সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর আদিত্য এল ১ মহাকাশযান।
আজ, শনিবার প্রথম সূর্য অভিযান (Solar Mission) । শ্রীহরিকোটা (Sriharikota) থেকে উৎক্ষেপণ হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে ১১.৫০ মিনিটে সফল উৎক্ষেপণ হল আদিত্য এল ১ ৷
আদিত্য-এল 1 মহাকাশযানটি সূর্যের কক্ষপথের দূরবর্তী পর্যবেক্ষণ এবং L1 (সূর্য-আর্থ ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান পয়েন্ট) এ সৌর বায়ু অধ্যয়নের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে।
ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) দেশের প্রথম মিশন সূর্য আদিত্য এল ১ -র জন্য পুরোপুরি তৈরি ছিল। ২ সেপ্টেম্বরের এই মিশনের জন্য কাউন্টডাউনের পর সফল উৎক্ষেপণ হয়।
১২৭ দিনের অভিযানে যাচ্ছে আদিত্য এল-১। পৃথিবী থেকে ১.৫ মিলিয়ন বা ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে সূর্যের শেষ অক্ষে পাঠানো হবে আদিত্য-এল১ মহাকাশযান (Aditya-L1) । পিএসএলভি রকেটে করে এই মহাকাশযান পাঠানো হবে। সোলার করোনা বা সৌর করোনা এবং সৌর বায়ুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে আদিত্য এল-১।
আদিত্য-L1 মিশনের উদ্দেশ্য হল ‘L1’ এর চারপাশে কক্ষপথ থেকে সূর্যকে অধ্যয়ন করা। বিভিন্ন তরঙ্গ ব্যান্ডে সূর্যের আলোকমণ্ডল, ক্রোমোস্ফিয়ার এবং বাইরেরতম স্তর-পেরিফেরি পর্যবেক্ষণ করার জন্য এতে সাতটি যন্ত্র থাকবে। এই মিশনের সাহায্যে ইসরো বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্রের বিদ্যমান যন্ত্র সম্পর্কে জানতে পারবেন। শুধু তাই নয়, আদিত্য এল১-এর সাহায্যে সূর্য থেকে নির্গত অতিবেগুনি রশ্মির প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। এর সাহায্যে সৌর বায়ু বিশ্লেষণ করা যায়।
আদিত্য-এল১ মিশন সাতটি পে-লোড নিয়ে মহাকাশে যাবে। সূর্যের করোনা ও ফোটোস্পিয়ার, ক্রোমোস্পিয়ারের পর্যবেক্ষণ করবে বিভিন্ন ওয়েভব্য়ান্ড থেকে। লিকুইড অ্যাপোজি মোটর আদিত্য মহাকাশযানকে ল্যাগরানজিয়ান পয়েন্ট ১-এ পৌঁছে দেবে। আদিত্য এল-১ প্রতিদিন ১৪৪০টি করে সূর্যের ছবি পাঠাবে। ভিইএলসি যে সাতটি পে-লোড থাকবে, তার মধ্যে চারটি সূর্যের আলো পর্যবেক্ষণ করবে। বাকি তিনটি প্লাজমা ও ম্যাগনেটিক ফিল্ড পর্যবেক্ষণ করবে।
ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব অ্য়াস্ট্রোফিজিক্সের তথ্য অনুযায়ী, ১৯০ কেজির ভিইএলসি পেলোড আগামী পাঁচ বছর ধরে ছবি পাঠাবে। এটি উপগ্রহের ন্যূনতম আয়ু। জ্বালানি কম খরচ হলে এর থেকেও বেশি সময় সূর্যের শেষ কক্ষপথে থাকতে পারে এই মহাকাশযান। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সূর্যের শেষ কক্ষপথে পৌঁছবে আদিত্য এল-১। ফেব্রুয়ারির শেষভাগের মধ্যে প্রথম ছবি পাওয়া যাবে।
সূর্যের কক্ষপথে পৌঁছনোর পর প্রথমে ছোটখাটো যন্ত্রগুলি পরীক্ষা করা হবে। সমস্ত যন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করলে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ভিইএলসি-র শাটার খোলা হবে। কোয়ান্টম চ্যানেল থেকে প্রতি মিনিটে একটি করে ছবি তুলে পাঠাবে। ২৪ ঘণ্টায় আনুমানিক ১৪৪০টি ছবি পাঠাবে আদিত্য এল-১।