Flash news
    No Flash News Today..!!
Tuesday, April 30, 2024

গাঁট ফোলা এখন চিন্তার বিষয়! অবহেলা করলে ফল হতে পারে মারাত্মক

banner

#Pravati Sangbad digital Desk:

গাঁট ফোলা অর্থাত্‍ শরীরের জয়েন্ট ফুলে যাওয়ার সমস্যা কম-বেশি অনেকেরই হয়। তবে অধিকাংশই এই সমস্যা খুব হালকা ভাবে নেন। আবার শিশুদের গাঁট ফোলা আরও মারাত্মক। কারণ শিশুদের এই কারণে সারাজীবনের মতো হাঁটতে, বসতে বা চলতে অসুবিধা থেকে যেতে পারে। ওপিডিতে এই ধরনের সব বয়সি রোগীদের সংখ্যা বেশ বেড়েছে, তবে সবচেয়ে চিন্তার হয়, যখন শিশুরা এই রোগ নিয়ে আসে।

     চিন্তার লক্ষণ

একেবারে সদ্যোজাত থেকে ষাটোর্ধ্ব সকলেরই এই সমস্যা হয়। আর শরীরের যে কোনও জয়েন্টে যেমন হাত, পা, কোমর, হাঁটু, কাঁধের জয়েন্ট বা গাঁট নানাবিধ কারণে ফুলতে পারে। কারও ক্ষেত্রে একটা জয়েন্ট ফুলতে পারে আবার কারও ক্ষেত্রে একাধিক জয়েন্ট একসঙ্গে ফুলতে পারে। কারও কারও দেখা যায় বিভিন্ন ঋতুভেদে জয়েন্ট ফুলছে। বর্ষাকালে বা শীতকালে বেশি হয়। যাদের শরীরিক দুর্বলতা বেশি, পুষ্টির অভাব বা ইমিউনিটি কম তাদের ঝুঁকি বেশি।

বয়সভেদে নানা কারণ

সাধারণত যে যে কারণে গাঁট বা জয়েন্ট ফুলতে পারে তা হল,

সংক্রমণজনিত -সংক্রমণের জন্য গাঁট ফোলে। ব্যাকটিরিয়াল বা ভাইরাল ইনফেকশন (জ্বর, সর্দি, কাশি থেকে সংক্রমণ জয়েন্টে চলে যায়), কখনও হার্টের সমস্যা তা থেকে সংক্রমণ, পুষ্টির অভাবে বারবার সংক্রমণ বা সদ্যোজাতর আম্বিলিক্যাল কডের সংক্রমণের দরুন শরীরের নানা জয়েন্টে ব্যথা বা ফোলা শুরু হয়।

সাধারণত শিশুদেরই এইসব কারণে সেপটিক আর্থ্রাইটিস বেশি হয়। সেক্ষেত্রে শিশুর ধুম জ্বর আসবে, হঠাত্‍ করেই কোমরের বা হাঁটুর জয়েন্ট ফুলে যাবে, নড়াচড়া করতে পারবে না, খুব ব্যথা হবে। বাচ্চাদের এই অসুখ কখনই ফেলে রাখা যাবে না। দ্রুত অপারেশন না করলে বড় বয়সে হাঁটাচলায় বা কোমরের সমস্যা থেকেই যায়। খুব বয়স্কদের ও ডায়াবেটিস রোগীদেরও সংক্রমণজনিত কারণে জয়েন্ট ফোলে। কারণ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার দুর্বলতাই সংক্রমণজনিত গাঁট ফোলার অন্যতম কারণ। প্রদাহজনিত -সাধারণত শরীরে কোনও প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন হলে তা থেকে শরীরের ছোট ছোট জয়েন্টে যেমন আঙুলের গাঁট, হাতে কবজি, পায়ের গোড়ালির জয়েন্টে ব্যথা হয় বা ফোলে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও অ্যাঙ্কালোসিস স্পন্ডেলাইটিস হয় এই প্রদাহজনিত কারণে। সকালের দিকে বেশি ব্যথা হয়। এই প্রদাহ সাধারণত ইমিউনোলজিক্যাল রিঅ্যাকশনের জন্য হয়। ফলত গাঁটে জল জমে ও ফুলে যায়। হালকা জ্বর আসে, সকালের দিকে বেশি ব্যথা হয়। সাধারণত রক্ত পরীক্ষা করে এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।

