মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিকে রেজাল্ট ভালো! কিভাবে করবেন স্কলারশিপের আবেদন! জেনেনিন

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বিদ্যারত্নম মহাধনম ,কিন্তু এমন অনেক ছাত্রছাত্রী আছে যাদের আর্থিক অবস্থা প্রতিকূল এবং হয়ত তাদের বা  অভিভাবকদের উচ্চশিক্ষার খরচ চালানোর মত সচ্ছলতা নেই। সাধারণত স্কলারশিপ দুই ধরনের হয় যথাক্রমে সরকারি স্কলারশিপ এবং  বেসরকারি স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপের মুখ্য মাত্রাগুলি হল মূলত ছাত্র-ছাত্রীদের কত নম্বর পেতে হবে তাঁর সীমা এবং তাদের বার্ষিক পারিবারিক আয়ের পরিমাণ যা নীচে আলোচনা করা হয়েছে। মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে, উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্যে এবং যাতে অর্থাভাবে নিজের পড়াশুনার ঘাটতি না ঘটে সেই লক্ষ্যেই সরকারি ও বেসরকারিভাবে একাধিক স্কলারশিপ প্রদানের ব্যাবস্থা করা হয়েছে 
১.জিপি বিড়লা স্কলারশিপ: এটি একটি বেসরকারি স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮০% অথবা তার বেশি নম্বর পেতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। এই স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন করতে হলে ছাত্র ছাত্রীর পারিবারিক আয় ৩,০০,০০০টাকার কম হতে হবে। এটি অবশ্যই অফলাইন আবেদন করতে হবে।  এই স্কলারশিপের আবেদন করার জন্য এদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ফর্ম ডাউনলোড করে ফিলাপ করে প্রদত্ত ঠিকানায় পাঠাতে হবে। সাধারণত জুলাই এবং সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হয়।  এই স্কলারশিপ অনুযায়ী বার্ষিক ভাবে এককালীন ৫০,০০০ টাকা পাওয়া যায়।
২.এলআইসি ইন্ডিয়া স্কলারশিপ: এটিও একটি বেসরকারি স্কলারশিপ। তবে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হয় অনলাইনে। এই স্কলারশিপের স্কলারশিপের আবেদনের জন্য পরীক্ষার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিকে ৬০% বা তার বেশি নম্বর পেতে হবে এবং আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় ১,০০,০০০ টাকার কম হতে হবে। এই স্কলারশিপ অনুযায়ী আবেদনকারী বার্ষিক ১০,০০০টাকা পর্যন্ত পেয়ে থাকেন।
৩.সীতারাম জিন্দাল স্কলারসশিপ: এই স্কলারশিপটি জিন্দাল কোম্পানি থেকে দেওয়া হয়।  এর জন্য আবেদন করতে হয় অফলাইনে।  সাধারণত সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসের মধ্যে এদের ওয়েবসাইট থেকে ফরম ডাউনলোড করে আবেদন করা যেতে পারে।  এই স্কলারশিপের আবেদনের জন্য ছাত্রীদেরকে উচ্চমাধ্যমিকে ৬৫% এবং ছাত্রদেরকে উচ্চমাধ্যমিকে ৭০% নম্বর পেতে হবে। এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর পারিবারিক বাৎসরিক আয় যদি চাকুরীজীবি হয় তাহলে ৪,০০,০০০টাকার কম এবং অন্যান্যদের ক্ষেত্রে ২৫,০০,০০০টাকার কম হতে হবে। স্কলারশিপ আবেদনকারী ছাত্রছাত্রীরা প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে পেয়ে থাকে।
৪.প্রিয়ম্বদা বিড়লা স্কলারশিপ: এটি একটি অফলাইন বেসরকারি স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপের আবেদন উচ্চমাধ্যমিক ফল প্রকাশের ৯০দিনের মধ্যে করতে হয়। এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে উচ্চ মাধ্যমিকে ৬০% নম্বর পেতে হবে এবং তার পারিবারিক বাৎসরিক আয় ৭৫ হাজার টাকার কম হতে হবে। অনলাইনে আবেদন করে এর ফর্ম ফিলাপ করা হয়।  আবেদনকারী ছাত্রছাত্রীরা এককালীন ২৪হাজার টাকা পেয়ে থাকেন।
৫.নিকন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম: এটি অনলাইন স্কলারশিপ আবেদন করা হয়ে থাকে। এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় শুধুমাত্র পাশ করলেই হবে তবে তাকে ফটোগ্রাফি সম্পর্কিত কোন কোর্স বা ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে এবং সেই কোর্স এর মেয়াদ কমপক্ষে তিন মাস হতে হবে। এই স্কলারশিপের আবেদন করার জন্য আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় 60 হাজার টাকার কম হতে হবে। নিকন এবং  এর সঙ্গে যুক্ত লোকেরা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে না। এই স্কলারশিপের আওতাধীন ছাত্রছাত্রীরা সর্বাধিক 1 লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেয়ে থাকে।

