অফলাইনে নয় অনলাইনে হোক পরীক্ষা!! এই বিষয়কে কেন্দ্র করে চলছে লাগাতার আন্দোলন

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

কোথাও অনলাইন, কোথাও অফলাইন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে। একাধিক প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা এখনো অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে অনড়। কোভিড অতিমারির জেরে শিক্ষা ব্যবস্থা জোর ধাক্কা খেয়েছে। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার আদান-প্রদান হয়েছে অনলাইনে। কিন্তু এখন কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে। কর্তৃপক্ষ চাইছেন, পরীক্ষা নেওয়া হোক আগের মতো বিভিন্ন কেন্দ্রে। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের একাংশ চায় অনলাইনে পরীক্ষা দিতে। এখানেই বিরোধ তৈরি হয়েছে। রাজ্যের অন্য তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলকাতা, যাদবপুর ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় অফলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও অন্যদিকে বর্ধমান ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নানা বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে  অনলাইনে পরীক্ষার। অর্থাত্‍ একই বছরে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিন্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করবে। 
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তথা শিক্ষাবিদ  ড. পবিত্র সরকার এপ্রসঙ্গে বলেছেন, ‘মূল্যায়ন একেবারেই ঠিকঠাক হবে না। অনলাইনে পরীক্ষা নিলে যাদের মেধা কম, তারাও নানা উপায়ে মেধাসম্পন্ন পড়ুয়াদের কাছাকাছি ফল করতে পারে। অনলাইনে শিক্ষাদান হতে পারে, পরীক্ষা নেওয়া একেবারেই অযৌক্তিক। রাজ্য সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হলে এ ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নেয়া উচিত। তারা বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে থাকেন ,আচার্যপদে আসীন হওয়া নিয়ে বিতর্ক হয়। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ দেখা যায় অথচ পরীক্ষা নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ অস্তিত্ববিহীন "
অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে শোরগোল গোটা রাজ্যে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভ হচ্ছে। এরই মধ্যে এক ছাত্রীর মন্তব্য রীতিমতো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো পড়ুয়াদের সঙ্গে জনৈক সাংবাদিকের সাক্ষাৎকারে এক ছাত্রী বলেন, ''অনলাইন পরীক্ষা হলে বই খুলে নিজের ভাষায় লেখা যায়। আর অফলাইন পরীক্ষা হলে পুরোটাই না দেখে লিখতে হবে। অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। এর প্রতিবাদে অনশন আন্দোলন চলতেই থাকবে। একই সঙ্গে তাঁর স্বীকারোক্তি, ''অফলাইন পরীক্ষা হলে আমরা সবাই ফেল করব।''চিরাচরিত অফলাইনের পরিবর্তে অনলাইনে পরীক্ষার দাবি ওঠার সময় থেকেই এই বিষয়টা সমালোচিত হতে থাকে যে, পড়ুয়ারা বই দেখে লিখতে চেয়েই আন্দোলন করছেন। সেই 'সত্য' বলে ফেলেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী। তাঁর সেই সহজ স্বীকারোক্তি, 'অফলাইনে পরীক্ষা হলে, আমাদের পুরো বিষয়টি না দেখে লিখতে হচ্ছে' এখন ভাইরাল।

অনলাইন ও অফলাইন পদ্ধতির ফারাক হল, প্রথমটিতে বাড়িতে বসে বই দেখে পরীক্ষা দেওয়া যায়। দ্বিতীয় পদ্ধতিতে আগের মত এক কলেজের পড়ুয়াদের অন্য কলেজে গিয়ে খাতায় কলমে পরীক্ষা দিতে হবে। গত দু'বছর কোভিড পরিস্থিতি থাকায় অনলাইনে সেমেস্টার পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়। তাঁদের দাবি, ক্লাসরুমে বসে পরীক্ষা দিলে তাঁরা অকৃতকার্য হবেন এমন ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। তাঁদের সিলেবাস যেহেতু সম্পূর্ণ শেষ হয়নি, এই পরিস্থিতিতে তাঁরা মনে করছেন অনলাইন পরীক্ষা নেওয়াই ভাল।  কিন্তু এককথা তো সত্যি অনলাইনে পরীক্ষা হলে ঠিক মতো মূল্যায়ন হয়না, সেটা জেনেও এখন কেন অভিভাকরা  অফলাইন পরীক্ষা জন্য  এখনও পথে নামছেন না এটাই এখন সবার মনে প্রশ্ন।  তাহলে কী অভিভাবকরা ও জেনে শুনে তাদের ছেলে- মেয়েদের বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন?!! এর আগে স্কুল- কলেজ খোলা নিয়ে তাঁরা আন্দোলন করলেও কেন তারা এই পরীক্ষা নিয়ে নীরব !! যেখানে কিনা তাঁদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ জড়িত। এ প্রশ্ন এখন সার্বজনীন।

Journalist Name : SRIJITA MALLICK

Tags:

Related News