ইউরিক অ্যাসিড থেকে - ক্রিস্টাল আর্থ্রাইটিস সাধারণত বয়স্কদের হয়। ইউরিক অ্যাসিড বা ক্রিস্টাল জমে গাঁট ফুলে যায়, লাল হয়ে যায়, কারও কারও জ্বরও আসে, ব্যথা শুরু হয়। এটা বয়স্কদেরই বেশি হয়। মেটাবলিক ও নন-মেটাবলিক কারণে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। সাধারণত কোনও রোগের কারণে যেমন ক্যানসারের জন্য শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। আবার নন মেটাবলিক কারণ যেমন অতিরিক্ত মাত্রায় মদ্যপান করলে, বেশি রেডমিট খেলে, কিছু ধরনের ডাল বেশি খেলে তা থেকে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে পারে।

ক্যানসারের জন্য -হঠাত্‍ করেই গাঁট ফুলতে শুরু করলে বেশ চিন্তার। সবচেয়ে লক্ষণীয় যেটা তা হল, এই ধরনের ফোলার ফলে কোনও জ্বর আসবে না। ব্যথাও খুব বেশি থাকে না। সাধারণত জয়েন্টের মধ্যে যে ঝিল্লি (সাইনোভিয়াল মেমব্রেন) থাকে তাতে ক্যানসার হলে এমন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। মূলত ১৬-১৭ বছর বয়সিদের বা তার চেয়ে বেশি বয়সিদের এই সমস্যা হয়। হাঁটু, পায়ের আঙুলের গাঁটে বা অন্যান্য জয়েন্টে এই ক্যানসার হয়। এছাড়া বোন টিউমারের কারণেও জয়েন্টের রস বেড়ে গিয়ে গাঁট ফোলে। ক্যানসারের দরুন গাঁট ফোলায় ব্যথা থাকে না বলে অনেকেই অবহেলা করেন। এটা কিন্তু মারাত্মক। এতে ক্যানসার বা টিউমার আরও খারাপ জায়গায় চলে যেতে পারে।

আঘাত জনিত -বিভিন্ন ট্রমা বা আঘাত থেকে শরীরের নানা জয়েন্ট বা গাঁটে ব্যথা বা ফোলাভাব হতে পারে। সেক্ষেত্রে সময়ে সঠিক চিকিত্‍সা না করলে সমস্যা আরও জটিল হয়।

  বয়সজনিত - বয়সের ভারে হাড়ের ক্ষয় স্বাভাবিক। এই কারণে যে সমস্যা বেশি হয় তা হল অস্টিওআর্থ্রাইটিস। ৬০-৭০ ঊর্ধ্বদের গাঁট বা হাঁটু এই কারণে ফোলে। বয়সের জন্য হাঁটুর কার্টিলেজ নষ্ট হয়ে গিয়ে হাঁটুর স্বাভাবিক গতি-প্রকৃতি নষ্ট হয়। হাঁটুর জয়েন্টে ঘষা লেগে ফুলতে থাকে, ব্যথা হয়।

গাঁট ফোলা অর্থাত্‍ শরীরের জয়েন্ট ফুলে যাওয়ার সমস্যা কম-বেশি অনেকেরই হয়।

তবে অধিকাংশই এই সমস্যা খুব হালকা করে নেন। আবার শিশুদের গাঁট ফোলা আরও মারাত্মক।


Journalist Name : Ashapurna Das Adhikary

Related News