ডাউন সিন্ড্রোম একটি জিনগত রোগ। এক জন মানুষের দেহে ৪৬টি ক্রোমোজোম থাকে। তবে ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত মানুষদের দেহে ২১ নম্বর ক্রোমোজোমের অতিরিক্ত একটি কপি থাকে। আর এই অতিরিক্ত ক্রোমোজোমের কারণে রোগীদের সামনে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ দেখা যায়। ট্রাইসোমি ২১ বলে পরিচিত এই সমস্যা, শিশুদের মধ্যে মেলা জিনগত জন্ম সংক্রান্ত রোগগুলির মধ্যে অন্যতম।
প্রতি ৮৩০ জন জন্মানো মানুষের মধ্যে ১ জনের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। ভারতে প্রতি বছর প্রায় ১.৩ লক্ষ শিশু এই সমস্যা নিয়ে জন্মায়। তবে উদ্বেগের বিষয় হল, তথ্য ও আলোচনার ঘাটতির কারণে বহু শিশুকেই নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই এই সংক্রান্ত বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়তে পালিত হয় প্রতি বছর ২১ মার্চ বিশ্ব ডাউন সিন্ড্রোম দিবস। এই বিষয়ে আলোচনা করছেন অ্যাস্টার সিএমআই হাসপাতালের ফেলোশিপ ইন চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ডিজেবিলিটিজের ডেভেলপমেন্টাল মেডিসিনের কনসালট্যান্ট ডা. গৌরী চিন্থালাপল্লি।
ডাউন সিন্ড্রোমের কারণ:
অতিরিক্ত ক্রোমোজোম ২১-এর কারণে কারণে ডাউন সিন্ড্রোম হয়। কিন্তু ক্রোমোজোমের এই অস্বাভাবিকতার কারণ অজানাই রয়ে গিয়েছে। সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় মায়ের বয়স একটা কারণ হতে পারে। যাঁদের বয়স ৩৫-এর বেশি, কমবয়সী মায়েদের তুলনায় তাঁদের সন্তানদের ডাউন সিন্ড্রোমের ঝুঁকি থাকে।
ডাউন সিন্ড্রোম কত রকমের?
ট্রাইসোমি ২১:এই ধরনের ডাউন সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে ক্রোমোজোম ২১-এর তিনটি ভিন্ন ভিন্ন কপি থাকে।
ট্রান্সলোকেশন ডাউন সিন্ড্রোম:এক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্রোমোজোম ২১ একটি ভিন্ন ক্রোমোজোমের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
মোজাইক ডাউন সিন্ড্রোম: ক্রোমোজোম ২১-এর স্বাভাবিক সেটের সঙ্গে কিছু কোষ মিশে যায়। আর কিছু কিছু কোষে আবার ক্রোমোজোম ২১-এর তিনটে কপি থাকে।
ডাউন সিন্ড্রোম নির্ণয়ের উপায়:
প্রযুক্তির উন্নতির কারণে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ডাউন সিন্ড্রোম নির্ণয় করা সম্ভব। গর্ভাবস্থার প্রথম পর্যায়েই কিছু পরীক্ষা করাতে হবে। ফিটাল আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমেই ভ্রূণের ট্রাইসোমি ২১-এর আশঙ্কার কথা জানা যায়। এর পাশাপাশি জেনেটিক টেস্টিং ও স্ক্রিনিং টেস্টও করানো হয়।
*কি করবেন অভিভাবকরা!*
এই সমস্যা নিয়ে জন্মানো শিশুদের উপর অভিভাবকদের নজর রাখতে হবে। সন্তানের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বিশেষ পদক্ষেপও করতে হবে। আসলে এই রোগীদের নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হল স্ট্রাকচারাল হার্ট ডিফেক্ট, গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল সমস্যা, শ্রবণের ক্ষেত্রে সমস্যা, হাইপোথাইরয়েডিজম ইত্যাদি। এছাড়াও আরও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।