এবার সরকারি স্কলারশিপ গুলির সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য-
১) স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপ বা SVMCM-
পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রদত্ত এই স্কলারশিপ একাদশ, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে পাঠরত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। একাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের মাধ‍্যমিকে ৭৫ শতাংশ নম্বর থাকলে আবেদন করতে পারেন। এছাড়া স্নাতকস্তরের শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ নম্বর থাকলেই আবেদন করতে পারবেন। স্নাতক স্তরে কমপক্ষে ৫৩% নম্বর থাকলে স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট: svmcm.wbhed.gov.in
২) ওয়েসিস (Oasis) স্কলারশিপ-
রাজ্য সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত (SC বা ST বা OBC) গোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ। তবে পরিবারের বার্ষিক আয় ২ লাখ টাকার কম হলে এই স্কলারশিপে আবেদন করা যায়। পশ্চিমবঙ্গের নবম-দশম শ্রেণীর SC/ST গোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীরা, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর SC/ST/OBC গোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীরা এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট:  oasis.gov.in
৩) কন্যাশ্রী প্রকল্প-
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার কর্তৃক আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় যাতে বাঁধা সৃষ্টি না হয়, সেই জন্য স্কলারশিপের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। K1- রাজ্য সরকারের অধীনস্থ বিদ্যালয়ে পাঠরত ১৩-১৮ বছর বয়সী অবিবাহিতা মেয়েরা K1 প্রকল্পের ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবেন। এই প্রকল্পের অধীনেই রয়েছে K2 ও K3।
ওয়েবসাইট: svmcm.wbhed.gov.in
৪) নবান্ন স্কলারশিপ-
মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণী-স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত নবান্ন স্কলারশিপ দেওয়া হয়। রাজ্যের বাসিন্দা ও রাজ‍্যের মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক বা রাজ্যের অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করতে হবে। এই স্কলারলিপ পেতে একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণীতে স্কলারশিপের জন্য দশম শ্রেণীতে কমপক্ষে ৫০%-৬০% নম্বর, স্নাতক স্তরে স্কলারশিপের জন্য দ্বাদশ শ্রেণীতে কমপক্ষে ৫০%-৬০% নম্বর পেতে হবে এবং স্নাতকোত্তর স্তরে স্কলারশিপের জন্য স্নাতকস্তরে ৫০%-৫৩% নম্বর পেতে হবে।
ওয়েবসাইট: wbcno.gov.in
৫) ঐকশ্রী প্রকল্প-
এই স্কলারশিপের মাধ্যমে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় সাহায্যের লক্ষ‍্যে পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের অধীনস্থ এবং স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠরত শিক্ষার্থীদের সাহায‍্য করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে মুসলিম, শিখ, জৈন, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও পারসি - এই ছয়টি সম্প্রদায়ের মধ্যে যেকোনো একটি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হলেই এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যাবে। এক্ষেত্রে পূর্ববর্তী পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর থাকা জরুরী।
ওয়েবসাইট: wbmdfcscholarship.org
উক্ত,এই ওয়েবসাইটগুলি ছাড়াও গুগলে গিয়ে এই স্কলারশিপগুলির নাম লিখলেই অ্যাপলিকেশন করা যাবে। যেমন- সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ ২০২২ ইত্যাদি। 

Journalist Name : SRIJITA MALLICK

Related News