Flash news
    No Flash News Today..!!
Tuesday, April 30, 2024

মানি হাইস্ট রিভিউ

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

 স্প্যানিশ ‘লা কাসা দে পাপেল’ বা ‘মানি হাইস্ট’ যখন মুক্তি পায়, নির্মাতারা ঠিক করেছিলেন দুই পর্বে এই অপরাধীচক্রের গল্প বলবেন। কিন্তু জনপ্রিয়তা দেখে তাঁরা স্তম্ভিত হয়ে যান। একের পর এক তৈরি হয় নতুন পর্ব। ২০২০ সালে নেটফ্লিক্স রেকর্ড দামে কিনে নেয় সিরিজটি। আর বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পায় এর চরিত্রগুলো।
‘মানি হাইস্ট’ স্প্যানিশ ক্রাইম ড্রামা। নেটফ্লিক্সে ভিন্ন ভাষার সবচেয়ে বেশি দেখা ওয়েব সিরিজ হিসেবে রেকর্ড গড়েছে ‘মানি হাইস্ট’।
মানি হাইস্টের প্রথম সিজনটি ছিল দুই পর্বে বিভক্ত। স্পেনের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক অ্যানটেনা ৩–এ এর প্রচার শুরু হয় ২০১৭ সালের ২মে এবং শেষ হয় একই বছরের ২৩নভেম্বর। পরে এর প্রচারস্বত্ব কিনে নেয় নেটফ্লিক্স এবং একই বছরের ২০ ডিসেম্বর তারা প্রচার করা শুরু করে। প্রথম সিজনের দ্বিতীয় পর্ব প্রচার হয় ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল। প্রথম সিজনে প্রফেসর ডাকাতির জন্য বেছে নিয়েছিলেন রয়্যাল মিন্ট অব স্পেনকে, যেখানে দেশটির মুদ্রা বা অর্থ ছাপানো হয়। সেখান থেকে তারা ২ হাজার ৪০০ মিলিয়ন ইউরো ছেপে তা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। এ জন্য গায়ের জোর বা অস্ত্রবাজির সুযোগ ছিল কম, বরং প্রায় পুরোটাই ছিল বুদ্ধির খেলা।
মানি হাইস্ট নেটফ্লিক্সের অন্যতম জনপ্রিয় সিরিজ। সন্দেহ নেই, প্রচুর ব্যবসা এনে দিয়েছে সিরিজটি। জনপ্রিয় হলেই পরের সিজন তৈরির প্রসঙ্গ চলে আসে। ২০১৮ সালেই নেটফ্লিক্স পরের সিজনের ঘোষণা দেয়। গল্প অনুযায়ী বলা যায়, প্রফেসর বাধ্য হন নতুন করে আবার একটি ডাকাতির পরিকল্পনা করতে। ফলে প্রথম ডাকাতির আগে যে দীর্ঘ প্রস্তুতি ছিল, পরেরবার তা আদৌ ছিল না। এবারের ডাকাতি ছিল ব্যাংক স্পেন বা দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। লক্ষ্য মজুত থাকা ৯০টন সোনা ডাকাতি করা।

প্রথম সিজনে বার্লিনকে মেরে ফেলা হয়। দ্বিতীয় সিজনে মারা যায় আরেক জনপ্রিয় চরিত্র নাইরোবি। আর শেষ দিকে এসে মারা যায় সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র টোকিও, তা–ও ভয়াবহ হামলার মধ্যে। ভারী ভারী সব অস্ত্র, গ্রেনেড, ধ্বংসযজ্ঞ—কী ছিল না দ্বিতীয় সিজনে। ফলে ডাকাতির সফলতা নিয়ে ছিল অনেক আগ্রহ। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বের হওয়ার কোনো পথ ছিল না, পুরো সিজনজুড়ে এর কোনো ইঙ্গিতও ছিল না। এবার প্রফেসরের অনেক পরিকল্পনাই কাজ করছিল না, আবার বিকল্প পরিকল্পনাও (প্ল্যান বি) দেখা যায়নি। তবে শেষ পর্যন্ত সব প্রশ্নেরই উত্তর পেয়েছে দর্শক। বিশেষ করে শেষ পাঁচ পর্বে অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে সবচেয়ে কম, বুদ্ধির খেলাই ছিল বেশি। আর ছিল অর্থনীতির কিছু মৌলিক ব্যাখ্যা। অর্থের সরবরাহ, মূল্যস্ফীতি, শেয়ারবাজার, মজুত সোনার মনস্তাত্ত্বিক গুরুত্ব, দেউলিয়া হয়ে যাওয়া—গল্পের উপসংহারে যেতে কত রকম ব্যাখ্যাই না দিতে হয়েছে।
সত্যিকার অর্থেই মানি হাইস্টের শেষটা ছিল মহা সমাপ্তি বা ‘গ্র্যান্ড ফিনালে’-র মতোই। দেশের সম্পদ রক্ষার দায়িত্বে যারা, তারা দর্শকদের চোখে ভিলেন বা খল চরিত্র। আর যারা ডাকাতি করছে, তারাই নায়ক। শেষ পর্যন্ত তাদের পক্ষে থেকে গল্প উপসংহারে নিয়ে যাওয়া সহজ কাজ ছিল না। প্রথম সিজন শেষে দর্শকদের যে হাসিমুখ, একদম শেষেও তা থাকবে কি না—সেটাও ছিল বড় প্রশ্ন। তবে নানা ধরনের টানাপোড়েনের মধ্যেও সিরিজের প্রতিটি চরিত্রকে যেমন শেষ পর্যন্ত প্রফেসরের ওপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হয়েছে, তেমনি দর্শকদেরও আস্থা রাখতে হয়েছে, আশায় থাকতে হয়েছে। আর এই জন্য পর্দায় চোখ রাখতে হয়েছে সর্বক্ষণ। মানি হাইস্ট আপনাকে আসলেই চোখ ফেরাতে দেবে না। এটাই নির্মাতাদের বড় কৃতিত্ব।

Journalist Name : Avijit Das

Tags:

Related News