Flash news
    No Flash News Today..!!
Tuesday, May 7, 2024

"সৌমিত্র" যুগ অবসানের এক বছর

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আজ 15 ই নভেম্বর 2021, দেখতে দেখতে এক বছর হয়ে গেল আমাদের সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এই অন্যতম মুখ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কিন্তু এখনো গোটা দেশের মানুষ বাংলা চলচ্চিত্রে শুধু তাকেই খোঁজে। আজকের দিনে তার প্রথম প্রয়াণ দিবসে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটাই কথা বলতে ইচ্ছা হয়,"তুমি রবে নীরবে, হৃদয়ে মম।"

শুধু বাংলা চলচ্চিত্র নয়, কবিতা, সাহিত্য, রাজনীতি সমস্ত কিছুতেই এক উজ্জ্বল নিদর্শন ছিলেন তিনি। হ্যাঁ,তিনি অন্য কেউ নন, আমাদের সবার প্রিয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। 


দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে অবশেষে মৃত্যুর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন ফেলুদা তথা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রবিবার, বেলা ১২টা ১৫ নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা সিনেমার অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ৷ তিনি ইহলোক ত্যাগ করার সাথে সাথে বাংলা চলচ্চিত্রের যেন একটা যুগ শেষ হয়ে গিয়েছিল। শুধু সিনেমা নয়, সাহিত্য, রাজনীতি, কবিতা সব ক্ষেত্রেই ছিল তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি ৷ 

করোনাই যেন সৌমিত্রকে এগিয়ে নিয়ে গেল সেই না-ফেরার দেশে। তবে অনেকরকম জটিলতাই দেখা গিয়েছিল তাঁর শরীরে। চিকিৎসকদের সূত্রে জানা যায়, মাল্টিঅর্গান ফেলিওর, ব্রেনডেথ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল সৌমিত্র বাবুর।


১৫ ই নভেম্বর, রবিবার সকালে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ৪০ দিন ধরে বেলভিউতে ভর্তি ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাই করোনামুক্ত শরীর একটু-একটু করে হারাতে বসেছিল রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের ক্ষমতা। ফলে তাঁকে দীর্ঘদিন লাইফ সাপোর্টে রাখতেও হয়েছিল। 

আকাশ কুসুমের নায়ক জীবনের বেলাশেষে চলে যান অতল মৃত্যুর আহ্বানে! বাঙালিরা হারিয়েছিল এ সময়ের এক অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে। প্রায় সাত দশকের দীর্ঘ ফিল্ম-কেরিয়ার সৌমিত্র বাবুর। নাট্যশিল্পী হিসেবেও তিনি বিশিষ্ট। তাঁর কর্মজীবন অবশ্য আকাশবাণীতে শুরু ঘোষক হিসেবে। পরে বাচিক শিল্পী হিসেবেও তিনি ছাপ রাখেন। তাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্রকবিতা বা জীবনানন্দ আচ্ছন্ন করে কবিতারসিক বাঙালিকে। 


প্রথম থেকেই কবিতা, আবৃতি, সাহিত্য, বাম রাজনীতির দিকে ঝোঁক ছিল প্রচুর ৷ তাই সৌমিত্র মানেই যে শুধুই সিনেমার পর্দায় ডাকসাইটে অভিনেতা তা একেবারেই নয় ৷ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় নিজেকে মেলে ধরেছিলেন সংস্কৃতির নানা দিকে ৷

কখনও রোমান্টিক নায়ক ৷ কখনও লড়াই করা মধ্যবিত্ত যুবকের চরিত্রে বাঙালির ঘরে জায়গা করে নিয়েছেন ৷ বাণিজ্যিক ছবি থেকে অন্য ধারার ছবিতেও সমান ভাবে ছাপ ফেলেছিলেন তিনি ৷ তবে সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে অভিনয়ই তাঁকে গোটা বিশ্বে জনপ্রিয় করেছিল সবচেয়ে বেশি ৷


১৯৫৯ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রথম সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় অপুর সংসার ছবিতে অভিনয় করেন। পরবর্তীকালে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মত পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। সিনেমা ছাড়াও তিনি বহু নাটক, যাত্রা, এবং টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। তবে সিনেমাটা বড্ড ভালোবাসতেন তিনি ৷ তাই হয়তো করোনা কালেও শ্যুটিং ফ্লোরে যাওয়ার জন্য ছটফট করতেন ৷ এই বয়সেও ভালো ছবিতে অভিনয় করার জন্য খিদে ছিল ষোলোয়ানা ৷ তাই তো এই বয়সেও একের পর এক বক্স অফিসে সুপারহিট সব ছবি ৷ “বেলাশেষে”,  “ময়ূরাক্ষী”, “বসু পরিবার”, “সাঁঝবাতি”, “ তার প্রমাণ” ৷

তিনি যে শুধু কবিতা আবৃত্তি করতেন তা নয়, নিজে কবিতা রচনাও করতেন, করতেন পত্রিকা সম্পাদনার কাজ। তবে তিনি মূলত অভিনেতাই। বাঙালির অন্যতম প্রিয় নায়ক ছিলেন তিনি । উত্তমকুমারের প্রতিস্পর্ধী এক অভিনেতা ছিলেন সৌমিত্র। গত বছর তাঁর মৃত্যুতে শেষ হয় একটা যুগ।  তাঁর মৃত্যুর এক বছর হয়ে গেলেও আজও গোটা শহর শোকার্ত। শোকমগ্ন টালিগঞ্জ। শোকাহত বাঙালি সিনেমাপ্রেমীরা।


Journalist Name : Sangita Rana

Related News