রহস্যে ঘেরা ডেভিলস সি! জানেন কি রহস্য লুকিয়ে আছে এর পেছনে

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

পৃথিবীর জলে স্থলে অসংখ্য জায়গায় লুকিয়ে রয়েছে নানান রহস্য নিয়ে। বিজ্ঞান কিংবা যুক্তি দিয়ে যার ব্যাখ্যা হয় না। পৃথিবীর বুকে এমনই এক রহস্য ঘেরা জায়গার নাম ডেভিলস সি বা শয়তানের সাগর।

    প্রশান্ত মহাসাগরে জা জল উপসাগরে এর অবস্থান। ধারণা করা হয়, পৃথিবীর যে ১২টি স্থানের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড অত্যন্ত প্রখর সেই স্থানগুলোকে ভাইস ভর্টিসেস বলা হয়।

   শয়তানের সাগর ১২টি ভাইস ভর্টিসেনের একটি। স্থানটি ডেভিলস ট্রায়াঙ্গেল বা শয়তানের ত্রিভুজ এবং ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেল নামেও পরিচিত। নাম যাই হোক না কেন এই স্থানের আয়তন নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। কিছু নথিতে বলা হয় জাপানের পূর্ব উপকূল থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে, আবার কোথাও বলা হয় জাপান থেকে বারোশ কিলোমিটার দূরে আয়োজিমা দ্বীপের কাছে শয়তানের সাগর অবস্থিত। যেহেতু কোনো আনুষ্ঠানিক মানচিত্রে শয়তানের সাগর অঙ্কন করা হয় না তাই এর প্রকৃত আয়তন সম্পর্কে বলা যায় না। কিন্তু জাপানের বো নিন দ্বীপ থেকে ফিলিপাইন সাগরের সিংহভাগ অঞ্চল শয়তানের সাগর নামে পরিচিত।

       শয়তানের সাগরকে কেন্দ্র করে চীনা পৌরাণিক কাহিনী প্রচলিত আছে। তারা মনে করে এই অঞ্চলের জলের নিচে ড্রাগন বাস করে। এরাই ক্ষুদ্র জাহাজগুলো গিলে খায়। খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ বছর আগে থেকেই তাদের মধ্যে এই উপকথা চলে আসছে। ফলে বোঝা যায় অতি প্রাচীন কাল থেকেই শয়তানের সাগরকে নিয়ে নানা ধরনের অলৌকিক ঘটনা ঘটত। এবং সাগর ঘিরে রয়েছে নানান কুখ্যাতি।


    ১৮০০ শতকে লোকমুখে প্রায়ই শোনা যেতো অনেকেই এই এলাকায় জাহাজে করে এক রহস্যময় নারীকে প্রদক্ষিণ করতে দেখেছেন। চেঙ্গিস খানের নাতি কুবলাই খান ১২৭৪ সালে এবং ১২৮১ সালে জাপান আক্রমণ করেন। কিন্তু দুবারই তিনি ব্যর্থ হন। কারণ শয়তানের সাগর এলাকায় মারাত্মক টাইফুনের কবলে পড়ে তার বাহিনী। কুবলাই খানের বেশ কয়েকটি জাহাজ এবং প্রায় ৪০ হাজার সৈন্য শয়তানের সাগরে হারিয়ে যায়। ১৯৪০ এবং ১৯৫০ এর দশকে বহু মাছ ধরার নৌকা এবং পাঁচটি সামরিক জাহাজ শয়তানের সাগরে নিখোঁজ হয়। এ সবই ঘটেছে মিয়া কি এবং আয়োজিমা দ্বীপের মধ্যবর্তী অঞ্চলে।

    অনুমান হলো এ অঞ্চলের জলের নিচে থাকা আগ্নেয়গিরির অগ্নুত্‍পাতের কারণে বিভিন্ন সময় জাহাজগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অতীতের এসব আগ্নেয়গিরিকেই হয়তো চীনারা ড্রাগন ভাবতো। আগ্নেয়গিরির ক্রিয়াশীলতার কারণে এখানে ছোট ছোট দ্বীপগুলো হারিয়ে যায় এবং একই জায়গায় আবার নতুন দ্বীপের সৃষ্টি হয়।

একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বলা হয় আলোচিত অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ মিথেন হাইড্রেট মজুদ রয়েছে। এসব গ্যাস যখন বিস্ফোরিত হয় সেই বিস্ফোরণের ফলেও জাহাজ নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। প্রশান্ত মহাসাগরের এই অঞ্চলের পৌরাণিক কাহিনী বা বৈজ্ঞানিক গবেষণা কোনটিই এই স্থানের রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি। তবে এই রহস্য থেকে এটি নিশ্চিত যে প্রকৃতিতে এমন অনেক বিষয় আছে যা মানুষের বোধগম্যতার বাইরে।

Journalist Name : Ashapurna Das Adhikary

Related News