খুব কাছেই হাওয়াবদলের পুরুলিয়া, জেনে নিন ঘুরে আসার টুকিটাকি

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk :

বাঙালি মানেই খাওয়া আর ঘোরা এই দুই সবসময় প্রিয়। এদিকে বাঙালির হাতের নাগালে আছে এক অসম্ভব সুন্দর মনোরম জায়গা যা হলো পুরুলিয়া। খুব কম সময়ের জন্য কম খরচে আপনি চলে যেতে পারবেন পুরুলিয়া। পশ্চিমবঙ্গের একটি অন্যতম জেলা হল পুরুলিয়া অতিতে অবশ্য এই জায়গা নিয়ে অনেক বিবাদ বিরোধ ছিল কিন্তু বর্তমানে এটি একটি প্রাকৃতিক মনোরমযুক্ত শান্ত জায়গা। পুরুলিয়ায় মনমুগ্ধকর যেমন পাহাড় আছে ঠিক সেরকমই জঙ্গল জলাধার সবকিছুই আছে। খুব কম করে হলেও তিন দিনের জন্য কিনে পুরুলিয়ার বেশ কয়েকটি স্থান দর্শন হয়ে যাবে। ঘুরতে যাওয়ার জায়গা গুলির মধ্যে জঙ্গল পাহাড় জলাধার জলপ্রপাত এগুলি আছে। এখানে ঘুরতে যাবার উপযুক্ত সময় হল শীতকাল এবং বসন্তকাল। শীতকাল বলতে অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং বসন্তকাল অর্থাৎ লাল পলাশের সময়ে মার্চ এপ্রিল। বসন্তকাল পুরুলিয়ায় এক রোমাঞ্চকর প্রকৃতির সৃষ্টি করে। পুরুলিয়া শহর থেকে খুব কাছেই এই ঘুরতে যাওয়ার জায়গা গুলি। যদি আপনি ট্রেনে যেতে চান তাহলে হাওড়া থেকে চক্রধরপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে করে যেতে পারেন যা পুরুলিয়া জংশনের নামাবে এছাড়াও ফিরবার সময় সেই পুরুলিয়া জংশন থেকে ট্রেন ধরে হাওড়ায় পৌঁছানো যাবে। এছাড়াও অনেক বাস ছাড়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরুলিয়ার উদ্দেশ্যে। যেমন ধর্মতলা থেকে পুরুলিয়া পর্যন্ত বাস ছাড়ে তবে সেই জার্নি অনেকটা বেশি। এছাড়াও কেউ যদি গাড়িতে যেতে চাই তাহলে তাও যেতে পারে কলকাতা থেকে পুরুলিয়া গাড়িতে যেতে ৫ ঘন্টা সময় লাগে। গাড়ি পথ দিল্লি রোড ধরে দুর্গাপুর আসানসোল হয়ে পুরুলিয়ায় পৌঁছায়। এবার আসা যাক পুরুলিয়ার কিছু ঘুরতে যাওয়ার জায়গা সম্পর্কে তথ্য, সমগ্র পুরুলিয়া ঘুরে ফেলার জন্য বেশকিছু দিন সময় হাতে রাখা দরকার তা না হলে অন্ততপক্ষে তিনদিন হলেও সমগ্র জায়গাগুলি প্রায় ঘুরে নেওয়া যেতে পারে। পুরুলিয়ার জায়গাগুলিতে দুটো ভাগ আছে একটা হল অযোধ্যা পাহাড় সার্কিট আর অপরটি হল গড় সার্কিট। প্রথমেই আসি গড় সার্কিটে, এটি পুরুলিয়ার উত্তর- উত্তর পূর্বে অবস্থিত। পুরুলিয়া শহর থেকে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে ট্যাক্সি নিয়ে এর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাওয়া যেতে পারে। গাড়ির ভাড়া নিয়ে দরদামও করা যায় এবং সব রকমের খাবার পাওয়া যায় এই জায়গায়। কর সার্কিট ঘুরতে গেলে মোটামুটি হাতে দুদিন রাখতে হবে। গড় সার্কিটে যে জায়গাগুলি দেখার আছে তা হল- কাশিপুর রাজবাড়ি এটি তৈরি করেন মহারাজা নীলমণি সিংহ দেও। এক ঐতিহাসিক জায়গা জুড়ে আছে এই রাজবাড়ী তবে শুধুমাত্র দুর্গাপূজার সময় এটি জনসাধারণের জন্য খোলা থাকে বাকি সময় গেলে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না।

জয়চন্ডী পাহাড় পুরুলিয়া অন্যতম আকর্ষণ ।এটি জয়চন্ডী রেলস্টেশন থেকে মাত্র দু কিলোমিটার দূরে। পর্যটকরা পুরুলিয়া গেলেই এই জায়গাটি একদমই মিস করেন না। এই পাহাড়ে শুটিং হয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজার দেশে। এর ওপরে আছে জয়চন্ডী মন্দির এবং বাজারের মন্দির। তবে এই পাহাড়ে উঠতে গেলে ৫০৩ টি সিড়ি পেরিয়ে ওপরে উঠতে হয়। এরপর আছে গড় পঞ্চকোট যা রাজবাড়ি রাজার রাজত্বের অংশ। গড় সার্কিটের একটি অন্যতম আকর্ষণ এটি তবে বর্গী আক্রমণের সময় অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে যায়। গড় পঞ্চকোট মন্দির পুরুলিয়া শহর থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে। এরপর আছে পাঞ্চেত ড্যাম, গড় পঞ্চকোট থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে। এই গানটি পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খন্ড দুই রাজ্যের বর্ডার। বড়ন্তি পাহাড় হল গড় সার্কিটের এক অন্যতম মুগ্ধকর জায়গা যেখানে আছে বড়ন্তি লেক। মানুষের কি অদ্ভুত ভুল এই লেকের পাশে যে পাহাড় থাকে সেই পাহাড়টিকে সবাই ভুল করে বড়ন্তি পাহাড়ের বলে মনে করে তবে এটি একটি অন্য পাহাড়। এছাড়াও শুশুনিয়া পাহাড় অযোধ্যা সার্কিটে অন্যতম। এছাড়াও আছে মার্বেল লেক, ময়ূর পাহাড়, আপার ড্যাম ও লোয়ার ড্যাম, বামনী ফলস পাখি পাহাড় আর সাথে শীতের সকালে নির্ভেজাল গুড় তৈরীর মত দৃশ্য। বিভিন্ন সময়ে পুরুলিয়ায় বিভিন্ন আদিবাসী উৎসব টুসু উৎসব এছাড়াও মোরগের লড়াই এইসব তো দেখাই যায়। পুরুলিয়া এক উল্লেখযোগ্য পর্যটক কেন্দ্র হাওয়ায় এখানে প্রচুর হোটেল তৈরি হয়েছে। অনেক হোটেল থাকলেও বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য হোটেল হল লেক হিল রিসোর্ট একদম লেকের পাশে, মেঘ রুদ্দুর, আকাশমনি রিসোর্ট, বড়ন্তি মানভূম রিসোর্ট, স্পাঙ্গাইল উইংস রিসোর্ট , পাহাড়তলী রিসোর্ট প্রভৃতি।

Journalist Name : sagarika chakraborty

Related News