কলকাতা বইমেলা মানেই ভিন্ন স্বাদের সংস্কৃতির মিলন উৎসব

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

"মেলা" মানেই মিলনক্ষেত্র। মেলা কথাটা শুনলেই আমাদের মাথায় প্রথম আসে ছুটি, আনন্দ। কিন্তু কোথাও গিয়ে মেলা আর বইমেলার মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। মেলা জিনিসটা সবার পছন্দ হলেও বইমেলাটা ঠিক সব মানুষের মন কাড়তে পারেনি। কিন্তু বেশিরভাগ বইপ্রেমী সারাবছর অপেক্ষায় থাকে বইমেলার ওই কটা দিনের জন্য।
শুধু বই কেনার জন্য নয় বইমেলাটিকে উপভোগ করার জন্য, নানারকম জিনিস কেনার জন্য, ঘুরে বেড়ানো সাথে খাওয়া দাওয়ার জন্য।
বইমেলা শুনলেই প্রথমে মাথায় আসে বই তারপরই আসে কলকাতার সেরার সেরা "আন্তর্জাতিক বুক ফেয়ার"। গত বছর করোনা নামক মারণ রোগের কারণে বন্ধ হয়ে গেলেও এ বছর দ্বিগুণ আনন্দ নিয়ে ফিরে এসেছে কলকাতা বইমেলা। কখনো নতুন বইয়ের গন্ধ আবার কখনো বা নানারকম খাবারের গন্ধ, নতুন মুখ নতুন মানুষ, গায়ে গা মিলিয়ে পায়ে পা মিলিয়ে শুভারম্ভ হয় বইমেলার। 

ফেব্রয়ারির ২৮ তারিখ কলকাতার বইমেলা ভিড়ে ছেয়ে গিয়েছিল। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে উদ্বোধন হয় কলকাতা বইমেলার। যদিও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এবারের বইমেলার নাম বদলে রাখেন " বইমেলা প্রাঙ্গণ"। এবং বলা হয় এবার থেকে এই নামেই পরিচিত হবে কলকাতা বইমেলা অর্থাৎ  বইমেলা প্রাঙ্গণ। আন্তর্জাতিক বইমেলার এবারকার থিম "বাংলাদেশ"। আবেগে ভেসে এপার বাংলা - ওপার বাংলা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সাধুবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে। তার হাত ধরে ৪৫ বার ঘণ্টা বাজিয়ে শুরু হয় ৪৫ তম বইমেলা। সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক এ আয়োজিত বইমেলা, ১৩ মার্চ অবধি সকাল ১২ টা থেকে ৬ টা অবধি খোলা থাকবে। এ বছর মোট ৬০০টি স্টল রয়েছে এবং লিটল ম্যাগাজিনের স্টল রয়েছে ২০০টি। গেট করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামে, সত্যজিৎ রায় ও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে। সাথে আছে বিশ্ব বাংলা গেটও। করা হয়েছে একটি মুক্তমঞ্চ, সদ্য প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এর নামে। সাথে মেডিক্যাল ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে কড়া পুলিশি ব্যবস্থা। 
বেলা পড়বে পড়বে তখনই আমরা কজন পৌঁছাই বইমেলার গেটে। নতুন বই, খাবার, নানারকম হাতের কাজ আমাদের আকৃষ্ট করছিল চারদিক থেকে। চারিদিকে নানারকম স্টলের মাঝে সত্যি আমরা খুব হকচকিয়ে গিয়েছিলাম। নানারকম গণ্যমান্য ব্যক্তি সহ জমজমাট হয়ে উঠেছে  বইমেলা প্রাঙ্গণ ২০২২। প্রথমে ময়দান, পরে মিলন মেলা প্রাঙ্গণ ও তারও পরে সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলা হয়। কিন্তু এ বছর পাকাপাকি ভাবে নির্দেশ জারি হলো সেন্ট্রাল পার্কেই হবে বইমেলা। সেই সব কিছু সাথে করেই আমরা ঘুরতে শুরু করলাম প্রতিটা স্টলে । বাংলা, হিন্দি, উর্দু, ইংরাজি সহ নানা ভাষার বই মাতিয়ে রেখেছে প্রতিটা স্টল কে। এছাড়া রয়েছে পদযাত্রা, সেমিনার, প্রতিযোগিতা, বাচ্চাদের অনুষ্ঠান সহ বই প্রকাশনা। 
আমরা বেশিক্ষণ থাকতে না পারায় অনেক কিছু দেখিনি। কিন্তু কলকাতা বইমেলা আমাদের কাছে গর্বের আবেগের। আমি এবং আমার এক বন্ধু কিছু বই কিনেই বেরিয়ে আসি বইমেলা থেকে। 

বইমেলায় সেই সন্ধ্যায় কিছু মজার ব্যাপারও দেখলাম। যেমন, কোনাে কোনাে লেখক নিজেই নিজের বই বিক্রি করছেন। কোন কোন স্টল এ আবার বাচ্চাদের কৌতূহল এটা কি, ওটা কি?? বেশ মজার। কেউ কেউ আবার নিজেই নিজের মতো ঘোরাঘুরি করে মেলাটিকে উপভোগ করছে। বাড়ি ফিরতে মন চাইছিল না। কিন্তু বাড়ি ফিরতে মন না চাইলেও নির্দিষ্ট সময়ের কারণে বাড়ি ফেরার পালা চলেই এলো। সাথে ট্রেন ধরার তাড়া।
এরকম একটা সন্ধ্যা কী আর মনের খােরাক মেটাতে পারে? সেই অপূর্ণতা নিয়েই বাড়ি ফিরলাম।  কিন্তু কোথাও গিয়ে একটা মনটা পরেই ছিল বইমেলাতে।

Journalist Name : Aankhi Banerjee

Tags:

Related News