সংক্রমণের শীর্ষে বাংলা

banner

#পশ্চিমবঙ্গ:

বিগত কিছু দিন ধরে রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা দেশ। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২২ হাজারের বেশি মানুষ, যা রীতিমতো ভয়ের। এর আগের দুটি ঢেউয়ে দেশে সংক্রমণের শীর্ষে ছিল মহারাষ্ট্র নয় দিল্লি তবে তৃতীয় ঢেউ শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই এক নম্বরে উঠে এলো পশ্চিমবঙ্গ, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিনে এমন তথ্যই সামনে এসেছে। রাজ্যে বর্তমানে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে করোনাই সংক্রমিত হচ্ছেন ৩০ জনের বেশি অর্থাৎ টেস্ট পজিটিভিটি রেট ৩০ শতাংশের বেশি, যা চলতি ঢেউয়ের বাকি সমস্ত রাজ্যের মধ্যে প্রথম। শুধু মাত্র কলকাতাতেই সংক্রমিতের হার ৬০ শতাংশেরও বেশি। চিকিৎসকদের কথায় চলতি মাসের শেষের দিকেই রাজ্যে করোনা তার শিখর ছুঁতে পারে। গত কালই সমস্ত রাজ্যগুলিকে অক্সিজেন মজুতের ওপর জোর দিতে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যদিও দেখা যাচ্ছে বাকি দুটি ঢেউয়ের তুলনাই তৃতীয় ঢেউয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা খুবই কম, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হোম আইসলেশনে থেকে সেরে উঠছেন রোগী। ৬ই জানুয়ারি থেকে ১২ই জানুয়ারি অর্থাৎ এক সপ্তাহের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই তথ্য সামনে এনেছে।

বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যে জোর কদমে চলছে গঙ্গাসাগর মেলা, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মেলা শেষের পরে রাজ্যের পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন রাজ্যের চিকিৎসক মহল। কার্যত সুপার স্প্রেডারে পরিণত হতে পারে গঙ্গাসাগর মেলা, যা নিয়ে আতঙ্কের প্রহর গুনছেন রাজ্যবাসি। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে দিল্লি, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলি। কেন্দ্র সরকারের কথায় দেশে তৃতীয় ঢেউয়ের মূল কারণ করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রন, যার জেরে দেশের মৃত্যুর হার আগের দুটি ঢেউয়ের তুলনাই অনেক কম, তবে ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা আগের ভ্যারিয়েন্ট গুলির থেকে অনেক গুন বেশি। তবে দেশে যে গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে আর কিছু দিন পরে যদি লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ এক সাথে সংক্রমিত হন তাহলে তাদের একটি ছোট অংশকেও হাসপাতালে ভর্তি করার মতো পরিস্থিতি থাকবে না। দেশের প্রায় বেশিরভাগ হাসপাতালে আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্য কর্মী সকলেই, যার জেরে ব্যাহত হতে পারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।

২৫শে ডিসেম্বর এবং বর্ষবরণের সময় প্রায় সমস্ত রাজ্য অগণিত জমায়েত ঠেকাতে জারি করেছিল রাত্রিকালীন কার্ফিউ এবং বিভিন্ন বিধিনিষেধ, ঠিক সেই সময় ছাড় দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। ঠিক তার পরেই রাজ্যে করোনা গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। রাজ্যে গঙ্গাসাগর মেলার কারণে এই গ্রাফ আরও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা। গঙ্গাসাগর মেলায় যে ভাবে কোভিড বিধি অমান্য করার ছবি উঠে আসছে তাতে দুয়ারে বিপদ দেখছেন চিকিৎসকেরা।

Journalist Name : Sabyasachi Chatterjee

Tags:

Related News