করোনার পরে ফের পড়তে চলেছে জনসমাগমে রথের দড়িতে টান

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আগামীকাল রথযাত্রা। বছরভর নানা অনুষ্ঠান উদযাপন করেন ভারতবাসীরা। এদিকে করোনা অতিমারী গত দুবছর ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তালা ঝুলিয়েছে। তবে, এবার কোভিডের বাধা নিষেধ না থাকায় ফের রথযাত্রা নিয়ে মত্ত ভারতবাসী। হিন্দুদের একটি অন্যতম উৎসব হল রথযাত্রা।  সাধারণতঃ জুন-জুলাই মাসেই ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় এই রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়, তবে এখন কিন্তু শুধু দেশের মধ্যেই নয়,দেশের বাইরেও নানা জায়গায় এই রথযাত্রা উৎসব দৃশ্যমান। বর্তমানে এটি যেন এক গণউৎসবে পরিণত হয়েছে; কারণ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত মানুষকেই এই উৎসবে সামিল হতে দেখা যায় তবে  এই রথযাত্রা নিয়ে কথা বললে প্রথমেই আসে পুরীর কথা।
        ভারতের চারধামের একটি হলো পুরী আর এই পুরীর সবচেয়ে বড়ো উৎসব হলো রথযাত্রা। প্রসঙ্গত ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড়ো রথযাত্রাও হয় পুরীতে। পুরীতে তিনটি আলাদা রথ হয়, অর্থাৎ জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা এই তিন ভাইবোনের তিনটি রথ। এই উৎসব ন-দিনের।আষাঢ় মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে সোজা রথ।আর নবম দিনে,অর্থাৎ শুক্লা একাদশীতে উল্টোরথ।
      রথযাত্রা নিয়ে ভিন্ন মতও রয়েছে। অনেকের মতে পুরীতেই রথযাত্রা উৎসবের সূচনা,আবার ঐতিহাসিকদের একাংশের মতে, রথযাত্রা উৎসবের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। বিখ্যাত চৈনিক পর্যটক ফা-হিয়েনের বিবরণে পঞ্চম শতকে রথযাত্রা উৎসবের উল্লেখ রয়েছে। তিনি বলেছেন খোটানের রথযাত্রা উৎসবের কথা। পশ্চিম চীনের একটি ছোট্ট শহর হল খোটান। এখানকার রথযাত্রা উৎসবের মাদ্ধ্যমে বৌদ্ধিক উপাসনা হত। খোটানের রাজা রথে ঝাড়ু দিয়ে জল ছিটিয়ে পরিষ্কার করার পর রথযাত্রা উৎসবের সূচনা হত;  এই উৎসব পালিত হত জুন মাসে । বর্তমানে পুরীতে যে রথযাত্রা উৎসব হয় সেখানেও আমরা একই সময় ও একই প্রথা দেখতে পাই।
        আবার রথ নিয়ে বাঙালির সংস্কারও অনেক। স্নানযাত্রার দিন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণীর বিগ্রহ। রথের দিন এখনও দুর্গামণ্ডপের খুঁটিপুজোর রীতি আছে, রথের দিন শুরু হয় দুর্গাপ্রতিমার খড়ের কাঠামোয় মাটি লেপা।শোনা যায়, রানি রাসমণি ১৮৩৮ সালে এক লাখ বাইশ হাজার টাকা খরচ করে তৈরি করেছিলেন রুপোর রথ। এমনকি এখন যেখানে শিয়ালদা স্টেশন,সেখানে বসত শেঠদের রথ, সঙ্গে মেলা।সেটিই এখন সরে এসেছে মৌলালি হয়ে রামলীলা ময়দানে,তবে তা আকারে অনেক ছোট হয়ে গিয়েছে।
      এ ছাড়া ছিল পোস্তা, গরানহাটার রথ,সুরি লেনের মল্লিকবাড়ির রথও। তবে সে দিন আর নেই! কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুল, তালপাতার সেপাই, চোরবাগানের লাট্টু, কাঠের নাগরদোলার মতো সব যেন কোথাও বিলীন হয়ে গেছে।

Journalist Name : Riya Some