রোজ সকালে নিয়মিত খালি পেটে আমলকি খেলেই সারবে যেসব রোগ, দেখে নিন

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আমলকির স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। জানেন কি, একটি কমলালেবুর চেয়েও বেশি মাত্রায় ভিটামিন সি থাকে আমলকিতে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আয়ুর্বেদের পরামর্শ অনুযায়ী, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক টুকরো আমলকি খেলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। সর্দি-কাশি এমনকি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকেও শরীরকে বাঁচায় আমলকি।

এতে আরও আছে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। চিকিৎসকরা জানান, এটি পরিপূর্ণ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ পানীয়। প্রতি ১০০ গ্রাম আমলকিতে থাকে ৯ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন। ফলের ক্যারোটিন ভিটামিন এ’র কাজ করে।

১০০ গ্রাম আমলকিতে ০.০৩ মি.গ্রা থায়ামিন, ০.০১ মি.গ্রা রিবোফ্লেভিন ও ১.২ মি.গ্রা লৌহ পাওয়া যায়। একইসঙ্গে ১০০ গ্রাম আমলকিতে ৬০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। যা একটি বড় মাপের কমলার চেয়ে বেশি।

এক আমলকির আছে হাজারো গুণ। বার্ধক্য প্রতিরোধে, চুল ঘন ও লম্বা করতে এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সহায়তা করে এটি। আমলকি অন্যতম টনিক। ত্বক উজ্জ্বল করে, রক্তকে বিশুদ্ধ করতে এবং চোখের দৃষ্টিও উন্নত করতে সহায়তা করে।

আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী, খালি পেটে আমলকি খেলে বেশ কিছু রোগ থেকে মুক্তি মেলে। কাঁচা, আমলকির চাটনি বা মিছরিও খেতে পারেন। তবে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি করে কাঁচা আমলকি খেলেই রক্ষা পাবেন কঠিন সব রোগ-ব্যাধি থেকে। জেনে নিন যেসব রোগ থেকে বাঁচবেন নিয়মিত আমলকি খেলে।

সর্দি-কাশি প্রতিরোধে: আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর ফলে বিভিন্ন ভাইরাল সংক্রমণ থেকে রক্ষা মেলে। সর্দি-কাশির সমস্যা থেকে বাঁচতে দিনে দুই চা চামচ আমলকির গুঁড়ো সামান্য মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ৩-৪ বার পান করুন। দেখবেন, দ্রুত স্বস্তি মিলবে।


দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়: গবেষণায় দেখা গেছে, আমলকির ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। প্রতিদিন আমলকি খেলে চোখের ছানির সমস্যা বা চোখের ফোলাভাব দূর করে। পাশাপাশি লালচে চোখ, চুলকানি এবং চোখ দিয়ে জল পড়ার সমস্যায় কমায়।

মেদ কমায়: ওজন নিয়ন্ত্রণে আমলকি খুবই কার্যকরী। আমলকি নিয়মিত সেবনকারীদের অনেকরই মত, খাওয়ার আগে এক গ্লাস জলে আমলার গুঁড়ো বা রস মিশিয়ে পান করলে পেট ভরে যায় এবং কম খাওয়া হয়। এর ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, আমলকি বিপাককেও বাড়িয়ে তোলে। যার ফলে অতিরিক্ত ওজন কমতে শুরু করে। আমলাকিতে উচ্চমাত্রায় ফাইবার এবং ট্যানিকের মতো অ্যাসিড আছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়। শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির ফলে আপনার ওজন দ্রুত কমবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আমলকির অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যাস্ট্রিনজেন্ট বৈশিষ্ট্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ক্যান্সারসহ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী রোগ অক্সিডেটিভ ক্ষতির কারণে হয়।

যখন দেহের কোষগুলো অক্সিজেন ব্যবহার করে; তখন তারা ফ্রি র্যাডিক্যালস নামে ক্ষতিকারক উপজাতগুলো ফেলে দেয়। আমলকিতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এজেন্ট আছে। যা এই ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়।


চুল সুন্দর করে: আমলকি পাতার মতো আমলকিও চুলের জন্য কার্যকরী এক টনিক। এটি চুল পড়া বন্ধ করে। খুশকি রোধ করে, চুলের ফলিকেলগুলো শক্তিশালী করে এবং মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। যার ফলে চুলের বৃদ্ধি ঘটে।

আমলকি একটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবেও কাজ করে। আমলকির হেয়ারপ্যাক ব্যবহারের ফলে চুল হয় ঝলমলে, কোমল আর শক্তিশালী। নিয়মিত আমলার তেল ও হেনাতে আমলা গুঁড়ো মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারে।

ত্বকের যত্নে: আমলকিতে অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য আছে। প্রতিদিন সকালে মধুর সঙ্গে আমলকির রস পান করলে দাগহীন, স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল ত্বক পাবেন।

কোলেস্টেরল দূর করে: আমলকি নিয়মিত গ্রহণের ফলে শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল দূর হয়। ইনসুলিন উত্‍পাদন বাড়ায় আমলকি। ফলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমে। রক্তচাপ বাড়তি হলেও প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আমলার রস পান করলে রক্তচাপের স্তর নিয়ন্ত্রণে আসবে দ্রুত।

ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়: জয়েন্টে ব্যথা বা আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় দুর্দান্ত কাজ করে আমলকি। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য শারীরিক বিভিন্ন প্রদাহ থেকে মুক্তি দেয়।

আমলা কীভাবে খাবেন?

সবচেয়ে বেশি উপকার মিলবে তাজা আমলার রস পান করলে। তবে আমলকির টক ও তেঁতো স্বাদের জন্য যদি রস খেতে না পারেন তাহলে জলের সঙ্গে আমলকির গুঁড়ো মিশিয়ে পান করবেন। এ ছাড়াও আমলকি কেটে ছোট ছোট টুকরো করে অল্প লবণের সঙ্গে মিশিয়ে রোদে শুকিয়ে রেখে দিন। এটি সম্পূর্ণরূপে শুকিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে একটি শুকনো পাত্রে সংরক্ষণ করুন। মুখশুদ্ধি হিসেবে খেতে করতে পারেন এটি।

Journalist Name : Sampriti Gole

Related News