জেলায় জেলায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

গোটা বিশ্বে আছড়ে পড়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। দিনে দিনে বাড়ছে সংক্রমণের মাত্রা, তার সাথেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার অবস্থা খুবই শোচনীয়। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা বাদে এমন কয়েকটি জেলা আছে, যেখানে দৈনিক ১ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমণের কবলে পড়ছেন। এক্ষেত্রে বিধির কড়াকড়ি করে সংক্রমণের মোকাবিলা করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায় করোনা পরিস্থিতি শোচনীয়। পাল্লা দিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা বাদে এমন কয়েকটি জেলা আছে, যেখানে দৈনিক ১ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমণের কবলে পড়ছেন। এক্ষেত্রে বিধির কড়াকড়ি করে সংক্রমণের মোকাবিলা করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
করোনা সংক্রমণ  রুখতে দেগঙ্গাতে ১৮ জানুয়ারি থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিধি নিষেধ ঘোষণা করা হল। উত্তর ২৪ পরগণা জেলাতে করোনার গ্রাফ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কোভিড যেভাবে থাবা বসিয়েছে সেখানে সংক্রমণের সংখ্যা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি জেলার দেগঙ্গা ব্লকে করোনা সংক্রমণের হার শতাধিক ছড়িয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দেগঙ্গার ১৩ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, সমস্ত বাজার কমিটি নিয়ে দেগঙ্গা বিডিও অফিসে বৈঠক করেন বিডিও সুব্রত মল্লিক এসডিপিও সৌমজিৎ বড়ুয়া, আইসি অজয় কুমার সিংহ, দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক সাহাজি ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের বনভূমির কর্মাধ্যক্ষ একে এম ফারহাদ।
এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সপ্তাহে দুদিন করে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে দেগঙ্গা সমস্ত দোকান হাট বাজার। দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক সাহাজি জানান করোনা সংক্রমণের হার কমাতে এই বিধি নিষেধ  ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রথম সপ্তাহে মঙ্গল বুধ ও শুক্রবার। দ্বিতীয় সপ্তাহে শনিবার রবিবার। তৃতীয় সপ্তাহে রবিবার বুধবার। চতুর্থ সপ্তাহে শনিবার দেগঙ্গার সমস্ত দোকান হাট বাজার বন্ধ থাকবে। আগামী ১৮, ২১, ২৪, ২৭, ৩০ জানুয়ারি এবং ২ ও ১২ ই ফেব্রুয়ারি এই সাতদিন দেগঙ্গা সব বাজার ও হাট সম্পূর্ণ বন্ধ  ঘোষণা করা হয়েছে। এদিনের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা পরিষদের সদস্যা উষা দাস, দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তুষার কান্তি দাস সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

কেন্দ্রের ডিস্ট্রিক্ট অফ কনসার্নের তালিকায় উঠে এসেছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা। দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার, সবার উদ্বেগ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও দেখা যাচ্ছে সংক্রমণের দাপট। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন বলছে, হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক একদিনে হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমণের কবলে পড়ছেন। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদার পরিস্থিতি বেশ সঙ্গীন। বাদবাকি জেলাগুলিতেও গতি পেয়েছে সংক্রমণ। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি ভয়াবহ বলে মনে করছেন চিকিত্সকরা। চিকিৎসক দ্বৈপায়ন বিশ্বাস বলেন, “জেলায় যে সংক্রমণ দেখাচ্ছে যাচ্ছে, টিপ অফ দ্য আইসবার্গ, সবাই টেস্ট করাচ্ছেন, তার কোনও মানে নেই, থার্ড ওয়েভ সব জায়গায় একসঙ্গে এসেছে, জেলাতেও এসেছে, আগে টেস্ট কম হয়েছে, এখন একটু বেশি হচ্ছে, তাই পজিটিভ বেশি আসছে।’’
চিকিৎসকদের পরামর্শ, সংক্রমণকে রুখতে গেলে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনার মতো, সমস্ত জেলাতেই কড়াকড়ি করার প্রয়োজন। চিকিৎসক জয়দেব রায় বলেন, “অন্যান্য জেলাগুলিকে কড়া ভাবে দেখতে হবে, তাই বলে কলকাতাতে ঢিল দেওয়া যাবে না, জেলা গুলোর সঙ্গে কলকাতার কানেকশন আছে।’’ সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়লেও, সচেতনতা অভাব রয়েই গেছে। কারুর মুখে মাস্ক নেই বললেই চলে, দুরুত্ব-বিধি  সিকেই উঠে গেছে। 

তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। দৈনিক আক্রান্ত বেড়ে পৌনে ৩ লক্ষ ছুঁইছুঁই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৭১ হাজার ২০২ জন। গতকাল দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ৬৮ হাজার ৮৩৩। অর্থাৎ গতকালের তুলনায় আজ ২ হাজার ৩৬৯ জন বেশি আক্রান্ত। এনিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩ কোটি ৭১ লক্ষ ২২ হাজার ১৬৪ জন।

Journalist Name : Sayantika Biswas

Tags:

Related News