই গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সুর চড়াতে থাকেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান৷ বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে বনধের সিদ্ধান্ত প্ৰত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানান বিনয় তামাং ও অজয় এডওয়ার্ডরা। যদিও তাঁরা নিজেদের দাবি থেকে সরছেন না তাও জানিয়ে দিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং হামরো পার্টি।

উল্লেখ্য, একদিন আগেই মমতাকে বলতে শোনা গেছে- প্ৰশাসন কোনও বনধের সমর্থন করবে না। ‘‘…পরিষ্কার নির্দেশ দিচ্ছি, ২৩ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন করতে গেলে, আন্দোলনের অধিকার সকলের, কিন্তু আইন মেনে চলতে হবে। আইন না মানলে কাউকে রেয়াত করবে না সরকার। বনধ সমর্থন করি না আমরা। ১১ বছরে বুঝিয়ে দিয়েছি। আমরা বঙ্গভঙ্গ করতে দেব না। উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে কোনও তফাত নেই। আমরা সবাই এই বাংলার মানুষ। বাংলা একটাই থাকবে। যাঁরা ভাঙার চেষ্টা করবেন, তাঁদের মোহভঙ্গ হবে।”

Journalist Name : Aparna Dutta

Related News