"বিজয়ার সিঁদূর খেলায় মাতলেন এবার বিধবা, সমকামী, রূপান্তরকামীরাও"

banner

#Pravati Sangbad digital Desk:

হিন্দু রীতি অনুযায়ী বিয়ের সময় সিঁদুর দান হচ্ছে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আচার। বিবাহিত মহিলারা স্বামীর মঙ্গল কামনা করে সিঁদুর পরে থাকেন। সিঁদুরকে মনে করা হয় ব্রহ্মার প্রতীক। এবং ব্রহ্মা জীবনের সমস্ত কষ্ট দূর করে আনন্দে ভরে রাখবেন বলেই প্রচলিত মত আছে। কপালে ব্রহ্মা অধিষ্ঠান করেন বলেই মনে করা হয়। তাঁকে তুষ্ঠ রাখতেই কপালে লাল সিঁদুর পরা হয়।
বিজয়া দশমীর দিন একে অপরের সাথে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে বিবাহিত মহিলারা। বিধবা নারীদের ওপর নানা রকম বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেওয়া হলেও, পুরুষদের জন্য কোনো নিয়মকানুন আমাদের সমাজ-এ নেই। কিন্তু এবার সমাজের সেই কঠোর নিয়মাবলী ভেঙে সিঁদুর খেলার সুরে মাতোয়ারা বিধবা মহিলারাও, অন্বেষা ও অনুকূলরা।
বছর চারেক আগে স্বামীকে হারানো অন্বেষা তাঁর বাড়ির পুজোয় সিঁদুর খেলায় শামিল হয়েছেন আগেও।

ঘটনাটি এই শহরের নিউটাউনে। ঘটনার চরিত্ররাও কমবেশি এই শহরের। এই 'সাহসী' পদক্ষেপের ভগীরথ অন্বেষা চক্রবর্তী। ২০১৮ সালে বিয়ের মাত্র এক মাসের মাথায় একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় স্বামীকে তিনি হারান। তার স্বপ্ন ছিল শাঁখা সিঁদুর পরে আর পাঁচ জন মেয়ের মতোই বিজয়া দশমী উদ্‌যাপন করবেন। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে থেমে থাকেননি অন্বেষা। নিজের বৈধব্যকালেই সিঁদুর খেলেন তিনি। তা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি সে সময়। এখন অবশ্য তিনি নিজেই পুজোর উদ্যোক্তা। নিউটাউনের একটি বিলাসবহুল আবাসনে তিনি প্রায় একক উদ্যোগেই দুর্গাপুজো করেন। তাঁর পুজোর বিশিষ্টতা এই যে, দশমীর দিন সেখানে সিঁদুর খেলায় শামিল হন সমকামী থেকে রূপান্তরকামী, সমাজের সর্বশ্রেণির মানুষ। সম্প্রতি অন্বেষা অবশ্য দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছেন। কিন্তু তিনি চান বিধবা থেকে যৌনকর্মী, সকল মানুষই সিঁদুরখেলায় শামিল হোক।

অন্বেষার নিজের কথায়, 'মা দুর্গা তো সবার। তবে কেন শুধু সধবা মহিলারাই সিঁদুর খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবে, আর বাকিরা পারবে না?' অন্বেষার ডাকে সাড়া দিয়ে সিঁদুর খেলায় অংশগ্রহণ করতে এসেছিলেন রূপান্তরকামী অনুকূল ধাড়া, যিনি রাজকুমারী কোকো বলেই পরিচিত। এসেছিলেন পেশায় 'হেয়ার স্টাইলিস্ট' পুষ্পক সেনও। তাঁরা প্রত্যেকেই সিঁদুর খেলায় অংশগ্রহণ করেন।
উত্তর কলকাতা থেকে এসেছিলেন, বিজয়িতা মৈত্র। বিজয়িতাও ২০২১ সালে কোভিডে স্বামীকে হারিয়েছেন। কিন্তু বুধবার তাঁকেও দেখা গেল অন্বেষার ডাকে সিঁদুর খেলায় শামিল হতে। বিজয়িতা এই প্রসঙ্গে বলেন, 'স্বামী মারা যাওয়ার পর সাদা পোশাক পরতাম, নিজেরই নিজেকে ভীষণ অচেনা ঠেকত। পরে বুঝলাম এ ভাবে কোনও মৃত মানুষকে সম্মান জানানো যায় না।' পুষ্পকের কথায়, 'সিঁদুর খেলা যদি একটা খেলাই হয়ে থাকে, তবে বিবাহিত মহিলা ছাড়া অন্যরা এই খেলায় যোগ দিতে পারবে না কেন?
#Source: online/Digital/Social Media News   # Representative Image'

Journalist Name : Sumu Sarkar