কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি পেয়েছেন ববিতা সরকার । সঙ্গে পেয়েছেন ১৬ লক্ষ টাকাও। কিন্তু এখন হাজির ওই চাকরির নতুন দাবিদার অনামিকা রায়। শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকার দাবি, চাকরিটা পাওনা ছিল তাঁর। তার দাবি অ্যাকাডেমিক স্কোরে ভুল তথ্যের জোরে নাকি চাকরি পেয়েছে ববিতা। আর অনামিকার এই দাবি ঘিরেই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক ।
প্রসঙ্গত , নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন ববিতা সরকার। যা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরিও গিয়েছে। চাকরি এবং অঙ্কিতার পাওয়া বেতনের পুরোটাই পেয়েছেন মামলাকারী ববিতা সরকার। কিন্তু, সেই ববিতার প্রাপ্ত নম্বর নিয়েও তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ফলে আরও একবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে SSC'র ভূমিকা। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মেরিট লিস্ট। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ববিতা সরকারের টোটাল মার্কস ৭৭। যার মধ্যে অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৩।
ববিতার যে আবেদনপত্র তাতে লেখা ববিতা স্নাতক স্তরে ৮০০ এর মধ্যে পেয়েছেন ৪৪০।
অর্থাৎ ৫৫ শতাংশ। কিন্তু, ফর্মে লেখা তিনি ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন। আর তার ভিত্তিতেই ববিতাকে অ্যাকাডেমিক স্কোরে ২ নম্বর বেশি দিয়েছে কমিশন। ববিতার অ্যাকাডেমিক স্কোর যেখানে ৩১ হওয়ার কথা, সেখানে তিনি পেয়েছেন ৩৩।ফলে ৬০ শতাংশের বেশি ধরে তাঁকে অ্যাকাডেমিক স্কোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে যদি ৬০ শতাংশের কম নম্বর ধরা হয়, তাহলে অ্যাকাডেমিক স্কোর ২ কমে যাবে ববিতার। তেমন হলে স্বাভাবিকভাবেই, ববিতা মেধাতালিকায় অনেকটা পিছিয়ে যাবে। সেই যুক্তি দেখিয়েই চাকরির দাবি করছেন অনামিকা। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাওয়ার কথাও বলছেন তিনি।
একটি বড়সারির সংবাদপত্রকে ববিতা জানান , "ফর্ম ফিলাপ করার সময় আমি প্রাপ্ত নম্বরই দিয়েছিলেন। ৮০০ তে ৪৪০ দিয়েছি। মার্কশিট অনুযায়ী যা যা তথ্য আমি দিয়েছি, সবই সঠিক। সেই প্রেক্ষিতে তাঁরা আমাকে কত নম্বর দিয়েছিলেন জানি না। আমাদের নম্বরের তালিকা তারা প্রকাশ করেনি। তারা দিয়েছিল, নামের তালিকা। সেই কারণে আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আমার অভিযোগ ছিল, র্যাঙ্ক পিছিয়ে গিয়েছে। আমার নম্বর কত ছিল, আমি কিছুই জানতাম না। আদালতকে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কর্তৃপক্ষ নম্বর জানিয়েছে। কিন্তু আমার কাছে লিখিত তথ্য ছিল না। আদালতে দেওয়া সেই তথ্যের ভিত্তিতে আমাকে লিখিত চাকরি দেওয়া হয় এবং আমি কাজে যোগ দিই। এত ভেরিফিকেশন হওয়ার পরেও আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ছিল না।”
যে মেধাতালিকা অনুযায়ী নিয়োগ হয়েছে, সেখানে ববিতার র্যাঙ্ক ছিল ২০। অনামিকার র্যাঙ্ক ছিল ২১। এখন অনামিকার বক্তব্য, “এখন প্রকাশ্যে এসেছে, ববিতা সরকারের অ্যাকাডেমিক স্কোরে দুই নম্বর কমে যায়। সেক্ষেত্রে দুই নম্বর কমে গেলে তাঁর নাম অনেকটাই পিছিয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে চাকরির দাবিদার আমিই। যে ভুলটি হয়েছে সেটি ববিতা সরকারের দিক থেকে হয়েছে নাকি কমিশনের দিক থেকে হয়েছে সেটি ওরা বলতে পারবে। কিন্তু ২০ নম্বরে আসলে আমার নাম থাকা উচিত ছিল। আমি চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যাতে চাকরিটা পাই। যদি আমাকে বিষয়টি নিয়ে আদালতে যেতে হয়, তাহলে যাব।”